ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্প্যানিশ কোপা ডেল’রে, মেসি-সুয়ারেজের গৌরবময় রেকর্ড, অসহায় আত্মসমর্পণ সেভিয়ার, বার্সিলোনা ৫-০ সেভিয়া

টানা চতুর্থ, রেকর্ড ৩০ শিরোপা বার্সিলোনার

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

টানা চতুর্থ, রেকর্ড ৩০ শিরোপা বার্সিলোনার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্প্যানিশ কোপা ডেল রে’র শিরোপা ‘ঘরোয়া’ বানিয়ে ফেলেছে বার্সিলোনা। এই আসরটিকে এখন কাতালানদের পৈত্রিক সম্পত্তি বললেও হয়তো বাড়িয়ে বলা হবে না। টানা চতুর্থসহ রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩০তম শিরোপা জিতে সে স্বাক্ষরই রেখেছে দলটি। শনিবার রাতে ১১৬তম আসরের ফাইনালে সেভিয়াকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার দল। ১৯৮০ সালের পর কোপা ডেল রে ফাইনালে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় এটি। সেবার রিয়াল মাদ্রিদ শিরোপা জিতেছিল ৬-১ গোলের ব্যবধানে। এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপালিটানোতে প্রথমার্ধে লিওনেল মেসির একটি ও লুইস সুয়ারেজের দুই গোলে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বার্সা। দ্বিতীয়ার্ধে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ও ফিলিপ কুটিনহোর আরও দুই গোলে সেভিয়ার বড় হার নিশ্চিত হয়। ২০১৪ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ সর্বশেষ কোপা ডেল রে’র শিরোপা জয় করে। এরপর হওয়া চারটি আসরেই ট্রফি নিজেদের শোকেসে ভরেছে কাতালান জায়ান্টরা। অবাক করা বিষয় হলো, কোপাতে ট্রফি জয়ে বার্সার আশেপাশেই নেই কোন দল। বার্সার ৩০তম শিরোপার পর দ্বিতীয় সর্র্বোচ্চ ২৩বার ট্্রফি জিতেছে এ্যাথলেটিক বিলবাও। বিলবাও সর্বশেষ ট্রফি জিতেছে সেই ১৯৮৪ সালে। আর বার্সার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল ট্রফি জিতেছে মাত্র ১৯বার। পরিসংখ্যানই জানান দিচ্ছে কোপা ডেল রে’তে অপ্রতিরোধ্য, অপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনা। গত পাঁচ বছরে প্রতিটি ফাইনালেই খেলে বার্সিলোনা। ম্যাচ শেষে মেসি-সুয়ারেজরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরা কিংবা হাই ফাইভ দিয়ে শিরোপা উদযাপন করলেও সবার মনেই আগামী রবিবার ডিপোর্টিভো লা করুনার বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়ে চিন্তা। কারণ ম্যাচটি জিততে পারলে লা লিগার শিরোপাও নিশ্চিত হবে বার্সার। সেই সঙ্গে ঘরোয়া মৌসুমে ডাবল শিরোপাও ঘরে আসবে। এবারের লীগ শিরোপাটি হতে পারে বার্সিলোনার জন্য একটু অন্যরকম। প্রথম দল হিসেবে লা লিগায় অপরাজিত থেকে শিরোপা নিশ্চিতের হাতছানি এখন মেসিদের সামনে। আর এটা করতে পারলেই কেবল এএস রোমার কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ থেকে বিদায়ের হতাশা কিছুটা হলেও কাটবে। ম্যাচ শুরুর ১৪ মিনিটেই সিলিসেনের লম্বা পাস থেকে কুটিনহো সেভিয়ার রক্ষণভাগে নিজেকে ফাঁকা পেয়ে শেষ মুহূর্তে সুয়ারেজের দিকে বল বাড়িয়ে দেন। পাস থেকে বার্সাকে এগিয়ে দেন সুয়ারেজ। এরপর অবশ্য কিছুক্ষণের জন্য সেভিয়াই ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করে। জেসাস নাভাসের ক্রস থেকে সেভিয়ার তিনজন খেলোয়াড়ের কেউই বল ধরতে পারেননি। ফ্র্যাংকো ভাসকুয়েজের হেড গোলের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। এরপর ম্যাচের ৩১ মিনিটে ইনিয়েস্তার শট বারে লাগার পরপরই ফিরতি বলে জর্ডি আলবার ব্যাক হিলে মেসি দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। বিতর্কিত অফসাইডের কারণে মেসির দ্বিতীয় গোলটি বাতিল হয়ে যায়। যদিও ৪১ মিনিটে উরুগুয়ের তারকা সুয়ারেজ আর কোন ভুল করেননি। বিরতির আগে মেসির সহায়তায় নিজের দ্বিতীয় গোল করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে নেমেই গোলের নেশায় পেয়ে বসে স্প্যানিশ জায়ান্টদের। বার্সার হয়ে নিজের শেষ ফাইনালকে স্মরণীয় করে রাখতে একটা গোল যে দরকার ছিল ইনিয়েস্তার। সে জন্যই কিনা ৫২ মিনিটে গোল করেন স্প্যানিশ তারকা। এবারও বল বানিয়ে দেন মেসি। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে সেভিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকেন কুটিনহো। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলের ব্যবধান ৫-০ করেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। এই ম্যাচে গোল করে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে পাঁচটি কোপা ডেল’রে ফাইনালে গোল করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন মেসি। ২০০৯, ২০১২, ২০১৫, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের ফাইনালে গোল করেন মেসি। সেভিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে গোল করার মাধ্যমে টানা নয় মৌসুম ৪০ বা এর বেশি গোল করেছেন মেসি। তাছাড়া ক্লাব এবং জাতীয় দলের হয়ে ২৭টি ফাইনাল খেলে ২৮টি গোল করেছেন তিনি। পাশাপাশি ১২টি গোলে সহায়তাও করেছেন। এর আগে ১৯৪০ ও ৫০’র দশকে এ্যাথলেটিকো বিলবাওয়ের তারকা টেলমো জারা এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। যদিও সবমিলিয়ে এই পাঁচটি ফাইনালে মেসির ৬ গোলের থেকে জারার ৮ গোল এগিয়ে আছে। ম্যাচে উরুগুয়ের তারকা সুয়ারেজও দারুণ রেকর্ড গড়েছেন। তিনি বার্সার হয়ে পাঁচটি ভিন্ন প্রতিযোগিতার ফাইনালে গোল করার অসামান্য কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তাছাড়া বার্সার জার্সি গায়ে ১৫০ গোলের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন সাবেক লিভারপুল তারকা।
×