ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হায়দরাবাদে ভারত-ওয়েস্টইন্ডিজ দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু আজ

সিরিজ বাঁচানোর লড়াই উইন্ডিজের

প্রকাশিত: ০৭:২৯, ১২ অক্টোবর ২০১৮

সিরিজ বাঁচানোর লড়াই উইন্ডিজের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত দুই বছরে টেস্ট ক্রিকেটে একেবারেই অগোছালো চেহারা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের। এক সময়ের প্রবল পরাক্রমশালী দলটি এখন নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে তাদের মাঠের নৈপুণ্যে অসঙ্গতি। এজবাস্টনের পর হেডিংলি, আবুধাবির পর শারজা- দারুণভাবে বিপর্যস্ত হয়েও আবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর ঘটনা কিন্তু আছেই ক্যারিবীয়দের। এবার রাজকোটে স্বাগতিক ভারতের কাছে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে তারা প্রথম টেস্টে। লজ্জাজনক সে পরাজয়ের পর এখন লড়াই হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। সিরিজ বাঁচাতে হলে জয়ের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু বিশ্বের এক নম্বর দলের বিপক্ষে তাদের মাটিতে তা বর্তমান উইন্ডিজ দলের জন্য আকাশ-কুসুম কল্পনা। এরপরও অনিশ্চয়তার ক্রিকেটে আনপ্রেডিক্টেবল হয়ে ওঠা ক্যারিবীয়রা কি পারবে ঘুরে দাঁড়াতে? ভারমুক্ত ভারতীয় দল অবশ্য নিজেদের মতো করেই স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলে সিরিজ জিততে চায়। বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় ম্যাচটি শুরু হবে। সবার নজরের কেন্দ্রে এখন পৃথ্বি শ। ১৮ বছরের এ তরুণ অভিষেক টেস্টেই সবার মন জয়ের পাশাপাশি দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছেন। রাজকোটে ১৩৪ রানের যে ইনিংস খেলেছেন তাতে করে তার মধ্যে সবাই পরবর্তী টেন্ডুলকরের ছায়া বেশ ভালভাবেই দেখতে পাচ্ছেন। যদিও টেন্ডুলকরের প্রতিচ্ছায়া থেকে তাকে বাঁচিয়ে স্বাভাবিক খেলার সুযোগ করে দিতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এরপরও প্রথম পরীক্ষায় প্রত্যাশার চাইতেও বেশি কিংবা প্রত্যাশামাফিক নৈপুণ্য দেখানোর পর পৃথ্বির দিকে সবার নজর থাকবে আজ। রাজকোটে পেরেছেন, হায়দরাবাদেও কী পারবেন তিনি? আগের ম্যাচে খেলতে হয়েছে ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রায়। এবার অনেকটাই আরামদায়ক পরিবেশ থাকবে হায়দরাবাদের ৩০ ডিগ্রীর আশপাশে থাকা তাপমাত্রায়। এ কারণে তরুণ পৃথ্বির জন্যও বেশ সুবিধা হবে টানা দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা। যদিও ক্যারিয়ারের শুরুতেই প্রত্যাশার চাপ তার মাথার ওপরে। অবশ্য সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছ থেকে খুব বড় চাপে পড়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ প্রথম টেস্টে তাদের বোলারদের পাশাপাশি ব্যাটসম্যানরাও ছিল ব্যর্থ। আর ভারতের ব্যাটিংটা চোখ জুড়িয়েছে। শুধু আজিঙ্কা রাহানে ও লোকেশ রাহুলের কাছ থেকে এ বছর বড় প্রত্যাশা আছে ভারতীয় দলের। বোলিংয়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা ও কুলদ্বীপ যাদবের ঘূর্ণি ত্রিভুজ ভেঙ্গে বের হওয়া আবারও কঠিন হবে ক্যারিবীয়দের। কিন্তু সিরিজ বাঁচানোর লড়াই বলে তাদের কাছ থেকে তীব্র লড়াইই আশা করছেন কোহলি। তিনি বলেন, ‘তারা অনেক চেষ্টা করবে এবং আমাদের ওপর তীব্র চাপ দেবে। কারণ এটি মাত্র দুই ম্যাচের সিরিজ এবং তাদের আরও কোন বিকল্প নেই ঘুরে দাঁড়ানো ব্যতীত। আমরা সেটা নিয়ে বেশ সতর্ক আছি যে তারা কঠিন লড়াই করবে। আমরা খুবই স্বাভাবিক থেকে নিজেদের সেরা খেলাটা দেখাতে চাই এবং যদি পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে আমরা শুধু নিজেদের মেধা দিয়ে খেলতে চাই।’ ক্যারিবীয়দের অবশ্য ব্যাট-বলে জ্বলে উঠতে হবে। তারা ভারতীয়দের মতো ভারমুক্ত নয়। খুব বাজেভাবে প্রথম টেস্টে তিনদিনের মধ্যেই হেরে যাওয়ার পর সেখান থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোই বড় চ্যালেঞ্জ তাদের জন্য। বিশেষ করে অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার ছাড়া দলের আর কারও মধ্যে লড়াকু মনোভাবটাই নেই। তাই এবারও তাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে পুরো দলকে অনুপ্রাণিত করতে হবে এবং উজ্জীবিত রাখতে হবে উৎসাহ দিয়ে। সর্বশেষ তিনটি টেস্টেই ভারতের মাটিতে ৩ দিনের মধ্যে হেরেছে ক্যারিবীয়রা। এই তিন টেস্টে মাত্র ৭২০.৫ ওভার খেলা হয়েছে এবং সবগুলোতেই ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জাবরণ করেছে তারা। রাজকোটে সবচেয়ে বাজে পরাজয় ছিল। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংস (৯ উইকেটে ৬৪৯) করেছিল ভারত এবং দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিপক্ষে নিজেদের সবচেয়ে বড় জয়টাও তুলে নিয়েছিল। হোল্ডারও তাই বললেন, ‘আমরা বিশ্বের এক নম্বর দলের বিরুদ্ধে খেলছি তাদের নিজেদের মাঠে। ইতিহাস বলছে ১৯৯৪’র পর এখানে আমরা কোন টেস্ট জিতিনি। ওই সময়ে ব্রায়ান লারাসহ বেশ কয়েকজন মহাতারকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতেন।’ তার কথাতেই স্পষ্ট হায়দরাবাদে বর্তমান ক্যারিবীয় দলের জয়ের মুখ দেখা কতটা চ্যালেঞ্জের।
×