ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বই পড়ুন আড্ডা দিন

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

বই পড়ুন আড্ডা দিন

তানভীর আহমেদ ॥ সবকিছুরই যত্ন নিতে হয়, নচেৎ ওই যত্নহীন জিনিস অকেজো হয়ে যায়। ঠিক তেমনি মনের যে যতœ নেয় না, সে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। তার মন খারাপ থাকে, অনেক সময় বিষণœতায় ভোগে। মনের যত্ন নেয়ার জন্য সবার আগে প্রয়োজন- Me time : ‘me time’ মানে হচ্ছে নিজেকে সময় দেয়া। আমরা সাধারণত নিজেকে সময় দিতে চাই না। আমার সময় দেয় আমাদের কাজ কে। কিন্তু নিজেকে সময় দেয়া অত্যন্ত জরুরী। আমরা নিজেকে সময় না দিতে পারলে মনের যত্নর ঘাটতি হবে। যার ফলে আমাদের মন খারাপ হয়ে যাবে। প্রতিদিন দশ মিনিট হলেও নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে। -‘আজকে কি করসি, কাল কি করব, যা করেছি তার রেজাল্ট কি হতে পারে?’ এসব একটু চিন্তা করা। আর এভাবে নিজেকে সময় দিলে আমাদের মন ভাল থাকবে। কার্যকরী সিদ্ধান্ত : আপনার কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ হয় সেজন্য আপনাকে কার্যকরী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কেননা কাজের ফলাফল নির্ভর করে সিদ্ধান্তের ওপর। সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে না নেয়া হলে কাজের পর ফলাফল খারাপ হবে। আর এ জন্য মনও খারাপ হবে। ভাল করে ভেবেচিন্তে বা কার্যকরী সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করলে কাজে সফলতা আসে। যদি বিফল হয়, তাহলে মন একটা ভাল যুক্তি খুঁজে পায়। সেজন্য স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ হয় না, মন ভাল থাকে। তাই মন ভাল রাখতে হলে কার্যকরী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জীবনের মুক্তোদানা : আমরা অনেক কিছু জানি অনেক কিছু দেখি। কিন্তু আমাদের নিজের ভেতরে যে অপার সম্ভাবনা আসে তা আমরা জানি না। আর এই ওপর সম্ভাবনা হচ্ছে জীবনের মুক্তোদানা। আমরা যদি ভাল থাকতে চাই তাহলে আমাকে জানতে হবে আমার ভেতরের সম্ভাবনা কে, আমার গুণটা কে। দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা আমাদের জীবনের পিয়ারলেসগুলোকে চিনতে পারি না। আমরা মিথ্যার পেছনে দৌড়ায়। আমাদের মন ভাল রাখতে হলে আমার সত্তাকে, আমার সেই লুকিয়ে থাকা গুণ খুঁজে বের করতে হবে। তাহলে আমাদের মন প্রশান্তির হাওয়ায় শীতল হবে। বিকল্প ভাবনা : আমাদের সাধারণ ভাবনার পাশাপাশি বিকল্প ভাবচিন্তা ভাবনা রাখতে হবে। আমরা কখনই একটি চিন্তাধারার ওপর বেসিস করে অথবা পূর্বের ধারণা অনুযায়ী কাজ করব না। সময়ের সঙ্গে আমাদের ধারণাটা পাল্টে দিতে হবে, পরিবেশ পরিস্থিত মেপে ধারণা পরিবর্তন করতে হবে। অর্থাৎ আমাকে বিকল্প ভাবনার প্রসেসকে তৈরি করতে হবে। কখনই আমরা একটি বিষয় দেখে বা খি ত অংশ দেখে সিদ্ধান্ত নিব না, আমাদের আচরণ সেভাবে পরিচালিত করব না। আমরা কারও সম্পর্কে শুধু নেগেটিভ চিন্তা করব না, বিকল্প একটা পজিটিভ চিন্তাও করব। তাহলে দেখব কারও সঙ্গে কোন ঝামেলা হবে না। যার ফলে মনও খারাপ হবে না। টিমওয়ার্ক : আমরা একা কোন কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পারি না। কোন না কোনভাবে আমাদের কাজগুলো দলগতভাবে হয়ে যায়। আমি-আপনি যদি খেয়াল করি তাহলে দেখব তা অফিসের মধ্যে বিদ্যমান, এমনকি পরিবারের মধ্যেও। যিনি অফিসের চা বানানো থেকে শুরু করে বড় সিদ্ধান্ত পর্যন্ত একাই করে থাকেন, তার পক্ষে মনের ওপর যে চাপ পড়বে তা মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে যায়। এ চাপ মুক্ত থাকতে হলে কাজের জায়গাগুলো ভাগ করে দিতে হবে। এটি যেমন কর্মক্ষেত্রে ও তেমনি আমাদের পারিবারিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে। বাসাতেও সবাই কাজ ভাগাভাগি করে করলে অর্থাৎ টিমওয়ার্ক করলে কারও মনের ওপর চাপ পড়বে না। ফলে চাপমুক্ত ও মন ভাল থাকবে। পরিবার ও বন্ধু : আমাদের কাজ থাকবে, পড়াশোনা, ক্যারিয়ার ইত্যাদি থাকবে। এতকিছু পর যদি আমরা ভাল থাকতে চাই তাহলে পরিবার ও বন্ধুদেরকে সময় দিতে হবে। কারণ পরিবার ও বন্ধুরা আমাদের মানসিক চাপ কমায় এবং আমাদের ভাল থাকতে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে। এদের সঙ্গে আমাদের মনের সব কথা শেয়ার করে মানসিক চাপ কমানো সম্ভব। সুতরাং এদের বাদ দিয়ে শুধু কাজের পেছনে গেলে আমাদের মনের চাপ বাড়বে, মন খারাপ হয়ে যাবে এবং আমরা বিষণœতায় পরে যাব। এর কারণে আমাদের জীবনটার অর্ডার বলে কিছু থাকবে না। আমরা তাহলে মানসিক রোগী হয়ে যাব। মডেল : অজয়, মাহা ও বিশ্ব ছবি : স্বাধীন মজুমদার
×