ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুমিনুল-মুশফিককে প্রশংসা জারভিসের

৪০০/৪৫০ রান যথেষ্ট মনে করছে টাইগাররা

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১২ নভেম্বর ২০১৮

 ৪০০/৪৫০ রান যথেষ্ট মনে করছে টাইগাররা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হতাশার চিত্র ছিল গত ৪ টেস্টে ব্যাটিংয়ে। রবিবার শুরু হওয়া সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও শুরুটা ছিল দারুণ হতাশার। মাত্র ২৬ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশকে বিপর্যয় থেকে বাঁচান চতুর্থ উইকেটে মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহীম রেকর্ড ২৬৬ রান যোগ করে। তাদের দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের প্রশংসা করলেন প্রথমদিন জিম্বাবুইয়ের সফলতম বোলার কাইল জারভিস। ৩ উইকেট নেয়া এ পেসার জানান প্রথম ও শেষ এক ঘণ্টা ছাড়া বাংলাদেশই পুরো দিনের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আর ১৬১ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলা মুমিনুল হক সৌরভ মনে করেন এই উইকেটে ৪০০ থেকে ৪৫০ রান করলেই প্রতিপক্ষের ওপর প্রভাব খাটানো সম্ভব হবে বাংলাদেশ দলের। তিনি দাবি করেন তৃতীয় ও চতুর্থদিনে আরও কঠিন হবে উইকেট এবং বাংলাদেশের স্পিনাররা দারুণ কিছু উপহার দিতে সক্ষম হবে। মিরপুর টেস্টের প্রথমদিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দুই ক্রিকেটার। মিরপুরের উইকেট নিয়ে বরাবরই আলোচনা হয়েছে। এবারও বিষয়টি নিয়ে মাথাব্যথা সবার। সে কারণেই অধিকাংশ সময়ই এ ভেন্যুতে টেস্ট ম্যাচের ফলাফল বেরিয়ে আসে। রবিবার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথমদিনের শুরুতেই বোলারদের বিপক্ষে রান করতে হিমশিম খেতে হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মুমিনুল-মুশফিক জুটি দিনশেষে স্বাগতিকদের তাঁবুতে দিয়েছেন স্বস্তি। এ বিষয়ে মুমিনুল বলেন, ‘সিলেট ও এই উইকেটের মধ্যে একটু পার্থক্য রয়েছে। সিলেটের উইকেট একটু মন্থর ছিল। এই উইকেট একটু চ্যালেঞ্জিং। উইকেটে এখনও কিছু না কিছু হচ্ছে। সারাদিন হয়েছে, যতদিন খেলা হবে কিছু না কিছু হবে। উইকেটটা খুব ইন্টারেস্টিং। উইকেটে বাউন্স এক রকম ছিল না। উঁচুনিচু হচ্ছিল।’ সেই উইকেটেও দলের বিপর্যয়ে দাঁড়িয়ে চতুর্থ উইকেট জুটির রেকর্ড গড়েন মুমিনুল-মুশফিক। এ বিষয়ে মুমিনুল বলেন, ‘রেকর্ড নিয়ে আমি তেমন চিন্তা করি না। আমি আর মুশি ভাই যখন ব্যাট করছিলাম তখন সেশন বাই সেশন ব্যাট করার। কারণ একটা সেশন আমাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওই সময় বোলাররা খুব ভাল বল করছিল। যে কন্ডিশন উইকেট ছিল, অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। সেশন বাই সেশন খেললে আপনার এক শ’ হবে, তারপর দেড় শ’ হবে, দিনশেষে রেকর্ডও হবে।’ দিনের শেষ মুহূর্তে ১৬১ রান করে সাজঘরে ফেরাতে কিছুটা হতাশ মুমিনুল। আরও বড় ইনিংস খেলতে না পারার জন্য নয়, দলের জন্যই এই আফসোস। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটু আফসোস আছে। আমার জন্য একটা উইকেট বেশি পড়ে গেছে। আমি তো আউট হয়েছি, সঙ্গে আরেকটি উইকেট পড়েছে। দলের জন্য শেষের দিকে আরেকটু খেলতে পারলে ভাল হতো। এইটুকু আফসোস আছে, আর কোন আফসোস নেই। এটাই আমাকে একটু পোড়াচ্ছে, খারাপ লাগছে। আমার উইকেট যদি না পড়তো আর দিনশেষে তিন শ’ থাকত তাহলে বলতাম আমরা অনেক ভাল অবস্থায় আছি। চার শ’-সাড়ে চার শ’ রান ওদের আটকানোর মতো হবে বলে মনে হয়।’ এর কারণ নিজ দলের বোলারদের ওপর বেশ আস্থা তার, ‘মুশফিক ভাই ব্যাট করছে, রিয়াদ ভাই আছে, নিচে আরিফ আছে। আমার মনে হয় আমরা ব্যাটসম্যানরা জিনিসটা কাজে লাগাব। আর বোলারদের ওপর খুব আত্মবিশ্বাস আছে যে তারা এটা কাজে লাগাবে। বিশেষ করে আমাদের স্পিনাররা এ উইকেটে ভাল করবে বলে বিশ্বাস করি। প্রথমদিন যদি উইকেট এমন হয় তাহলে চিন্তা করেন তিন বা চার নম্বর দিন কি হতে পারে।’ শুরুতেই ২ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে চমকে দিয়েছিলেন পেসার জারভিস। দিনশেষে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দিনশেষে ম্যাচের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় সকালে বেশ আর্দ্রতা ছিল। সে কারণে সকালে পেস বোলিংয়ের জন্য ভাল আচরণ করেছে। মুমিনুল আর মুশফিকুরকে কৃতিত্ব দিতে হবে। সেখানে অনেক কঠিন সময়ের মধ্যে সংগ্রাম করেছে এবং দারুণ যোগ্যতার সঙ্গেই ব্যাট করেছে। খুব সহজেই দ্রুত ৫/৬ উইকেট যেতে পারতো, তাই তাদের কৃতিত্ব আছে। তারা প্রায় তিন ঘণ্টা ভাল ব্যাট করেছে এবং আমরাও ভাল বল করতে পারিনি। আমরা প্রথম ঘণ্টায় বিজয়ী ছিলাম, এরপর বাকি সময়টা তারা শেষ ঘণ্টা পর্যন্ত জয়ী। তারা দিনের বেশিরভাগ সময়ই এগিয়ে ছিল শুধু প্রথম এবং শেষ একটা ঘণ্টা ছাড়া।’
×