ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফিটনেস ধরে রাখতে মনোযোগী ফজলে রাব্বি

প্রকাশিত: ০৭:১১, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

ফিটনেস ধরে রাখতে মনোযোগী ফজলে রাব্বি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নির্বাচকদের তীক্ষè নজর ছিল দুই অপরিহার্য ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের বিকল্প হিসেবে কাউকে নেয়ার। চলমান প্রথম শ্রেণীর আসর জাতীয় ক্রিকেট লীগে (এনসিএল) বরিশাল বিভাগের হয়ে ক্যারিয়ারসেরা ১৯৫ রানের ইনিংস খেলে আলোয় আসেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। কিছুদিন আগেই অবশ্য ‘এ’ দলের হয়ে দারুণ পারফর্ম করে এবং দীর্ঘদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল নৈপুণ্য দেখিয়ে নিজের ওপর আলোটা ধরেই রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ১৪ বছরের প্রথম শ্রেণী ও লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা নিয়ে বয়স যখন ৩১ ছুঁই ছুঁই তখনই জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। নির্বাচক হাবিবুল বাশার ইতোমধ্যেই তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং ফিটনেসটা নিয়েও সবাই সন্তুষ্টি জানিয়েছেন। বয়স বাড়লেও শুধু ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে ফিটনেসের পর্যায়টা ভাল মানে রাখার কারণ জানিয়েছেন ৩০ বছর বয়সী এ ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ফিটনেস ধরে রাখার দিকেই মনোযোগ তার। জাতীয় দলের ক্যাম্পে প্রথমবারের মতো সোমবার অনুশীলন শেষে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে তিনি কথা বলার সময় জানান সুযোগ পেলে নিজের সামর্থ্য অনুসারেই পারফর্ম করতে চান। হয় তো সুযোগটা কখনোই আসত না। কিন্তু সম্প্রতি এশিয়া কাপ শেষ করে আসা বাংলাদেশ দলের বেশ কয়েকজনের ইনজুরিটাই পথ খোলাসা করে দিয়েছে রাব্বির। তামিম জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজ খেলতে পারবেন না। সাকিব কবে ফিরবেন সেটা অনিশ্চিত। এ কারণেই ব্যাটিং অলরাউন্ডার রাব্বি প্রথমবার জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। মূলত টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান হলেও প্রয়োজনে বাঁহাতি স্পিনে হাত ঘোরাতে পারেন তিনি। কিন্তু সাকিবের অভাব কি পূরণ হওয়ার মতো? একজন আনকোরা নতুন মুখ কতটা করে দেখাতে পারবেন। এ বিষয়ে রাব্বি বলেন, ‘দায়িত্বটা কাঁধে এসেছে ঠিক আছে। কিন্তু সাকিব ভাইয়ের জায়গা তো আর কারও পক্ষে পূরণ সম্ভব না। আমি মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। পাশাপাশি আমি দলের প্রয়োজনে বোলিং করতে পারি। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই এই ভূমিকাটা পালন করার চেষ্টা করব। তবে সাকিব ভাই এর জায়গা নেয়া না, আমি যেটা পারি সেটাই করার চেষ্টা করব।’ অভাব পূরণের জন্য এশিয়া কাপে যাদের নেয়া হয়েছিল তারাও সুবিধা করতে পারছেন না। সে কারণেই নতুন কারও দিকে নজর ছিল নির্বাচকদের। রাব্বিকেই সেদিক থেকে সবচেয়ে উপযোগী মনে হয়েছে নির্বাচকদের। কারণ, তার দারুণ ফিটনেস এবং ‘এ’ দলের হয়ে ও ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক নৈপুণ্য। কখনও জাতীয় দলের ক্যাম্পে না থেকেও ফিটনেস ঠিক রাখার বিষয়ে রাব্বি বলেন, ‘আমার সৌভাগ্য, তখন আমাকে বাংলাদেশ ‘এ’ দলে ডাকা হয়েছিল। সেখানে দুই আড়াই মাসের মতো একটা ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে। ওই ক্যাম্পটা আমাকে খুব কাজে দিয়েছে। আমি খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। ওজন কমিয়েছি।’ ১৪ বছর ধরে লিস্ট ‘এ’ আর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন। মাঝে ক্রিকেট ছেড়ে একটি মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানের হয়ে চাকরিও করেছেন। তবে সেসব ভাল না লাগাতে আবার ফিরে এসেছেন ক্রিকেটে। সেই প্রত্যাবর্তনটা অবশেষে সর্বোচ্চ অর্জন এনে দিয়েছে। সোমবার যখন কথা বলছিলেন তখন তার বয়স ৩০ বছর ২৮৯ দিন। তবে ফিটনেস ঠিক থাকলে বয়স কোন বাধা নয়, বরং প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা বড় পুঁজি হয়ে দাঁড়ায়। এ বিষয়ে রাব্বি বলেন, ‘বয়স নিয়ে যেই কথা হচ্ছে, আমি আসলে এসব নিয়ে ভাবি না। আমি যদি ফিট থাকি ও আমার পারফর্মেন্স থাকে তাহলে বয়স কোন বিষয় না। এই মুহূর্তে আমি শুধু চিন্তা করছি নিজের পারফর্মেন্স নিয়ে। আমি এত বছর খেলেছি, আমার মোটামুটি প্রমাণ করা হয়ে গেছে ওই পর্যায়ে। এখানে এসে আমি নতুন করে কিছু করতে পারব না। আমি যেটা পারি, সেটাই করার চেষ্টা করব।’ নিজের সামর্থ্যরে ওপর আস্থা রাখছেন রাব্বি। মাঝে ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্তটা বদলে আবার ফিরে আসার পরই নিজের মধ্যে অনেক পরিবর্তন টের পেয়েছেন। আর এসবই তার মধ্যে কোন স্থায়ুচাপের লেশমাত্র রাখেনি। রাব্বি বলেন, ‘মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। বুঝেছি চাপ ছাড়া খেললে ভাল খেলত পারব। এখন ওরকম চিন্তাই করি না খেলা নিয়ে। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আমি তো এখনও খেলিনি। খেললে বুঝা যাবে আমি কতটা চাপহীন ক্রিকেট খেলতে পারব। আমার একদমই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। আমি জানি না জিম্বাবুইয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া বা অন্য কোন দলের সঙ্গে খেলছি। আমি আমার মতোই খেলব, যদি সুযোগ পাই। আমি কার সঙ্গে খেলছি এটা বড় না। কি খেলছি এটাই বড়।’
×