ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটে আউশ মৌসুমে সুগন্ধী ধানের বাম্পার ফলন

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১১ জুলাই ২০১৮

বাগেরহাটে আউশ মৌসুমে সুগন্ধী ধানের বাম্পার ফলন

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটে আউশ মৌসুমে সুগন্ধী জাতের (এক ধরনের ধানের জাত) ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আউশ ধানের মৌসুমে আউশের পরিবর্তে অর্গানিক পদ্ধতিতে সুগন্ধী জাতের ধানের ভাল ফলন হওয়ায় চাষি ও কৃষি বিভাগ খুশি। হারিয়ে যাওয়া আউশের মৌসুমে ব্যাপকভাবে এ ধানের চাষ করার চিন্তা করছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগও চায় এ সুগন্ধী জাতের ধান ছড়িয়ে পড়ুক সারাদেশে। এ অঞ্চলে এক সময় এ মৌসুমে ব্যাপক আউশ ধানের চাষ হতো। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আউশের ফলন কমে যাওয়ায় কৃষক আউশ ধান চাষ বন্ধ করে দেন। বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার দড়িচরমালিপাটন এলাকায় আউশ ধানের এ মৌসুমে গ্রীন বাগেরহাট অর্গানিক এ্যাগ্রো লিমিটেড সুগন্ধী জাতের ধান চাষের উদ্যোগ নেয়। কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে মার্চ মাসে ৪ বিঘা জমিতে সুগন্ধী জাতের ধান রোপণ করে। চার মাসে ৩৩ শতাংশে বিঘা প্রতি জমিতে ১৫-১৬ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। ধানের ভাল ফলন হওয়ায় খুশি চাষি। চাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, আগে কখনও এই ধানের চাষ করতাম না; কৃষিমন্ত্রীর কথা শুনে এই ধানের চাষ করেছি। এ ধানের ফলন খুবই ভাল। আর এই ফলন দেখে আমরা চিন্তা করছি, আগামীতে জমি বাড়াব। আশপাশের চাষিদের উদ্বুদ্ধ করব। গ্রীন বাগেরহাট অর্গানিক এ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী আকবর মিন্টু বলেন, বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে আউশ মৌসুমে আউশের পরিবর্তে নতুন ধানের সন্ধান করতে থাকি। পরে রাজশাহী থেকে সুগন্ধী জাতের ধানের বীজ সংগ্রহ করে অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করি। কোন রাসায়নিক সার ছাড়াই একমাত্র জৈব সার ব্যবহারে আমাদের জমিতে যে ফলন হয়েছে তাতে আমরা খুবই খুশি। ভবিষ্যতে এই সুগন্ধী জাতের ধান চাষ বৃদ্ধি করব। এলাকার কৃষক জাতে এই ধানের চাষ করে তার জন্য বীজ সরবরাহ করার ব্যবস্থা করব। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আউশ ধান ক্রমশ বিলুপ্তির পথে। ফলন কমে যাওয়ায় এই সুন্দর সুস্বাদু ধান হারিয়ে যাচ্ছে। কৃষক লাভবান হচ্ছে না। আমরা এই ধানের জাত রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছি। হাইবেলু টপ এ্যারোমেটিক রাইচটাকে (সুগন্ধ ধান) আউশ মৌসুমে উৎপাদন করে চাষিদের যদি লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে আমাদের ঐতিহ্যবাহী ধান আউশ মৌসুমটা আবার ফিরে আসবে। আমরা এক বছর গবেষণা চালিয়ে সফলতা পেয়েছি। বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ আফতাব উদ্দিন বলেন, আউশ মৌসুম চাষিদের কাছে অবহেলিত বিভিন্ন কারণে। আমার মনে হয় এভাবে নতুন জাতের আবাদের প্রচার হলে চাষিদের আগ্রহ বাড়বে। সারাদেশে আউশ ফসলের ব্যাপক সাড়া জাগবে। আমরাও চেষ্টা করব চাষীদের মাধ্যমে সুগন্ধী জাতের ধান সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে।
×