ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাশিয়া বিশ্বকাপের পর বিদায়ী ম্যাচ খেলবেন ২০০২ বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল তারকা

অপূর্ণতা নিয়ে অবসরের ঘোষণা রোনাল্ডিনহোর

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮

অপূর্ণতা নিয়ে অবসরের ঘোষণা রোনাল্ডিনহোর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাদুকর বললেও কম বলা হবে। বিশ্ব ফুটবলে রোনাল্ডিনহো ছিলেন এমনই একজন প্লেমেকার। তার পায়ের জাদুতে আচ্ছন্ন থেকেছে গোটা বিশ্ব। ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন, ক্লাব বার্সিলোনা, এসি মিলানের হয়েও মাঠ মাতিয়েছেন। ২০০২ বিশ্বকাপ জয়ের পর ২০০৬ বিশ্বকাপে তার দিকেই ছিল স্পটলাইট। কিন্তু জার্মান বিশ্বকাপে খেই হারিয়ে ফেলেন রোনি। পথ হারানোরও সেই শুরু। এরপর ব্রাজিল জাতীয় দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। কোন ক্লাবেও সেভাবে থিতু হতে পারেননি। যে কারণে ২০১৩ সালে ব্রাজিল জাতীয় দল থেকে অবসর নেন। এরপর ক্লাব ফুটবল চালিয়ে গেলেও নানা কারণে সফল হতে পারেননি। যে কারণে এবার সব ধরনের ফুটবল থেকেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন রোনাল্ডিনহো। মঙ্গলবার রাতে আক্ষেপ আর অপূর্ণতা নিয়েই প্রিয় ফুটবলকে বিদায় বলেছেন এ্যাটাকিং এই মিডফিল্ডার। রোনাল্ডিনহোর ভাই ও এজেন্ট রবার্টো বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সে (রোনাল্ডিনহো) থেমে গেছে। এখানেই শেষ। রাশিয়া বিশ্বকাপের পর হয়তো তার বিদায়ী ম্যাচ আয়োজন করা হবে। আগামী আগস্টে এটা বড় ও সুন্দর কিছুই হবে। তার এজেন্ট আরও জানান, আমরা ব্রাজিল, ইউরোপ ও এশিয়ায় বিভিন্ন ইভেন্ট করব। অবশ্যই আমরা ব্রাজিল দলের সঙ্গেও কিছু করব। খুব কম সংখ্যক ফুটবলারই আছেন যাদের ভাগ্যে একইসঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, কোপা লিবারটেডোরস ও বিশ্বকাপের শিরোপা হাতে নেয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। রোনাল্ডিনহো তাদের মধ্যে অন্যতম। ২০১৫ সাল থেকে কোন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেননি বার্সিলোনা ও এসি মিলানের সাবেক এই তারকা। ব্রাজিলের হয়ে ৯৭ ম্যাচ খেলে ৩৩ গোল করেছেন। ২০০২ সালের বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল দলের সদস্য ২০০৬ সালে বার্সিলোনার হয়ে জেতেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। ২০০৫ সালে পান ব্যালন ডি’অর পুরস্কার। রোনি বার্সিলোনার হয়ে খেলেছেন ১৪৭ ম্যাচ। কাতালান ক্লাবটির হয়ে নামের পাশে যোগ করেছেন ৭০ গোল। এসি মিলানের হয়ে ৭৬ ম্যাচ খেলে বল জালে জড়ান ২০ বার। ব্রাজিলে গ্রেমিওর হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা রোনালিন্ডহো ২০০১ সালে পাড়ি জমান ফরাসী ক্লাব পিএসজিতে। এরপর ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা কাটান বার্সিলানায়। ন্যূক্যাম্পে পাঁচ বছরে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের একটি শিরোপা ছাড়াও জেতেন লা লিগার দুটি শিরোপা। এরপর এসি মিলানে যোগ দিয়ে ২০১০-১১ মৌসুমের ইতালিয়ান সিরি এ জেতেন এই প্লেমেকার। ২০১১ সালে ফ্লামেঙ্গোতে খেলতে ব্রাজিলে ফেরেন। এরপর এ্যাটলেটিকো মিনেইরো, মেক্সিকোর কেরেতারা হয়ে খেলেন ফ্লুমিনেন্সেতে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি ছাড়ার পর প্রতিযোগিতামূলক কোন ম্যাচে দেখা যায়নি তাকে। তারকা এই ফুটবলার ২০০২ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেন অবিস্মরণীয় গোল। ব্রাজিল পিছিয়ে পড়ার পর প্রায় মাঝমাঠ থেকে তার করা ফ্রিকিক থেকে গোলেই ম্যাচে সমতা ফেরায়। এরপর জয় দিয়ে সেমিফাইনাল ও পরের পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ব্রাজিল। রোনির ফ্রিকিক থেকে ওই গোলটি বিশ্বকাপ তথা ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা গোল হিসেবে বিবেচিত।
×