ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফারমার্স ব্যাংকের তারল্য সঙ্কটের নেপথ্যে

কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ঋণ দিয়েছেন শাখা ব্যবস্থাপকরা

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ঋণ দিয়েছেন শাখা ব্যবস্থাপকরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ফারমার্স ব্যাংকের তারল্য সঙ্কটের নেপথ্যে ব্যাংকটির উচ্চপদস্থ কিছু কর্মকর্তা ও শাখা ব্যবস্থাপকদের বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে অন্যতম ব্যাংকটির মাওনা শাখা প্রধান শেখ কামরুল হোসেন ও বসুন্ধরা শাখার জেষ্ঠ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব আহমেদ। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে লিখিত অভিযোগ করে এসব তথ্য জানিয়েছেন ব্যাংকটির ভুক্তভোগী কিছু গ্রাহক। অভিযোগে দেখা যায়, ব্যাংকটির মাওনা শাখা ব্যবস্থাপক শেখ কামরুল হোসেন রীতিমতো ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন সময় নিয়ম বর্হিভূত বিশাল অঙ্কের ঋণ দিয়েছেন। পে-অর্ডারের মাধ্যমে বেশকিছু গ্রাহকের ঋণ সীমা কমিয়ে দিয়ে সেই অর্থ নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যবহার করেছেন। এতে দেখা যায়, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই মাওনা শাখা থেকে প্রায় ৪১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ হয়েছে। এতে শুধুমাত্র পে-অর্ডারের মাধ্যমেই পাঁচ কোটি ১৭ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা আতœসাত করেছেন শাখা প্রধান কামরুল হোসেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে মর্টগেজ পাশ হওয়ার পূর্বেই সম্পূর্ণ অনৈতিক ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে কিছু গ্রাহকের ঋণ সন্দেহজনকভাবেই পাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্লাবন এগ্রো, নাজমুল আলম ব্রিকস, এন এন এগ্রো ট্রেড, নিউ ফ্যামিলি নিডস, রানা অটো ব্রিকস, ইমতিয়াজ আহমেদ শাসুল হুদা, সেলিম অটো ব্রিকস লিঃ, দরবার কেমিক্যাল কোঃ, ইসলাম ব্রাদার্স, মা এন্টারপ্রাইজ ব্রিকস প্রাঃ লিঃ, মিল ট্রেডিং কর্পোরেশন, ডলফিন ট্রেড ইন্টাঃ, শানিমুন ইলেকট্রনিক্স, গোমতী ঔষধালয়, তৃণমূল মৎস্য খামার, সরকার কর্পোরেশন, ভা-ারি পোল্ট্রি ফার্ম, মীরা মৎস্য খামার, সামিয়া মৎস্য এ্যান্ড ডেইরি ফার্ম, ফ্রেন্ডস অটোজ লিঃ প্রভৃতি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ঋণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে। এ ধরনের অনিয়মের ফলে ব্যাংকটির ঋণ খেলাপী গ্রাহকের তালিকা বড় হতে থাকে। এছাড়া ব্যাংকটির বসুন্ধরা শাখার জেষ্ঠ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব আহমেদও একই ধরনের অনিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন বলেন অভিযোগে উঠে এসেছে। মাওনা শাখার কামরুল ‘গোমতী ঔষাধালয়’ নামক একটি অখ্যাত প্রতিষ্ঠানকে নিয়মবর্হিভূত যে ঋণ প্রদান করেছে তা বসুন্ধরা শাখার জেষ্ঠ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব আহমেদের যোগসাজশেই। মাহবুব আহমেদ ব্যক্তিগতভাবে ৩টি বিলাশবহুল গাড়ির মালিক এবং ‘নকশি’ নামক একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ডের উদ্যোক্তা; যেটির ধানমন্ডি, মিরপুর, পুলিশ মার্কেট, গুলশানসহ রাজধানীতে বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে বলে জানা গেছে। ‘মেসার্স গোমতী ঔষধালয়’ নামক একটি অখ্যাত প্রতিষ্ঠান ১৭ কোটি টাকা ঋণ দিতে সহায়তা করেন মাহবুব। ওই প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদানের কারণে গত বছরের নবেম্বরে মাহবুবকে ফারমার্স ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কারণ দর্শানোর নোটিস প্রদান করে।
×