ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ফের দেশব্যাপী স্কুল ফুটবল শুরুর উদ্যোগ বাফুফের

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

ফের দেশব্যাপী স্কুল ফুটবল শুরুর উদ্যোগ বাফুফের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দেশের মৃতপ্রায় ফুটবলকে আবারও বাঁচিয়ে তুলতে হলে প্রয়োজন তৃণমূল ফুটবলে জোর দেয়া। দেরিতে হলেও সেই শুভবুদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। প্রায় ছয় বছর পর আবারও তারা আয়োজন করতে যাচ্ছে জাতীয় স্কুল ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। আগামী মে’র প্রথম সপ্তাহ থেকে সারাদেশের ৬৪ জেলার ৬৪ স্কুল নিয়ে হতে যাচ্ছে স্কুল ফুটবল ২০১৭-১৮’র আসর। ফুটবলার তৈরির আঁতুড়ঘর হচ্ছে স্কুল ফুটবল। অথচ এই আসরটি আয়োজনে কখনই ধারাবাহিক ছিল না দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ এই সংস্থাটি। অথচ বৃহস্পতিবার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান প্রাণ ডেইরি এবং গুডলাক স্টেশনারিজের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাফুফের কর্তাব্যক্তিরাই এই আসরকে ফুটবলার তৈরির সূতিকাগার বলে আখ্যায়িত করেন। এই টুর্নামেন্ট বাবদ বাফুফে ফিফার কাছ থেকে অনুদানও পেয়েছে ৯০ লাখ টাকা। কিন্তু প্রাণের সঙ্গে তাদের কত টাকার চুক্তি হয়েছে সেটি কিছুতেই বলতে চাইছিলেন না বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ এবং বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী। যদিও শেষ পর্যন্ত তারা জানিয়েছেন টুর্নামেন্টের বাজেট প্রায় ৬০ লাখ টাকা। প্রাণ গ্রুপ অর্থ সহায়তার পাশাপাশি লজিস্টিক সাপোর্টও দেবে বাফুফেকে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত স্কুল ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান বিজন বড়ুয়া জানানÑ সারাদেশ থেকে ৬৪ জেলার ৬৪ স্কুল অংশ নেবে এই টুর্নামেন্টে। তবে আপাতত ৫৬ স্কুলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। পরে দলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দেশের সাতটি জোন থেকে মোট আট দল নির্বাচিত হবে। জোনগুলো হচ্ছে : ঢাকা, রংপুর, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম অথবা ফেনী। প্রতিটি জোনে দুই ভাগে লীগ পদ্ধতিতে হবে খেলা। ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল খেলা। বিজন বড়ুয়া বলেন, ‘অনেকদিন পরে হলেও নানা প্রতিকূলতার মধ্যে শুরু করতে যাচ্ছি জাতীয় স্কুল ফুটবল। এ টুর্নামেন্ট ছাড়া ফুটবলের উন্নয়ন সম্ভব নয়। স্কুল চললেই জেলা লীগে ফুটবলার পাওয়া যাবে। সেখান থেকে ক্লাবের জন্য এবং জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পাবে ফুটবলাররা।’ সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘বিজনের কাছে অনুরোধÑ ফাইনাল রাউন্ড ঢাকায় করবেন। এখন থেকে আমরা স্কুল ফুটবলটা নিয়মিত করব। এ আসর দিয়ে আবারও যাত্রা শুরু হলো। প্রতি বছর ক্যালেন্ডারে থাকবে এ টুর্নামেন্ট। বাজেটে ফুটবলকে অন্তর্ভুক্ত করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। প্রতিবছর সরকারের কাছ থেকে আমরা টাকা পাব। প্রাণ গ্রুপকে ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। আশা করছি ভবিষ্যতে তাদের পাশে পাব। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’ এবারই প্রথমবারের মতো স্পন্সর হিসেবে ফুটবলে যুক্ত হয়েছে প্রাণ গ্রুপ। টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষকতা করছে প্রাণ ডেইরি এবং তাদেরই অঙ্গসংগঠন গুডলাক স্টেশনারিজ। প্রাণ ডেইরি লিমিটেডের জিএম অপারেশন রাজীব ইবনে ইসলাম বলেন, ‘বাফুফের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপনে আমরা অনেক টাকা খরচ করি। ভেবে দেখলাম এবার একটা ভাল কাজে খরচ করি। এর আগে ক্রিকেটের সঙ্গে আমরা যুক্ত ছিলাম। এখানে আসার উদ্দেশ্য টুর্নামেন্টে বাচ্চারা পুরস্কার পাক। এখান থেকে আগামীদিনে অন্তত আরও একজন সালাম মুর্শেদী বের হয়ে আসুক।’ খেলাধুলার মাধ্যমেই শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হবে। আর এই বিকাশের জন্য ফুটবলই হচ্ছে সবচেয়ে ভাল মাধ্যম, কেননা এ খেলাটি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। নতুন প্রজন্মকে নৈতিক মূল্যবোধ শেখানো ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে ফুটবল হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। সুস্থ-সবল জাতি গড়তে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। এখন দেখার বিষয় আজকের কিশোর ফুটবলাররা একেকজন হয়ে উঠতে পারে কি না আগামীদিনের সালাউদ্দিন, মুন্না, আমিনুল, সাব্বিরের মতো উজ্জ্বল নক্ষত্র।
×