ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অনিয়মের অভিযোগে নাটকপাড়ায় উত্তেজনা ॥ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের নির্বাচনে ভুতুড়ে ভোট!

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ১০ মে ২০১৮

অনিয়মের অভিযোগে নাটকপাড়ায় উত্তেজনা ॥ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের নির্বাচনে ভুতুড়ে ভোট!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মোট ভোটার ২৩২। আর ভোট পড়েছে ২৩৪টি! সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা মহানগর) পদে এক প্রার্থী পেয়েছেন ৩২ ভোট। অন্যজন পেয়েছেন ২৯ ভোট। উভয় প্রার্থীর ভোট যোগ করলে সংখ্যাটি হয় ৬১। অথচ ঢাকা মহনগরীতে ভোটার মোট ৬০ জন। এমন ভুতুড়ে ভোট দেখে অনেকেরই চোখ কপালে। গত শনিবার বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় ও নির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে এই ভুতুড়ে ভোট প্রদানের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ওঠেছে। শিল্পকলা একাডেমিতে দিনভর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির অভিযোগ সামনে আসায় নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। নাটকপড়ায় গুঞ্জনÑ ইস্যুটি গড়াতে পারে আদালত পর্যন্ত। জানা যায়, নির্বাচনে অনিয়ম, অসঙ্গতি ও কারচুপির অভিযোগ এনে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন পরিচালনা পরিষদ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন সভাপতিম-লীর চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ঝুনা চৌধুরীসহ নির্বাচনে অংশ নেয়া নয় প্রার্থী। লিখিত অভিযোগপত্রে বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে বলা হয়, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের মোট ভোটার ২৩২। অথচ ভোট গণনার সময় দেখা যায় ব্যালট পেপার জমা পড়েছে ২৩৪। অতিরিক্ত দুটি ব্যালট পেপারেই প্রমাণ হয় নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি ও কারচুপি হয়েছে। একইভাবে ঢাকা মহনগরীতে ভোটার সংখ্যা ৬০। ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা মহানগর) পদের ভোট গণনায় তপন হাফিজ পেয়েছেন ৩২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জিয়াউল হাসান জিয়া পেয়েছেন ২৯ ভোট। তার মানে মোট ভোটের চেয়ে ১ ভোট বেশি পড়েছে। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, শুধুমাত্র নাট্যকর্মীদের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার মাধ্যমে কমিশন এই নির্বাচন সম্পন্ন করবেন, এটাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু নির্বাচনের দিন আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ করেছি- ভোটগ্রহণ ও ভোট গণনার সকল পর্যায়ে শিল্পকলা একাডেমির বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নির্বাচনী কক্ষে উপস্থিতি ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণ কোনভাবেই নির্বাচনের নিশ্চয়তা দেয় না। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জেনেও নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ নানাবিধ প্রশ্নের জন্ম দেয় এবং ব্যাখ্যার দাবি রাখে। অভিযোগকারীরা ইস্যুটি আদালত পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনকে বিতর্কের উর্ধে রাখার জন্য উপরোক্ত বিষয়সমূহের ব্যাখ্যা নির্বাচন কমিশন আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রদান করবে। সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণের কারণে উত্তেজনা বেড়েছে। এদিকে, নাটকপাড়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনে ভুতুড়ে ভোট পড়ার ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালেচনা হচ্ছে। ফেডারেশনের তরুণ সদস্যরা অভিযোগের পক্ষে-বিপক্ষে ফেসবুকে প্রতিদিন লিখছেন। সিনিয়ররাও বাদ যাচ্ছেন না। এ অবস্থায় খ্যাতিমান নাট্যজনেরা বেশ বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন বলে জানা যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নাট্যব্যক্তিত্ব বলেন, বাড়তি ভোট পড়ার ঘটনাটি গননায় ধরা পড়েছে। এর কী ব্যাখ্যা নির্বাচন কমিশন ভাল জানে। তবে ঘটনা যাই হোক, সবাই মিলে নাটকের জন্য কাজ করে যাওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।
×