ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাত মাসে প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশ

সেবা খাতে রফতানি আয় বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২৮ মার্চ ২০১৮

সেবা খাতে রফতানি আয় বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পণ্যের পাশাপাশি সেবা রফতানিতেও কদর বাড়ছে বাংলাদেশের। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) সেবা খাতে দেশের রফতানি আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ০২ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ সংক্রান্ত একটি হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। রফতানিতে সেবা বলতে বোঝায় বিভিন্ন ধরনের পরিবহন, যেমন সমুদ্র-রেল-সড়ক-আকাশ পরিবহন, পর্যটন, ব্যাংক-বিমা, টেলিযোগাযোগ এ তালিকায় নির্মাণ, কম্পিউটার ও তথ্যসেবা, মেধাস্বত্ব ইত্যাদি। এসব সেবার সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু পণ্যকেও সেবার আওতায় বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগৃহীত পরিসংখ্যান অনুযায়ী তিনটি ভাগে সেবা খাতে রফতানি আয়ের সংকলন করেছে ইপিবি। তিনটি ভাগ হলো- গুডস প্রকিউরড ইন পোর্টস বাই ক্যারিয়ারস, গুডস সোল্ড আন্ডার মার্চেন্টিং ও সার্ভিসেস। জুলাই থেকে জানুয়ারি মেয়াদে এ তিন ভাগ থেকে রফতানি আয় এসেছে ২৩০ কোটি ৫ লাখ ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময় এ আয়ের পরিমাণ ছিল ১৯৬ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবা খাতে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ দশমিক ০২ শতাংশ। এ বিষয়ে ইপিবির সহকারী পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের স্থল, সমুদ্র বা বিমানবন্দরে বিদেশী পরিবহনগুলো সেসব পণ্য ও সেবা যেমন- জ্বালানি তেল ও মেরামত সেবা কিনে থাকে সেগুলোকে সেবা খাতের আওতায় ধরা হয়েছে। আর কোন অনাবাসীর কাছ থেকে পণ্য কিনে একই পণ্য কোন অনাবাসীর কাছে বিক্রি করাকে মার্চেন্টিং বলে। এই প্রক্রিয়ায় মোট বিক্রি থেকে মোট ক্রয় বাদ দিয়ে নিট মার্চেন্টিং রফতানি আয় হিসাব করা হয়। রফিকুল বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সেবা খাতের রফতানি আয়ের পুরো পরিসংখ্যান পাওয়া যেত না বলে শুধু পণ্য রফতানির তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে তা প্রকাশ করত ইপিবি। এখন থেকে নিয়মিতভাবেই পণ্য ও সেবা খাতের রফতানি আয়ের তথ্য আলাদাভাবে প্রকাশ করা হবে। সেবা রফতানির পূর্ণাঙ্গ না থাকায় এতদিন শুধু পণ্য রফতানি আয়ের তথ্য প্রকাশ করত ইপিবি। গত অর্থবছর থেকে সেবা খাতের আয়ের তথ্য প্রকাশ শুরু হলেও তা ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়নি। ইপিবির পরিসংখ্যান বলছে, একক মাস ভিত্তিতে জানুয়ারি সেবা খাত থেকে রফতানি আয় হয়েছে ৩৯ কোটি ২৪ লাখ ডলার। জানুয়ারিতে সেবা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৯ কোটি ১৬ লাখ ডলার। এ হিসাবে কেবল জানুয়ারিতে সেবা খাতে রফতানি আয় বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সেবা খাতে জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত রফতানি আয় হয়েছে ৩০ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এ সময়ে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সেবা খাতের মোট রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬১ কোটি ১০ লাখ ডলার। কম্পিউটার সেবা থেকে চলতি অর্থবছরের সাত মাসে রফতানি আয় হয়েছে ১০ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। এ সময়ে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ কোটি ৪১ লাখ ডলার। আর পুরো অর্থবছরে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ডলার। সাত মাসে তথ্য সেবা রফতানি হয়েছে ৪০ লাখ ডলার। অন্যান্য বিজনেস সার্ভিস রফতানি হয়েছে ৩৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার। রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ কোটি ০৮ লাখ ডলার। পুরো অর্থবছরে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি ডলার। আগের ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে রফতানি হয়েছিল ৫০ কোটি ২৮ লাখ ডলার। বীমা সেবা রফতানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে। জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে বীমা সেবা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ লাখ ডলার। বিপরীতে রফতানি হয়েছে ২৪ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬০ দশমকি ৮৮ শতাংশ বেশি। পুরো অর্থবছরে বীমা সেবা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে রফতানি হয়েছিল ২১ লাখ ডলার। আর্থিক সেবা (বীমা ছাড়া) রফতানি হয়েছে ১০ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। সাত মাসে এ খাতের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ কোটি ৪১ লাখ ডলার। আর পুরো অর্থবছরে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে আর্থিক সেবা রফতানি হয়েছিল ১৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অর্থবছরের সাত মাসে সরকারী পণ্য ও সেবা রফতানিও বেড়েছে। এ খাতের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। উল্লেখিত সময়ে সরকারী পণ্য ও সেবা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার। রফতানি হয়েছে ৮৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে রফতানি হয়েছিল ১৩১ কোটি ৩২ লাখ ডলার।
×