ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে ৬ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতা আনল প্রোটিয়ারা

রাবাদার পেস তোপে অসিদের শোচনীয় হার

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৩ মার্চ ২০১৮

রাবাদার পেস তোপে অসিদের শোচনীয় হার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মেজাজে যেমন চড়া, বল হাতেও তেমন আগুন। পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন কাগিসো রাবাদা। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে কড়া কথা শোনানোর পাশাপাশি কাঁধের ধাক্কা দেয়া এবং দ্বিতীয় ইনিংসে সহঅধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারকে মুখের ওপর ঝামটা দেয়া নিয়ে আইসিসির লেভেল-২ ও লেভেল-১ পর্যায়ের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তবে এই মেজাজ হারিয়ে ফেলা রাবাদার বলে ছিল আরও আগুনের ভাপ যাতে প্রথম ইনিংসে ৫ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ অসি ব্যাটসম্যান পুড়ে ভস্ম হয়েছেন। তাই পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে চারদিন পূর্ণ হওয়ার আগেই ৬ উইকেটে জিতে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে চার টেস্টের সিরিজে সমতায় ফিরেছে তারা। ডারবানে হওয়া প্রথম টেস্টে ১১৮ রানে জিতেছিল সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। পোর্ট এলিজাবেথে প্রথম ইনিংসে রাবাদার গতির সামনে হিমশিম খেয়েছেন অসি ব্যাটসম্যানরা। আরও বেশি আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে রাবাদা তাই মেজাজটাও গরম করেছেন। ফলশ্রুতিতে ৫ উইকেট দখল করে তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস ধসিয়ে দেন ২৪৩ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৮২ রানের দারুণ একটা প্রথম ইনিংস পায় এবি ডি ভিলিয়ার্সের অপরাজিত ১২৬ রানের সুবাদে। তখনও রাবাদাই ছিলেন আলোচনায় তার আচরণের জন্য। ১৩৯ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে নেমে তৃতীয়দিন শেষে অসিরা তুলেছিল ৫ উইকেটে ১৮০ রান, এগিয়ে গিয়েছিল ৪১ রানে। আগেরদিনেই আবার আগুন ঝরাতে শুরু করেছিলেন রাবাদা। ৫ উইকেটের মধ্যে তিনটিই তুলে নিয়েছিলেন। তিনি ফিরিয়ে দেন ডেভিড ওয়ার্নার, শন মার্শ ও উসমান খাজাকে। এরপরও অসিরা ভাল কিছু করার আশায় ছিল উইকেটে মিচেল মার্শ ও উইকেটরক্ষক টিম পেইন থাকার জন্য। চতুর্থদিনের শুরুতেই অসিদের সব আশায় গুড়েবালি। মিচেল মার্শকে দিনের প্রথম ওভারের শেষ বলেই বোল্ড করে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন রাবাদা। আগেরদিনও একেবারে শেষ মুহূর্তে তিনি খাজার (৭৫) প্রতিরোধ ভেঙ্গে ফেলেছিলেন। রাত পার করে নেমেই জ্বলে উঠলেন আবার। মিচেল ৪৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একাই কিছুটা লড়াই চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন পেইন। কিন্তু তিনি সঙ্গী হিসেবে পাননি আর কাউকে। রাবাদার গতির কাছে অসি টেলএন্ডাররা আরও বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মধ্যে ছিল। তিনি আরও তুলে নেন প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ককে। শেষদিকে অবশ্য জশ হ্যাজলউড দ্রুত কিছু রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়ার লিড সামান্য বাড়িয়েছেন। তিনি ১৭ বলে ১৭ রান করে কেশব মহারাজের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ২৩৯ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস। রাবাদা ৫৪ রানে ৬ উইকেট নেন। মাত্র ১০০ রানের লিড পায় অস্ট্রেলিয়া। জয়ের জন্য মাত্র ১০১ রানের লক্ষ্য। হাতে সময় দেড় দিনেরও বেশি। এরপরও প্রোটিয়া ব্যাটিং তেমন সুখকর হয়নি। দলীয় ২২ রানে ডিন এলগার (৫) এবং ৩২ রানে এইডেন মার্করাম (২১) সাজঘরে ফেরেন। এরপর হাশিম আমলা ও ভিলিয়ার্স ৪৯ রানের জুটি গড়ে দু’জনই সাজঘরে ফেরেন। আমলা ২৭, ভিলিয়ার্স ২৮ রান করেন। তবে জয় পেতে আর সমস্যা হয়নি। ৪ উইকেটে ১০২ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ॥ ২৪৩/১০; ৭১.৩ ওভার (ওয়ার্নার ৬৩, ব্যানক্রফট ৩৮, পেইন ৩৬; রাবাদা ৫/৯৬, এনগিদি ৩/৫১) ও দ্বিতীয় ইনিংস ২৩৯/১০; ৭৯ ওভার (খাজা ৭৫, মিচেল মার্শ ৪৫, পেইন ২৮*; রাবাদা ৬/৫৪, এনগিদি ২/২৪, মহারাজ ২/৯০)। দ. আফ্রিকা প্রথম ইনিংস ॥ ৩৮২/১০; ১১৮.৪ ওভার (ভিলিয়ার্স ১২৬*, এলগার ৫৭, আমলা ৫৬, ফিল্যান্ডার ৩৬; কামিন্স ৩/৭৯, মিচেল মার্শ ২/২৬) ও দ্বিতীয় ইনিংস ১০২/৪; (ভিলিয়ার্স ২৮, আমলা ২৭, মার্করাম ২১, ব্রুইন ১৫*; লেয়ন ২/৪৪)। ফল ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ কাগিসো রাবাদা (দক্ষিণ আফ্রিকা)। সিরিজ ॥ ৪ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-১ সমতা।
×