স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পেশোয়ার জালমিকে ফাইনালে তিন উইকেটে পরাজিত করে পাকিস্তান সুপার লীগ (পিএসএল) এর শিরোপা জিতেছে ইসলামাবাদ ইউনাইটেড। তবে ফাইনালের উত্তেজনাকে ছাড়িয়ে দীর্ঘ নয় বছর পরে আবারো করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আবহ ফিরেছে এটাই আয়োজকদের সবচেয়ে বড় সফলতা। রবিবার ছুটির দিনে ফাইনাল উপভোগ করতে করাচী স্টেডিয়ামে ছিল উপচেপড়া ভিড়।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলকে বহনকারী বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভেন্যু হিসেবে নির্বাসিত পাকিস্তানে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরে আসার ক্ষেত্রে এটা অন্যতম বড় একটি সহায়ক ভূমিকা হিসেবে কাজ করবে বলেই আয়োজকদের দাবি। ওই হামলার পর থেকে বিদেশী দলগুলো পাকিস্তানে খেলতে অস্বীকৃতি জানায়। যে কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হোম ভেন্যু হিসেবে ঘোষণা দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। এবারের পিএসএল আসরেরও প্রথম ৩১টি ম্যাচ দুবাই ও শারজাতে অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে দুটি প্লে-অফ ম্যাচ লাহোরে অনুষ্ঠিত হয়। দেশে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকাতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও বেশ ভালভাবেই পিএসএল অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিদেশী খেলোয়াড়রাও পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
২০১৬ সালে প্রথমবার আয়োজনে ইসলামাবাদ শিরোপা জিতেছিল। গতকাল লুক রোঞ্চির ২৬ বলে পাঁচটি ওভার বাউন্ডারি ও চারটি বাউন্ডারির সহায়তায় ঝড়ো গতির ৫২ রানের ইনিংসে ইসলামাবাদ ১৬.৫ ওভারে ১৪৯ রানের জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। ১১ ম্যাচে রোঞ্চি সর্বোচ্চ ৪৩৫ রান সংগ্রহ করেছে। আসিফ আলি তিনটি ওভার বাউন্ডারির সহায়তায় ২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া পেশোয়ারের ইনিংসের শুরুটা ভাল হয়নি। লীগে তাদের সর্বোচ্চ স্কোরার কামরান আকমল নয় বলে মাত্র এক রান করে সাজঘরে ফিরেছেন। সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেছেন ক্রিস জর্ডান। আন্দ্রে ফ্লেচারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩ রান। ওয়াহাব রিয়াজ ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৯ উইকেটে পেশোয়ারের দেয়া ১৪৮ রানের ইনিংস মূলত রোঞ্চির কারণে ইসলামাবাদের কাছে খুব একটা বড় মনে হয়নি। স্পিনার শাদাব খান তিনটি ও সামিত প্যাটেল নিয়েছেন ২ উইকেট।
গত বছর মার্চে পিএসএল ফাইনালের পরে লাহোরে সেপ্টেম্বরে বিশ্ব একাদশের বিপক্ষে তিনটি ও একমাস পরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ওয়ানডে ম্যাচ আয়োজিত হয়েছিল। আর এভাবেই ধীরে ধীরে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের পুনরায় আয়োজক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পথ খুঁজে পায়। আইসিসি’ও এই ম্যাচগুলোর সফল আয়োজনে বেশ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। রবিবার করাচীর ম্যাচে ৩৩ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে পুরো স্টেডিয়াম ভরপুর ছিল। একইসঙ্গে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসী।
আগামী ১, ২ ও ৩ এপ্রিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করাচীতে তিনটি টি২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠী অচিরেই পাকিস্তানের আরও বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।