ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর হুঁশিয়ারি

আরও ব্যবস্থা নেয়া হবে

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ৭ জানুয়ারি ২০১৮

আরও ব্যবস্থা নেয়া হবে

যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে শনিবার এই মর্মে সতর্ক করে দিয়েছে যে, দেশটি যদি তালেবান জঙ্গী গোষ্ঠী এবং হাক্কানি নেট ওয়ার্কের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের সব পথই খোলা রেখেছে। -খবর পিটিআই। পাকিস্তানের আশ্রয়পুষ্ট, সন্ত্রাসী দলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার নিরাপত্তা সাহায্য স্থগিত করার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করা হলো। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইংরেজী নববর্ষ উপলক্ষে এক টুইট বার্তায় পাকিস্তানকে এই মর্মে অভিযুক্ত করেন যে, বিগত ১৫ বছরে দেশটিকে (পাকিস্তান) ৩৩ বিলিয়ন ডলারের মতো সাহায্য দেয়া হলেও বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা ও প্রতারণা ছাড়া কিছু পায়নি। তারা নিজ ভূখ-ে সন্ত্রাসীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তুলেছে। ট্রাম্পের বক্তব্য পাকিস্তানীদের মধ্যে প্রচ- ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং ইসলামাবাদে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিবাদে পাকিস্তান তার ক্ষোভ প্রকাশ করে। এর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সামরিক সাহায্য স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, পাকিস্তানকে আর কী কী উপায়ে বাগে আনা যায় তা নিয়ে পেন্টাগন , হোয়াইট হাউস প্রশাসন ও মার্কিন কংগ্রেসে গোপনে প্রকাশ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তান যাতে তালেবান ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হয়, সে জন্য আমরা নিরাপত্তা সাহায্য স্থগিত করা ছাড়াও আর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবছি। কারও এ বিষয়ে সন্দেহ থাকা উচিত নয় যে, তালেবান জঙ্গীদের হুমকি মোকাবেলা করতে যুক্তরাষ্ট্র সক্ষম নয়, বরং এটি সমাধানের লক্ষ্যে সব ধরনের পদক্ষেপের কথাই ভাবা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু নীতি নির্ধারক হোয়াইট হাউসকে পাকিস্তানকে প্রদত্ত ন্যাটো জোট বহির্ভূত বিশেষ সুবিধা বা মর্যাদা প্রত্যাহারের পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়াও আইএমএফ ও জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এছাড়া পেন্টাগনে কর্মরত বেশ কয়েকজন জেনারেল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একক ব্যবস্থা গ্রহণের আভাস দিয়েছেন। তবে মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে কী ধরনের ব্যবস্থা নেবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন জবাব দিতে এই কর্মকর্তা বিরত থাকেন। পর্যবেক্ষক মহলের মতে ট্রাম্পের আফগান নীতি সফল করার লক্ষ্যে মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানের প্রতি আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হয়েছে। প্রশাসনের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আফগানিস্তানে নিয়োজিত মার্কিন বাহিনী ও তাদের অভিযান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পাকিস্তানে আশ্রয়প্রাপ্ত তালেবান ও জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর সন্ত্রাসী তৎপরতার দরুণ। তাই আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এই অঞ্চলের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে পাকিস্তানকে তার অভ্যন্তরস্থ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে। যতদিন না এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, ততদিন এই সমস্যা দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন স্বার্থসহ সকলের স্বার্থের জন্যই ক্ষতিকর হবে। পাকিস্তানও এই ক্ষতিকর প্রক্রিয়ার আওতাবহির্ভূত থাকবে না। এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জিম ম্যাটিস বলেছেন, পাকিস্তান যদি তার ভূখ-ে থাকা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে তবে স্থগিত নিরাপত্তা সাহায্য পুনরায় অবমুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, এখনও যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজে জড়িত; তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে রাজি হননি।
×