ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতিবাজদের বিচার হবেই

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

দুর্নীতিবাজদের বিচার হবেই

এতিমদের টাকা আত্মসাতকারী খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পরও তার গুণকীর্তন ও মহিমা প্রচারের মিশনে নেমেছে কিছু জ্ঞানপাপী। এটা তাদের অনুধাবন করা উচিত ছিল যে, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। যারা জঙ্গীবাদে দীক্ষিত, সমর্থক এবং সুযোগ-সন্ধানী প্রতিক্রিয়াশীল, তারা ভাবছে অন্যায় করে পার পেয়ে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশে আর সেটি সম্ভব নয়। এ দেশে দুর্নীতিবাজরা যত ক্ষমতাধরই হোক না কেন, একে একে তাদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার। সম্প্রতি রোমে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি স্পষ্টভাবে আবারও দুর্নীতিবাজ এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিচার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িতদের বিচার হতেই হবে। যারা দুর্নীতি-সন্ত্রাস করবে এবং জঙ্গীবাদে জড়াবে, তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। দেশের শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এটা প্রয়োজন। আর আমরা দেশে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। আমরা দেশকে উন্নত এবং জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চাই। আর এটা তখনই সম্ভব হবে যখন আমরা দুর্নীতি, জঙ্গীবাদ, স্বজনপ্রীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অপসারণ করতে পারব। ঐ ভাষণে শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতার কথা তুলে ধরেন। সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোর কথা মানুষ ভুলে যায়নি। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে নির্বাচন প্রতিরোধ এবং সরকার পতনের নামে বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ২০১৩ সালে ঠিক একইভাবে তারা সন্ত্রাসী কর্মকা- শুরু করে দেয়। তারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে। প্রায় তিন হাজারের ওপরে মানুষকে তারা আগুন দিয়ে ঝলসে দিয়েছে। ওই তিন বছরে প্রায় পঁাঁচ শ’র কাছাকাছি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। পুলিশ, বিজিবি, সেনাসদস্যকেও পুড়িয়ে মারা হয়েছে। কত অন্যায় তারা করেছে একটু চিন্তা করতে গেলে শিউরে উঠতে হয়। সারা বাংলাদেশে একই ধরনের তা-ব চালিয়েছে তারা। এ কথা সবারই জানা যে, খালেদা জিয়ার দুই ছেলে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। তাদের পাচারকৃত টাকা বর্তমান সরকার ফেরত এনেছিল। তারেকের বিরুদ্ধে এফবিআই আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে। এ ছাড়াও খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন। পাশাপাশি তার দুই ছেলেও কালো টাকা সাদা করেছেন। মানুষ বিস্মিত যে, এত টাকা আসল কোথা থেকে? দেশটাকে দুর্নীতির আখড়া করে দিয়েছিল তারা। পুরনো কথা অনেক সময়ই মানুষ ভুলে যায়। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পর পর ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, এ বিষয়টি এখন একবারও উচ্চারিত হয় না কোথাও। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে যথার্থভাবে বিএনপি-জামায়াত জোটের সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের কঠোর সমালোচনা করেন। তার এ কথায় এতটুকু দ্বিমত পোষণের অবকাশ নেই যে, বিএনপি জনগণের জন্য কিছুই করেনি, শুধু ক্ষমতা কুক্ষিগত করা ছাড়া। দেশের মানুষ এখন আশার আলো দেখছে। বিএনপি নেত্রীর মতো সাবেক প্রধানমন্ত্রী যখন দুর্নীতি করে ছাড় পাননি, সেক্ষেত্রে আর কোন রাঘব বোয়ালকে নিয়ে সামান্যতম সংশয়ের অবকাশ নেই। একে একে সব দুর্নীতিবাজই আইনের শিকলে বাঁধা পড়বে। বিলাসী আয়েশি জীবন নয়, তাদের প্রাপ্য কণ্টকাকীর্ণ শয্যা, সে কথা বলাই বাহুল্য।
×