ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইসিসি আইনের গ্যাঁড়াকলে বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২৭ জুলাই ২০১৮

আইসিসি আইনের গ্যাঁড়াকলে বাংলাদেশ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কথায় আছে, ‘ক্রিকেট ইজ আ ফানি গেম’। সত্যিই কী তাই? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে একটি বাউন্ডারিকে কেন্দ্র করে আবারও এই কথাটিই উঠছে। মুশফিকুর রহীমের একটি বাউন্ডারি যে ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির আইনের ফাঁদে পড়েই হলো না। সেই বাউন্ডারি হলে যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে এরই মধ্যে সিরিজ জয়ের আনন্দে ভাসত। উল্টো হলো। সিরিজে সমতা আসল। আইনের জালে পড়েই হারল বাংলাদেশ। এমন আলোচনাও তাই উঠে গেল। কী ঘটেছিল? ৪৩তম ওভারের তৃতীয় বলের ঘটনা সেটি। তখন ২৭২ রানের টার্গেটে খেলতে নামা বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ২১৫ রান জমা থাকে। জিততে তখন ৪৬ বলে ৫৭ রান লাগে। দেবেন্দ্র বিশুর বলে রিভার্স সুইপ করেন মুশফিক। এলবিডাবলিউয়ের আবেদন করেন বিশপ। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেন। ততক্ষণে বল উইকেটরক্ষকের পাশ দিয়ে গিয়ে বাউন্ডারি হয়ে যায়। চার রান হয়ে যায়। পরে রিভিউ নিলে মুশফিক আউট থেকে বাঁচেন। রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাটের ছোঁয়া লাগে বলে। আউট হননি মুশফিক। কিন্তু মুশফিক আউট না হলেও আইসিসির একটি আইনে ক্ষতি হয় বাংলাদেশেরই। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেয়ায় চার রান আর বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ হয়নি। আইসিসির বিতর্কিত, অদ্ভুত আইনে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়ে যায়। রিভিউর ক্ষেত্রে আইসিসির আইন অনুযায়ী মাঠের আম্পায়ার আউট দেয়ার পর রিভিউয়ে সেই সিদ্ধান্ত উল্টে গেলেও ওই বলে কোন রান হবে না। এই আইনটিই বাংলাদেশকে চার রান থেকে বিরত রাখে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ হারে ৩ রানে। আইনটি করার পেছনে যুক্তিও ছিল। সাধারণত আম্পায়ার আউট দেয়ার পর বল ‘ডেড’ হয়ে যায়। ফিল্ডাররাও তখন বল ধরার দিকে আর নজর দেন না। তাই সেখানে রান দেয়া হবে না। কিন্তু আইনটিতে এতটাই ফাঁকফোকর আছে যে শুরু থেকেই এ আইন নিয়ে প্রবল সমালোচনা হয়ে আসছে। আম্পায়ারের ভুলের খেসারত কেন ব্যাটসম্যান বা তার দল দেবে, সেই প্রশ্ন সবসময়ই উঠেছে। সেই আলোচনা এবার ভালভাবেই উঠল। আলোচনা এখন আর উঠে লাভ কী? বাংলাদেশ তো আর চার রান পেল না। উল্টো হেরে গেল। এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ঘটেছে। কিন্তু ভাগ্যিস সেবার রান না পাওয়া দল জিতেছিল। চার বছর আগে ক্যান্ডিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচেও এমন হয়েছে। ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ ছিল সেটি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়বর্ধনে ছিল। একটি ডেলিভারি তার প্যাডে লেগে বাউন্ডারি হয়। প্রোটিয়াদের লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দিয়ে আঙ্গুল তোলেন মাঠের আম্পায়ার। আউটের সিদ্ধান্ত দেন। রিভিউ নিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করেন জয়বর্ধনে। সেই বাউন্ডারি যুক্ত হয় স্কোরবোর্ডে। শ্রীলঙ্কা সেই ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত জিতেছিল। তাই এত আলোচনা হয়নি। তাছাড়া প্যাডে লেগে সেই বল বাউন্ডারি হয়। এবার তো মুশফিকের ব্যাটে লেগেই হয়েছিল বাউন্ডারি। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষেও টিভিতে দুই বিশেষজ্ঞ ইয়ান বিশপ ও জেফ ডুজনের আলোচনায় এ বিতর্কিত আইনই থাকে। কথা উঠে, যদি বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো ম্যাচে শেষ বলে এমন ঘটে। শিরোপার ফয়সালা এই আইনে হয়ে যায়। তাহলে বিষয়টি কতটা দুঃখজনক ও বিতর্কিত হবে। সেটি তুলে ধরেন বিশপ।
×