প্রিয় রোকোনালী
মাকিদ হায়দার
পৌষ মাস আসিলেই মাতুল আমার গহ্বরের
লুকাইয়া থাকেন, যেন কেহ তাহাকে
খুঁজিয়া না পান।
বাহাত্তর সাল হইবে পঁচাত্তরের আগস্ট মাসের
দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত
মাতুলের লুকোচুরি খেলার কথা হয়তো
অনেকেই না জানিলেও জানিতাম আমি,
যেহেতু প্রিয় রোকোনালী
আমার মাতুল।
সেই মাতুল পঁচাত্তরের আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে
রাস্তায় নামিয়া,
হুঙ্কার ছাড়িয়া সদম্ভে বলিলেন,
কুকুরের বাচ্চা, গোলামের গোলাম চুক্তিযোদ্ধাদের
এইবার দেখিয়া লইবো,
আর আমি দেখতে না পারি যদি
দেখিয়া লইবে আমার শ্যালক
আবু ইউসুফ
দুঃখের বিষয় ইউসুফ উর্দু ছাড়া বঙ্গ জননীর হিন্দুদের ভাষা শেখে নাই,
ছোটকাল হইতে করাচী শহরে হইয়াছে মানুষ
যদিও জন্ম সোনার পাকিস্তানের পূর্বদিকে,
এখন আর মাঘ পৌষে আমাকে লুকাইয়া
থাকিতে হইবে না, গহ্বরে, বনে জঙ্গলে।
মাতুল আমার অকুতোভয় বীর সেনানী
একাত্তরে লোহ্য পেয় সবকিছু গলাধকরণ করিয়াছিলেন,
নিয়াজী-রাও ফরমান আলির একই টেবিলে,
চুক্তিযোদ্ধাদের মস্তকসহ, হস্তপদ দেহ।
গতকল্য আমি শপথ গ্রহণ করিয়াছি মাতুলের সহিত,
জিন্না সাহেবের স্বপ্ন পুনরায় আমাদিগকে দেখিতে হইবে।
ইতিমধ্যেই ডুবাইয়াছি মাঝি মাল্লাদের, বুড়িগঙ্গার ঠা-া পানিতে,
মাতুল আমার দীর্ঘজীবী হোক, জিন্দাবাদসহ।
** পিপাভর্তি তেল
গোলাম কিবরিয়া পিনু
ক্ষমা করে দিও
আমি তো ফোটাতে পারিনি নিজেকে!
শেষমেশ ঘানিগাছ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছি
শুধু শ্রম আর শরীরের লোমকূপ দিয়ে
নিঃসৃত হয়েছে জল!
শিকারের অপেক্ষায় থাকিনি কখনো
আমার খুঁটিতে
জোয়ালটা বেঁধে চারদিকে
ঘানি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তেল নিষ্কাশন করে
কোনো এক তেলবাজ পিপাভর্তি করে
নিয়ে গেল তেল!
শীর্ষ সংবাদ: