ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘টাইম’

এবার আকাশে কৃত্রিম চাঁদ স্থাপন করবে চীন

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৩ নভেম্বর ২০১৮

এবার আকাশে কৃত্রিম চাঁদ  স্থাপন করবে চীন

খুব শীঘ্রই নতুন সঙ্গী পেতে যাচ্ছে রাতের আকাশ। ২০২০ সালের মধ্যেই রাতের শহর আলোকিত করতে আকাশে কৃত্রিম চাঁদ স্থাপনের পরিকল্পনা করছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ‘টাইম’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ খবর জানা যায়। চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে টাইম জানায়, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশের রাজধানী চেংডু শহরের আকাশে মানবসৃষ্ট ওই চাঁদ স্থাপন করা হবে বলে বিজ্ঞানীরা পরিকল্পনা করছেন। কৃত্রিম চাঁদটিতে এমন বহিরাবরণ ব্যবহার করা হবে যা আসল চাঁদের মতোই সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে রাতের পৃথিবীকে আলোকিত করবে। ওই চাঁদটি মূলত একটি স্যাটেলাইট। কৃত্রিম চাঁদটি স্থাপন করা হলে রাতের বেলা চেংডু শহরে আর সড়কবাতি জ্বালানোর প্রয়োজন পড়বে না। বিজ্ঞানীদের মতে সাধারণ মানুষের চোখে মূল চাঁদের চেয়ে ওটি হবে আটগুণ বেশি উজ্জ্বল। আর সড়ক বাতির চেয়ে উজ্জ্বল হবে পাঁচগুণ কম। পৃথিবীর খুব কাছে মাত্র পাঁচ শ’ কিলোমিটার দূরত্বে এটি আবর্তিত হবে। যেখানে মূল চাঁদ অবস্থিত পৃথিবী থেকে তিন লাখ ৮০ হাজার কিলোমিটার দূরে। ‘তিয়ান ফু এরিয়া সায়েন্স সোসাইটির’ প্রধান বিজ্ঞানী য়ু চানফেং চীনা সংবাদ মাধ্যম চায়না ডেইলিকে জানান, উচ্চাভিলাষী এ প্রকল্পের মাধ্যমে সমস্ত রাতের আকাশ আলোকিত করা সম্ভব হবে না। এমনকি পুরো চীনও নয়। এর আওতায় থাকবে কেবল মাত্র চেংডু শহর। কৃত্রিম ওই চাঁদ স্থাপন করা হলে বাৎসরিক হিসাব অনুসারে ১৭ কোটিরও অধিক মার্কিন ডলার বিদ্যুত ব্যয় বেঁচে যাবে চেংডু শহরের। শুধু তাই নয়, অন্ধকারে কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এটি খুব দ্রুত কাজে আসবে বলেও জানান তিনি। এ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করা গেলে ২০২২ সালের মধ্যে আকাশে আরও তিনটি কৃত্রিম চাঁদ স্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি। সফলভাবে কাজটি তুলে আনা ও যাতে প্রকৃতির ওপর কোন বিরূপ প্রভাব না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে এ ব্যাপারে আরও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে জানান চানফেং। ‘আমরা আমাদের পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলো চালাব বসতিহীন একটি মরুভূমিতে। যাতে কৃত্রিম চাঁদের আলো মানুষ কিংবা কোন কিছুর ক্ষতি না করতে পারে’ বলেন বিজ্ঞানী। মহাকাশ নিয়ে চীনের মতো এ রকম উচ্চাভিলাষী প্রকল্প এই প্রথম নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, এর আগেও ১৯৯০ সালে দিনের আলো না পাওয়া রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলের কিছু শহরে সূর্যের আলো প্রতিফলিত করার পরিকল্পনা করেছিল দেশটি। সে জন্য তারা আকাশে বিশেষ পদ্ধতির একটি আয়না স্থাপন করেছিল, যা সূর্যের আলো প্রতিফলিত করতে সক্ষম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বায়ুমণ্ডলের প্রভাবে আয়নাটি কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেললে ১৯৯৯ সালে ওই প্রকল্প বাতিল করা হয়। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘রকেট ল্যাব’ আকাশে একটি কৃত্রিম নক্ষত্র স্থাপন করে। কিন্তু আলো দূষণ ও পৃথিবীর কক্ষপথে ঝুট ঝামেলা তৈরির দায়ে বিজ্ঞানীরা মানবসৃষ্ট ওই নক্ষত্রের সমালোচনা করেন।
×