ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া ফয়সালার লড়াই

প্রকাশিত: ০৭:১১, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া ফয়সালার লড়াই

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ আবুধাবিতে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হচ্ছে আজ। উসমান খাজা ও অধিনায়ক টিম পেইনের ব্যাটিং-বীরত্বে দুবাইয়ে নিশ্চিত হার দেখা প্রথম ম্যাচে ড্র করে অজিরা। আমিরাত এমনিতে পাকীদের জন্য পয়মন্ত ভেন্যু। এখানে দলটির সাফল্য ঈর্ষণীয়। বেশির ভাগ সময় নিয়ন্ত্রণে রেখেও দুবাই টেস্টে জয়বঞ্চিত কোচ মিকি আর্থার তাই প্রতিপক্ষকে নিয়ে সতর্ক। কঠিন পরিস্থিতিতে শিষ্যদের মানসিক দৃঢ়তার ওপর জোর দিতে বলেছেন তিনি। অন্যদিকে বছরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বহুল আলোচিত সেই বল টেম্পারিংয়ের কলঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে ভাল ক্রিকেটের প্রত্যয়টা আগেই ব্যক্ত করেছিলেন বিপদের এই সময়ে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেয়া টিম পেইন। আবুধাবিতে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর বারোটায়। দুবাইয়ে বেশিরভাগ সময় এগিয়ে থাকার পরও ম্যাচ জিততে না পারার হতাশা গোপন করেননি সরফরাজ আহমেদদের গুরু মিকি আর্থার, ‘আমার জন্য এটি আসলেই হতাশাজনক যে আমরা সিরিজে লিড নিতে পারিনি। তবে আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক হলো এটি ক্রিকেটারদের আঘাত করেছে এমনভাবে যেন আমরা হেরে গিয়েছি এবং আমার জন্য এটি ভাল লক্ষণ। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে ছেলেরা মানসিক দিক থেকে বেশ পরিপক্ব এবং দ্বিতীয়বার এমনটা হতে দিতে চায় না। এই ধরনের কালচার ক্রিকেটারদের মধ্যে তৈরি করতে চাই আমরা।’ পাকিস্তান কোচ আরও যোগ করেন, ‘প্রথম টেস্টে ওইভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর পর অস্ট্রেলিয়া অবশ্যই আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে, এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা যথেষ্ট ভাল ক্রিকেট খেলছি এবং আমরা আরও কঠিনভাবে ফিরে আসব’ বলেন পাকিস্তান কোচ মিকি আর্থার। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসের নাটকীয় ধসের পর ম্যাচ ধরে রেখেছিলেন উসমান খাজা। ইয়াসির শাহর স্পিনে এবং মোহাম্মদ আব্বাসের গতির কাছে হার মেনেছেন অজি ব্যাটসম্যানরা। এমনকি শেষ সময়ে এসে উসমান আউট হয়ে গেলে পাকিস্তানের সামনে অসাধারণ সুযোগ এসে যায় ম্যাচ জয়ের জন্য। তবে সেটি সম্ভব হয়নি অজি অধিনায়ক টিম পেইন ও নাথান লেয়নের ব্যাটিংয়ে। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান মোহাম্মদ হাফিজ ও হারিস সোহেলের শতকের সুবাদে সব উইকেট হারিয়ে ৪৮২ রান তুলতে সমর্থ হয়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২০২ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ওপেনার উসমান খাজা ও এ্যারন ফিঞ্চের ১৪২ রানের জুটির পর আর কেউ দাঁড়াতেই পারেন পাকিস্তানের বোলিংয়ের কাছে। দুবাইয়ে মোহাম্মদ আব্বাস নেন ৪ উইকেট এবং বাকি ছয় উইকেট পেয়েছেন বিলাল আসিফ। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ধস নামে পাকিস্তনের ব্যাটিং ইনিংসে। ৬ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৮১ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে তারা। ব্যাট করতে নেমে ৮৭ রানের জুটি গড়েন এ্যারন ফিঞ্চ ও উসমান খাজা। তবে এ্যারন ফিঞ্চ আউট হলে সেই ৮৭ রানেই পড়ে যায় তিন উইকেট। ট্রেভিস হেডের সঙ্গে ১৩২ রানের জুটি গড়ে ম্যাচে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখেন খাজা। হেড আউট হয়ে যাওয়ার পরে উইকেটরক্ষক এবং অধিনায়ক টিম পেইনের সঙ্গে জুটি গড়েন খাজা। তবে ৩৩১ রানের মাথায় তিনিও আউট হয়ে গেলে পাকিস্তানের জন্য জয় হয়ে পড়ে মাত্র ৪ উইকেটের ব্যাপার। ৩৩৩ রানে মিশেল স্টার্ক ও পিটার সিডল আউট হয়ে গেলে সেই সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায় পাকিস্তানের। তবে তখনও ক্রিজে ছিলেন পেইন ও নাথান লেয়ন। শেষ পর্যন্ত অর্ধশতক তুলে পেইন অপরাজিত থাকেন এবং এই জুটিতেই টেস্টের নির্ধারিত ওভার শেষ হয়। ড্র দিয়েই সিরিজে নিজেদের টিকিয়ে রাখে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের ইয়াসির শাহ ৪টি, মোহাম্মদ আব্বাস ৩টি উইকেট নেন। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক টিম পেইন বলেন, ‘পেছনে কি হয়েছে (টেম্পারিং ইস্যু), এগুলো আমাদের চিন্তায় নেই। আমরা প্রথম টেস্টে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ড্র করেছি। আবুধাবিতে কিভাবে খেলব, সেটি নিয়েই ভাবছি। পাকিস্তান অনেক শক্তিশালী। এখানকার কন্ডিশন সম্পর্কে তাদের ভাল ধারণা রয়েছে। জয় পেতে আমাদের অবশ্যই ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। আমার মনে হয়, দলের সবাই জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে আছে। এই প্রবল ইচ্ছাটাই আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে। আমি দারুণ আশাবাদী’। সবশেষ ২০১৬-১৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে ৩ টেস্টের সিরিজে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয়েছিল পাকিস্তান। তবে তার আগে মিসবাহ উল হক, ইউনূস খানের মতো কিংবদন্তিদের নিয়ে গড়া পাকিস্তান ২০১৪-১৫ মৌসুমে এই আমিরাতেই অজিদের ২-০ তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করেছিল।
×