ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বংশীবাদক রাজা আর নেই

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বংশীবাদক রাজা আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একুশে গ্রন্থমেলা, ক্রিকেটের যেকোনো বড় আসর কিংবা বাণিজ্য মেলা, রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে বাংলার ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলতেন ‘বংশীবাদক রাজা’ নামে পরিচিত মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলার মতো নবাবী কাপড় পরে চমৎকার সুরে মন মাতাতেন তিনি। ঢাকায় বসবাসকারী খুব কম লোকই আছেন যাদের নজর কাড়েননি এই লোকটি। চির রঙিন এই লোকটিকে আর সুরের মূর্ছনা ছড়াতে দেখতে পাওয়া যাবে না। না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে একটার দিকে মিরপুরের পল্লবীর আদর্শনগরের বাস ভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মুক্তিযোদ্ধা। কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার ঠোটাপাড়া গ্রামের জন্ম নেয়া এই বংশী বাদকের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। স্ত্রী, দুই ছেলে, বড় ছেলের স্ত্রী ও এক সন্তানসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। শুক্রবার বাদ জুম্মা পল্লবীর বটতলা বায়তুর রহমত জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে কালশী কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। বিখ্যাত বংশী বাদক আব্দুর রহমানের কাছ থেকে বাঁশি বাজানো শিখেছিলেন আলাউদ্দিন। তার বড় ছেলে জুয়েল মোহাম্মদ জানান, ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার পর দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জটিল রোগ হওয়া প্রায় দেড় মাস আগে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে সাহায্যের জন্য আবেদন করা হয়। ওই আবেদনটি গ্রহণ করার পর বিসিবির পক্ষ থেকে একটি ¯িপস দেয়া হলেও আজও পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি। জুয়েল বলেন, আমার বাবা ১৯৭১ সালে ৮ নম্বর সেক্টরে আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেটও পাননি। ছেলের অভিযোগ, সুরের মাধ্যমে ক্রিকেটের গ্যালারির দর্শকদের থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষকে আনন্দ দিতে কোনো দিনও কৃপণতা দেখাননি বাবা। দেশের মানুষকে আনন্দ দিতে রাজার পোশাক পরে এক অনুষ্ঠান শেষ করে আরেক অনুষ্ঠানে চলে যেতেন বিনা আমন্ত্রণেই। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ শয্যাশায়ী থাকলেও বাবার খোঁজ নেয় নি কেউই।
×