ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আফগানদের সম্ভাবনা ফিকে, ক্যারিবীয়দের আবার জয়

প্রকাশিত: ০৭:২০, ১০ মার্চ ২০১৮

আফগানদের সম্ভাবনা ফিকে, ক্যারিবীয়দের আবার জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত কয়েক বছর ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুরন্ত একটি দলের নাম হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান। সে কারণে টেস্ট মর্যাদাও পেয়েছে দলটি। তাই অনেকে নিশ্চিতভাবেই ধরে নিয়েছিলেন ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব বেশ ভালভাবেই উতরে চূড়ান্ত পর্বে নাম লেখাবে দলটি। কিন্তু বাছাইপর্বে টানা তিন ম্যাচ হেরে এখন বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন একেবারেই ফিকে হয়ে গেছে তাদের। এমনকি ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে তারা হংকংয়ের কাছে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে হেরে গেছে ৩০ রানে। তবে বাছাইয়ের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে ভরাডুবি ঘটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ টানা দুই ম্যাচ জিতে বেশ ভাল অবস্থানে আছে ‘এ’ গ্রুপে। তারা চোখ রাঙানো পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়েছে ৬ উইকেটে। এবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে মূলত মর্যাদা ও সম্মান রক্ষার লড়াই ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কারণ, এর আগে বিশ্বকাপ খেলার জন্য কখনোই পরীক্ষা দিতে হয়নি তাদের। সেই স্নায়ুচাপের জন্যই হয়তো বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি ম্যাচে দুর্দম্য আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে হেরে গিয়েছিল তারা। কিন্তু বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রতিযোগিতা শুরুর পর থেকেই নিজেদের মেলে ধরেছে ভিভ-লয়েড-লারার দল। প্রথম ম্যাচে তারা আরব আমিরাতকে ৬০ রানে হারিয়ে দেয়ার পর বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে পরাজিত করে ৬ উইকেটে। প্রথম ব্যাট করে পাপুয়া নিউগিনি ৪২.৪ ওভারে গুটিয়ে গিয়েছিল ২০০ রানে। আসাদ ভালা ৫৭, টনি উরা ৩৭, মাহুরু দাই ৩৫ ও নরম্যান ভানুয়া ৩৫ রান করেন। তাদের রান হয়তো আরও হতে পারত। কিন্তু কার্লোস ব্রেথওয়েটের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং নৈপুণ্য দেখিয়ে তুলে নেয়া ২৭ রানে ৫ উইকেটে সেটা হয়নি। জবাবে অন্যতম ওপেনার ক্রিস গেইলকে ছাড়াই নামা ক্যারিবীয়রা বেশ চাপে পড়েছিল ৮২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে। তবে অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার ১০১ বলে ৯ চার, ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৯৯ রানের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস উপহার দেন। সঙ্গে অপরাজিত ছিলেন শাই হোপ ১১৫ বলে ৪৯ রানে। শেষ পর্যন্ত ৪৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান তুলে টানা দ্বিতীয় জয় পায় ক্যারিবীয়রা। টানা দুই ম্যাচ জিতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে প্রায় নিশ্চিতই করে ফেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সুপার সিক্স পর্ব। তবে দুই ম্যাচ বাকি থাকা হল্যান্ড সব ম্যাচ জিতলে তাদের পয়েন্টও ৪ হবে। সেক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আরব আমিরাত ও হল্যান্ডের পয়েন্ট সমান ৪ হলে একটি দল ছিটকে যাবে। তবে সবচেয়ে বড় বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে আফগানিস্তান। দলটি নিশ্চিতভাবে বিশ্বকাপ খেলবে এমনটাই মনে হচ্ছিল। কিন্তু প্রথম ম্যাচে তারা স্কটল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটে, দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুইয়ের কাছে ২ রানে হেরে বিপাকে পরে। এবার তাদের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হওয়ার পথে দুর্বলতর হংকংয়ের কাছে ৩০ রানের পরাজয়ে। হংকং আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে তোলে ২৪১ রান। অংশুমান রাঠ সর্বোচ্চ ৬৫ রান করেন ৯০ বলে ৬ চার, ১ ছয়ে। আফগানদের পক্ষে মুজিব উর রেহমান ও মোহাম্মদ নবি ৩টি করে উইকেট নেন। বৃষ্টির কারণে ৪৬ ওভারে আফগানদের টার্গেট দেয়া হয় ২২৬ রানের। কিন্তু ৯ উইকেটে ১৯৫ রান তুলতে সক্ষম হয় তারা। ৭৩ রানে ৪ উইকেট হারানো আফগানদের জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন নবি ৩৮, নাজিবুল্লাহ জাদরান ৩২ ও দৌলত জাদরানের ৩০ বলে ৫ চারে করা অপরাজিত ৪০। শেষ পর্যন্ত পারেনি তারা এহসান খানের ৩৩ রানে দখল করা ৪ উইকেটের কারণে। এ পরাজয়ের ফলে এখন হংকংয়ের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে আফগানদের। দুই ম্যাচ বাকি থাকা দলটির ফলাফলের ওপর। আফগানিস্তান ৩ ম্যাচে কোন পয়েন্ট পায়নি। ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে স্কটল্যান্ড। ৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে জিম্বাবুইয়ে। হংকংয়ের পয়েন্ট ২। তারা যদি এক ম্যাচ হারে, কিন্তু আরেক ম্যাচ জিতে যায় তাহলে আফগানিস্তান ও নেপাল দুই দলই বাদ পড়বে। তবে হংকং দুই ম্যাচেই হারলে এবং আফগানরা এক ম্যাচ জিতলে ও নেপাল দুই ম্যাচে একটির বেশি জয় না পেলে এ তিন দলের পয়েন্ট সমান ২ হবে। তখন নেট রানরেটের হিসেবে সুপার সিক্সে ওঠার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকবে আফগানিস্তানের।
×