ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবীণ সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্রের রেকর্ড

প্রকাশিত: ০৭:১১, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রবীণ সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্রের রেকর্ড

সঞ্জয় সরকার, নেত্রকোনা থেকে ॥ টানা ৬১ ঘণ্টা (বিরামহীন) সাঁতার কেটে ১৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীপথ পাড়ি দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করলেন প্রখ্যাত সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য। বুধবার রাত ৮টায় নেত্রকোনার মদন উপজেলার মগড়া নদীর দেওয়ান বাজার ঘাটে পৌঁছার পর তীরে ওঠেন তিনি। এ সময় নদীর দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ করতালির মাধ্যমে ৬৭ বছর বয়সী এ মুক্তিযোদ্ধা সাঁতারুকে অভিনন্দন জানান। তিনি নিজেও হাত নেড়ে উপস্থিত জনতার সঙ্গে ভাব বিনিময় করেন। তীরে ওঠার পর সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যকে মদনের হযরত সুুমাইয়া (রাঃ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র বেশ সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন। তাকে একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। শনিবার এ কৃতী সাঁতারুকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হবে। গত সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টায় শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার ভোগাই নদীর সেতু এলাকা থেকে ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যের আনুষ্ঠানিক দূরপাল্লার সাঁতার প্রদর্শনী শুরু হয়। মদন উপজেলা নাগরিক কমিটি এবং নালিতাবাড়ি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। টানা ৬১ ঘণ্টার দূরপাল্লার সাঁতারে ভোগাই, নেতাই, কংস ও মগড়া নদীর ১শ ৮৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন তিনি। ৬১ ঘণ্টার প্রদর্শনী চলাকালে এক মিনিটের জন্য কোথায়ও থামেননি। ঘুমাননি একটুও। সাঁতার অব্যাহত রেখেই গ্রহণ করেছেন কফি, স্যুপ, জ্যুস প্রভৃতি তরুল জাতীয় খাবার এবং ফলমূল। এ সময় নদী পথের দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে লাখ লাখ মানুষ ক্ষিতীন্দ্রের সাঁতার প্রদর্শনী উপভোগ করেন। গভীর রাতেও নদীর পাড়ে ছুটে এসেছেন শিশু থেকে আবালবৃদ্ধবনিতা পর্যন্ত। বুধবার নেত্রকোনার মদনের দেওয়ান বাজার ঘাটে পৌঁছার আগে গোটা উপজেলা জুড়ে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে যায় স্থানীয় সব অফিস-আদালত ও স্কুল-কলেজ। দূর-দূরান্তের হাজার হাজার মানুষ এসে জড়ো হয় নদীর দু’পাড়ে। কারও কাছে তিনি পরিচিতি পান ‘জলমানব’-এর, আবার কেউ কেউ আখ্যায়িত করেন ‘জলকুমার’ হিসেবে।
×