অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাঁচার জন্য অনেকটা বাধ্য হয়েই কাজ করে আয় করতে হয় পথশিশুদের। তাদের আয় করা অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমানোর সুযোগ থাকলেও সহযোগিতা না থাকায় বঞ্চিত হচ্ছে অনেকেই। এ ক্ষেত্রে পথশিশু সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলোকে দায়িত্ববোধ বাড়ানো ও জমানো টাকার লভ্যাংশ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, সর্বোচ্চ হারেই দেয়া হচ্ছে লভ্যাংশ।
স্টেশনে ট্রেন আসা মাত্রই ছুটে চলা। জীবনের প্রয়োজনেই এ ছোটাছুটি। তাই কখনও টোকাই, কখনও মালামাল টেনে কিছু টাকা আয় করার চেষ্টা মাত্র। তবে যা আয় হয়, তার কিছু অবশিষ্ট থাকলেও নিরাপদ আশ্রয়স্থল না থাকায় হারিয়ে যায় বিভিন্নভাবে। এদের অনেকেই ব্যাংকিং ব্যবস্থা না জানায় দিনে দেড়শ’ থেকে ২শ’ টাকা আয় করে কিছু টাকা জমা রাখে নিকটস্থ বা পরিচিতজনের কাছে। পথশিশুরা বলেন, ২০০ থেকে ৩০০ টাকা উপার্জন করলে সব খাওয়া দাওয়াতেই চলে যায়। শিশুদের টাকা কে বা কারা কীভাবে ফিরিয়ে দিবে, সেই আশঙ্কা থেকেই পথশিশুদের আয়ের একটি অংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রাখার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট খোলার সংখ্যা বাড়ার বিপরীতে আরও কমছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলোকে আন্তরিক হওয়া এবং জমাকৃত টাকার লভ্যাংশ দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, সামাজিক এনজিওগুলো যারা আছে আমার মনে হয় তারা অধিকতর কার্যকরভাবে এই বিষয়টা দেখতে পারে। সিপিডির গবেষক গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সুদ দেয়া গেলে উভইভাবেই শিশুরা উপকৃত হবে। এর একটা ইতিবাচক ভূমিকা সমাজে দেখতে পাব। আর ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলার জন্য শর্ত শিথিলের পরামর্শ গবেষকদের। বিআইডিএসের সিনিয়র গবেষক ড. নাজনীন বলেন, তাদের জন্য প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। পথশিশুদের কাছে কাগজপত্র বেশি রাখার সুযোগ নেই।
তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, এনজিওর মাধ্যমে সহজে এ্যাকাউন্ট খোলা ও নির্ধারিত হারেই লভ্যাংশ দেয়া হচ্ছে। এসআইবিএলের এসএভি ইউনিট প্রধান সেলিনা আলম বলেন, আমাদের ব্যাংকের সর্বোচ্চ সুদ টাই দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ওদের মুনাফাটা যোগ হয়। উন্নয়নশীল দেশের পরিপূর্ণ স্বীকৃতি পেতে ২০৩০ সালে মধ্যে শিশুশ্রম কমিয়ে আনার পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।