ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ছন্দে ফেরা কেভিতোভা

প্রকাশিত: ০৭:৫০, ৯ মে ২০১৮

ছন্দে ফেরা কেভিতোভা

গত কয়েক বছর ধরেই বিশ্ব টেনিসের আলোচিত নাম পেত্রা কেভিতোভা। ইনজুরি আর ফর্মহীনতায় দীর্ঘদিন ধরেই লড়াই করছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের এই টেনিস তারকা। কিন্তু কখনোই হাল ছাড়েননি তিনি। অবশেষে তারই ফল পাচ্ছেন দুইবারের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ এবং কাতার ওপেনের পর প্রাগ ওপেনেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন তিনি। অথচ, গত মৌসুমেও দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন পেত্রা কেভিতোভা। দুর্দো-প্রতাপে এবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরলেন চেক প্রজাতন্ত্রের এই টেনিস তারকা। শনিবার প্রাগ ওপেনের ফাইনালে কঠিন লড়াইয়ের পর ৪-৬, ৬-২ এবং ৬-৩ গেমে পরাজিত করেন রোমানিয়ার মিহায়েলা বুজার্নেস্কুকে। সেইসঙ্গে চলতি মৌসুমের তৃতীয় শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন দুইবারের উইম্বলডনজয়ী এই টেনিস তারকা। ২০১৬ সালে দুর্বৃত্তদের চুরিকাঘাতে আহত হয়েছিলেন পেত্রা কেভিতোভা। যে কারণে দীর্ঘ সময় কোর্টের বাইরে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। তার আঘাত এতোটাই ভয়াবহ ছিল যে, টেনিসে ফেরা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। কেননা স্টেফি গ্রাফের এক পাগল ভক্তের কারণে মনিকা সেলেসের মতো খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারটাও যে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনাটা ১৯৯৩ সালের। ঘটেছিল হামবুর্গে। সেলেসের পিঠে ছুরি বসিয়ে দিয়েছিলেন মানসিকভাবে অসুস্থ গুন্টার পার্চ। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চোট কাটিয়ে উঠলেও মানসিকভাবে কখনোই আর সেই সেলেসকে দেখা যায়নি টেনিস কোর্টে। কিন্তু সেলেসের পথে হাটেননি কেভিতোভা। সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে দুর্দো-প্রতাপে ফিরে আসেন কেভিতোভা। চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই কোর্টে নিজের সেরাটা ঢেলে দিচ্ছেন তিনি। সেন্ট পিটার্সবাগ ওপেনে জিতেন এ মৌসুমে নিজের প্রথম শিরোপা। সেই টুর্নামেন্টে ক্রিস্টিনা মাদেনোভিচকে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দিয়েই নতুন বছরের প্রথম শিরোপা নিজের শোকেসে তোলেন কেভিতোভা। নতুন মৌসুমের প্রথম শিরোপা জয়ের পর কাতার ওপেনেও স্বাভাবিকভাবে ফেবারিটের তকমাটা মাখানো ছিল চেক তারকার গায়ে। শুরুটাও করেন ঠিক সেভাবেই। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেই কাতার ওপেনের শিরোপা নিজের শোকেসে তোলেন কেভিতোভা। ফাইনালে চেক প্রজাতন্ত্রের এই টেনিস তারকা ৩-৬, ৬-৩ এবং ৬-৪ গেমে পরাজিত করেন স্পেনের গারবিন মুগুরজাকে। সেই সঙ্গে ক্যারিয়ারের ২২তম ডব্লিউটিএ শিরোপার স্বাদ পান তিনি। কাতার ওপেন জয়ের পথে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে থাকা চার খেলোয়াড়কে হারিয়েছিলেন তিনি। যার মধ্যে ছিলেন পোল্যান্ডের এ্যাগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা, ইউক্রেনের এলিনা সিতলিনা, জার্মানির জুলিয়া জর্জেস এবং স্পেনের গারবিন মুগুরুজার মতো তারকাও। কাতার ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সৌজন্যে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়েও ব্যাপক অগ্রগতি হয় কেভিতোভার। প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে ফিরে আসেন তিনি। এবার প্রাগ ওপেনেও চমকে দিলেন কেভিতোভা। রোমানিয়ার সপ্তম বাছাই মিহায়েলা বুজার্নেস্কুকে পরাজিত করে মৌসুমের তৃতীয় ট্রফি উঁচিয়ে ধরলেন তিনি। ২৮ বছর বয়সী চেক তারকার এটা ক্যারিয়ারের ২৩তম ডব্লিউটিএ শিরোপা। অন্যদিকে মিহায়েলা বুজার্নেস্কুর সামনে ছিল ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপা জয়ের হাতছানি। কিন্তু তার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিলেন কেভিতোভা। নিজের দেশের ঘরের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কেভিতোভার নতুন মিশন মাদ্রিদ ওপেন। এখানেও ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মাখানো ছিল তার। জয় দিয়ে মিশন শুরু করেন তিনি। রবিবার নিজের প্রথম ম্যাচে ৬-১ এবং ৬-২ গেমে সরাসরি সেটে পরাজিত করেছেন ইউক্রেনের লেসিয়া সুরেঙ্কোকে। চেক তারকা কেভিতোভঅছাড়াও মাদ্রিদ ওপেনের প্রথম পর্বের বাঁধা পেরিয়েছেন পুয়ের্তো রিকোর মনিকা পুইগ, গ্রেট ব্রিটেনের জোহানা কন্টা, স্পেনের কার্লা সুয়ারেজ নাভারো, অস্ট্রিলিয়ার এ্যাশলে বার্টি, ডেনমার্কের ক্যারোলিন ওজনিয়াকি, বেলারুশের ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা, রাশিয়ার মারিয়া শারাপোভা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামান্থা স্টোসার ও স্লোয়ানে স্টিফেন্স। তবে এই টুর্নামেন্ট থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সেরেনা উইলিয়ামস। যিনি ২৩তম গ্র্যান্ডস্লাম জিতে ইতোমধ্যেই নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। প্রথম সন্তানের জন্মের কারণে এক বছর টেনিস থেকে দূরে ছিলেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা। তবে চলতি বছরের মার্চে ইন্ডিয়ান ওয়েলস দিয়ে আবারও কোর্টে ফিরে আসেন তিনি। ঐ টুর্নামেন্টের তৃতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক এই নাম্বার ওয়ান খেলোয়াড়। এরপর মিয়ামি ওপেনেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি সেরেনা। প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হয় তাকে। তাও আবার জাপানের অখ্যাত নাওমি ওসাকার কাছে হেরে। যে কারণেই নিজের বর্তমান পারফরমেন্সে মোটেও খুশি নন সেরেনা উইলিয়ামস। এজন্য ক্লে কোর্টে খেলার জন্য এখনো পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত নন বলে জানান সেরেনা। ফলে মাদ্রিদ ওপেনে না খেলার সিদ্ধান্ত নিলেন উইলিয়ামস পরিবারের ছোট কণ্যা। ইতোমধ্যে মাদ্রিদ ওপেনের আয়োজকদের চিঠি দিয়ে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সেরেনা। আমেরিকান তারকার নাম প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে আয়োজক কমিটির পরিচালক মানোলো সানতানা।
×