ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিবির পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব শুরু কারস্টেনের

প্রকাশিত: ০৭:১২, ২২ মে ২০১৮

বিসিবির পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব শুরু কারস্টেনের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রবিবার রাতেই ঢাকা এসেছেন। কারণ, গ্যারি কারস্টেন বাংলাদেশ দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন। আর আইপিএলে তিনি কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর। সেই দলটি প্লে-অফে উঠতে ব্যর্থ হওয়ায় আগেভাগেই বিসিবির সঙ্গে বসার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ব্যবস্থাপনা পরামর্শক হিসেবে তার দায়িত্বের আওতায় নতুন প্রধান কোচ খুঁজে দেয়া, দল নির্বাচন, জাতীয় দলের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা, দল নির্বাচন, কোচিং ও জাতীয় দল সম্পৃক্ত আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নজরদারি করবেন। প্রথমে দীর্ঘমেয়াদে অর্থাৎ আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত কাজের কথা থাকলেও সময়ের অভাবে আপাতত কোচ নিয়োগ পর্যন্ত কাজ করবেন কারস্টেন। তবে বেশি গুরুত্ব পাবে টিম পর্যালোচনার পর প্রতিবেদন দেয়া। সোমবার রাজধানী ঢাকার এক পাঁচ তারকা হোটেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর এ বিষয়গুলো জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। এর মধ্যে প্রাথমিক দায়িত্ব তার কোচ খুঁজে বের করা। কারণ, গত বছর সেপ্টেম্বর থেকেই জাতীয় দলের প্রধান কোচের পদটি শূন্য পড়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরেই খোঁজাখুঁজি করে কোন সমাধান বের করতে পারেনি বিসিবি এবং কাউকে এ পদের জন্য নিশ্চিত করতে পারেনি। এখনও বিসিবির তালিকায় কয়েকজন আছেন সম্ভাব্য কোচ হিসেবে। বিসিবি জানিয়েছে, কারস্টেন কোচ নির্ধারণ করবেন না, তবে তার পছন্দনীয়দের মধ্যে বেছে নেয়ার জন্য পরামর্শ দেবেন। তিনি ইতোমধ্যেই ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার পছন্দনীয় ৩ কোচের কথা জানিয়েছেন বিসিবিকে। আবার জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ নিয়োগের ক্ষেত্রেও দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। কিন্তু বিসিবি মূলত দল পর্যালোচনার বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে বেশি। এ বিষয়ে সিইও নিজামউদ্দিন বলেন, ‘দলগত পর্যালোচনাটা আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উনি ইন্টারনাল অডিট করছেন, এতে আলাদাভাবে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে উনি বসার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গেও উনি বসবেন। বিশেষ করে দল নির্বাচক, বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বসার পরিকল্পনাও তার রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আপনাদের জানাতে চাচ্ছি যে, উনি খুব স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাচ্ছেন এবং সেভাবেই তিনি কাজ করছেন। উনাকে শুধুমাত্র আমরা লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছি।’ এছাড়াও ভারতীয় ক্রিকেট দলকে ২০১১ বিশ্বকাপ জেতানো কোচ কারস্টেন বাংলাদেশের দল নির্বাচন তথা ক্রিকেটার নির্বাচন প্রক্রিয়া কি, জাতীয় দলের পাইপ লাইন কেমন, গেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট কিভাবে পরিচালনা করা যায়- এসব জানবেন। সব দেখে, জেনে ও শুনে তিনি একটি প্রতিবেদন বোর্ড সভাপতির কাছে পেশ করবেন। কারস্টেনের এই দায়িত্বটা দীর্ঘমেয়াদী নয়। এবারের ক্ষুদ্র সময়ের সফরে তিনি জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ইতোমধ্যে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে। কথা বলেছেন বিসিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে। আর আইপিএলে বাংলাদেশ দলের টি২০ ও টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যেমন আলোচনা করেছেন ভারতে থাকার সময়েই, তেমনি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গেও কথা বলেছেন। অর্থাৎ বেশ আগেভাগেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন কারস্টেন। কারণ, অনেক আগে থেকেই তাকে এই দায়িত্ব নেয়ার ক্ষেত্রে নিশ্চিত করেছিল বিসিবি। আবার বিসিবির অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান, কোচিং স্টাফদের সঙ্গে, গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গেও কথা বলবেন তিনি। এ বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘আসলে গ্যারি কারস্টেন আপাতত বাংলাদেশ দলের একটি ‘ইন্টার্নাল অডিট’ করছেন। সামনে আইসিসির যে সব কম্পিটিশন আছে, আইসিসি বিশ্বকাপ, টি২০ বিশ্বকাপ; এগুলো সামনে রেখে কিভাবে বাংলাদেশ দলকে উন্নত করা যায়, কোন কোন জায়গায় কাজ করতে হবে, এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছেন। তিনি বোর্ডকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিবেন। একই সঙ্গে কোচ নিয়োগ নিয়েও তিনি কাজ করছেন। আমরা ইতোমধ্যে কয়েকজন কোচের নাম দিয়ে সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছি, গ্যারি কারস্টেনের কাছেও কিছু নাম আছে। আপাতত দলের পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর তিনি হয়তো তার পরামর্শ আমাদের দেবেন যে, কোন বিষয়গুলোতে আমাদের বেশি কাজ করতে হবে এবং এরপর তিনি বলবেন কোন কোচ আমাদের জন্য বেশি কার্যকর হবেন।’ কারস্টেন মূলত টিম ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করবেন। এ বিষয়ে নিজামউদ্দিন বলেন, ‘আগে আমাদের পরিকল্পনা ছিল উনি দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন, বিশ্বকাপ পর্যন্ত; প্রাথমিকভাবে তিনি সম্মতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে অন্যান্য কাজের ব্যস্ততার কারণে তিনি জানিয়েছেন যে, আপাতত কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যন্ত কাজ করবেন। আমাদের লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগেই এ প্রক্রিয়া শেষ করা। আমাদের কাছে যে নামগুলো আছে, তা আমরা তার (গ্যারি) কাছে পাঠিয়েছি। উনি কিন্তু ভারতে থাকতেও কাজ করেছেন। আমরা যে সব নাম তার কাছে পাঠিয়েছি, তাদের সঙ্গে উনি যোগাযোগ করছেন। উনার নিজের তালিকায় থাকা কোচদের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করছেন।’
×