ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী

প্রকাশিত: ০৭:২১, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী

ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রিয়দর্শিনী অভিনেত্রী মৌসুমী। ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন তিনি। ছবিটি মুক্তির পর সুপার-ডুপার হিট হয়। প্রথম ছবি দিয়েই দর্শকের মন জয় করে নেন তিনি। এক ছবি দিয়েই মৌসুমী রাতারাতি তারকা বনে যান। ১৯৯৩ সালের ২ ডিসেম্বর ওমরসানী-মৌসুমী জুটির প্রথম সিনেমা ‘দোলা’ মুক্তি পেয়েছিল। সেই হিসেবে সিনেমার পর্দায় জুটি হিসেবে তারা রজতজয়ন্তীতে পদার্পণ করেছেন। দীর্ঘদিনের এই পথচলায় সিনেমার পর্দায় যেমন জুটি হিসেবে তারা দুজন আকাশচুম্বী সফলতা অর্জন করেছেন ঠিক তেমনি দাম্পত্য জীবনেও তারা দুজন সুখী তারকা দম্পতির দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছেন। ‘দোলা’ সিনেমার পর ওমরসানী-মৌসুমী জুটিবদ্ধ হয়ে ‘আত্ম অহঙ্কার’, ‘প্রথম প্রেম’, ‘মুক্তির সংগ্রাম’, ‘হারানো প্রেম’, ‘গরিবের রানী’, ‘প্রিয় তুমি’, ‘সুখের স্বর্গ’, ‘মিথ্যা অহঙ্কার’, ‘ঘাত-প্রতিঘাত’, ‘লজ্জা’, ‘কথা দাও’, ‘সাহেব নামে গোলাম’সহ আরও বেশকিছু সিনেমায় অভিনয় করেন। অনেকদিন যাবত বড় পর্দায় মূল চরিত্রে এই লাস্যময়ীকে দেখা যাচ্ছে না। তার ভক্তদের জন্য সুখব হলো ফের বড় পর্দায় নায়িকা হিসেবে আসছেন বাংলা সিনেমার গুণী অভিনেত্রী। যদিও বড় পর্দায় মাঝে মধ্যে কাজ করছেন তিনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় চরিত্রে তেমন পাওয়া যায় না তাকে। সাধারণত পার্শ্ব চরিত্রেই দেখা যায়। তবে মৌসুমীর ভক্তদের জন্য সুখবর হলোÑ আসছে সপ্তাহে তিনি কেন্দ্রীয় নায়িকা চরিত্রে ফিরছেন। সাধারণত ৩০-৩৫ পেরোলেই তথাকথিত নায়িকা হওয়াকে সমর্থন করে না ঢাকাই সিনেমা। এখানে নায়িকাদের নিয়ে চরিত্র নির্ধারণ হয় না। যে কারণে বয়স একটু বাড়লেই আড়ালে চলে যান নায়িকারা। গল্পে গুরুত্ব হারান সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকারা। এসব কারণে আজকাল চলচ্চিত্রে অনিয়মিত প্রিয়দর্শিনী অভিনেত্রী মৌসুমী। মনের মতো কিছু চরিত্র পেলে তবেই কাজ করেন। সর্বশেষ তার অভিনীত ‘নায়ক’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। এখানে তিনি নবাগত অধরা খানের বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে আগামী ডিসেম্বরেই আবারও মূল নারী চরিত্রে দেখা যাবে এ নায়িকাকে। ঠিক হয়েছে আগামী ১৪ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে হাবিবুল ইসলাম হাবিব পরিচালিত ‘রাত্রির যাত্রী’ চলচ্চিত্রটি। এখানে মৌসুমী হাজির হবেন চমক নিয়ে। ছবিটিতে মৌসুমীর নায়ক আনিসুর রহমান মিলন। পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, ‘আসছে বিজয় দিবস উপলক্ষে আমরা ‘রাত্রির যাত্রী’ সিনেমাটি মুক্তি দিতে যাচ্ছি। চমৎকার গল্পে যতœ নিয়ে ছবিটি তৈরি করেছি আমি। এরই মধ্যে সিনেমাটি নিয়ে অনেক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে দর্শকদের। জনপ্রিয় নায়িকা মৌসুমীকে এখানে খুবই সুন্দর একটি চরিত্রে খুঁজে পাবেন ভক্তরা। মিলনসহ অন্যরাও খুব ভাল কাজ করেছেন।’ গল্পের মূল চরিত্র ময়না চরিত্রে অভিনয় করছেন মৌসুমী। তিনি গ্রামের এক গরিব ঘরের সহজ-সরল শিক্ষিত নারী। বাবা নেই, অসুস্থ মাকে নিয়ে তার সংসার। নিজেই উপার্জন করেন। প্রভাবশালীর ছেলের প্রেমে পড়ার দায় মেটাতে শহরে আশ্রয় নিতে হয় তাকে। পেছনে পড়ে থাকে তার গ্রাম, শৈশব, কৈশোর, যৌবনের হাজারো স্মৃতি। সঙ্গী হলো মা আর প্রাণের মানুষ প্রেমিকের বিয়োগ বেদনা। ঢাকা শহরে আসতে নানা অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন মৌসুমী। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মৌসুমী নিজেকে আবিষ্কার করলেন একজন অসহায় ও বিপদগ্রস্ত মানুষ হিসেব। সেখান থেকে নিজেকে বের করে আনার সাহসী গল্পে নির্মিত ‘রাত্রীর যাত্রী’। ছবিটি নিয়ে মৌসুমী বলেন, ‘অনেক আগে এ ছবিতে শূটিং করেছিলাম। এটি মুক্তি পেলে আশা করছি দর্শক হলে গিয়ে দেখবেন। ভাল একটি গল্প আছে ছবিতে।’ ছবিটি নিয়ে আমার প্রত্যাশা অনেক। অনেকদিন পর নায়িকা হিসেবে আমার ভক্তরা আমাকে পেতে যাচ্ছে। আশা করি তারা আমাকে ভালভাবেই গ্রহণ করবেন। মৌসুমী যোগ করে আরও বলেন, হাবিব ভাই যে কত কষ্ট করেছেন তার স্বপ্নের এই চলচ্চিত্রটির জন্য তা আমি নিজের চোখে দেখেছি। একজন মানুষ তার স্বপ্নপূরণের জন্য এত কষ্ট করতে পারেন তা আমার জানা ছিল না। আমি বিশ্বাস করি ‘রাত্রির যাত্রী’ হাবিব ভাইয়ের স্বপ্নপূরণ করবে। দর্শকের কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা হলে গিয়ে সিনেমাটি উপভোগ করবেন।
×