ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

মার্শিয়া বার্নিকাট

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে একসঙ্গে দাঁড়ান

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে একসঙ্গে দাঁড়ান

এইচ ই মিজ লিওনি মারগারেথা কুলেনারে, বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত এলিসন ব্লেইক, বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত পামপিমন সুয়ানাপোনে, রাষ্ট্রদূত রয়েল থাই দূতাবাস জুলিয়া নিব্লেট, বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার মিকায়েল হেমনিতি উইনথার, বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন, বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত রেনে হোলেসটাইন, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত শারলোটা স্লইটার, বাংলাদেশে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত রেনশে টিয়েরিনক, বাংলাদেশে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মিয়া সেপো, বাংলাদেশে ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ইওরি কাতো, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) শোকো ইশিকাওয়া, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইউএন উইমেন বাংলাদেশ ইয়ানিনা জারুজেলস্কি, মিশন প্রধান যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা (ইউএসএআইডি) ক্রিস্টা রাডার প্রতিনিধি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী (ডব্লিউএফপি) আমরা একত্রিত হয়ে যেসব নারী সহিংসতার শিকার হয়েছেন তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি; আমরা সেই সব নারী, মেয়ে ও বন্ধুদের পাশে দাঁড়াচ্ছি যারা সাহসের সঙ্গে হয়রানি, ধর্ষণ ও পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে এবং আমরা যাদের সোচ্চার প্রতিবাদের সুযোগ নেই, যারা লজ্জিত বোধ করছে এবং বাকি যারা নীরবে থাকতে বাধ্য হচ্ছে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। আমরা সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি, বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বকে, নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে একত্রে দাঁড়াতে। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে দাঁড়িয়েছি। নারীর প্রতি সহিংসতার হার বাংলাদেশে অনেক বেশি; কিন্তু এটা এমন একটা বিষয় যা আমাদের নিজেদের দেশ এবং সারা বিশ্বের সম্প্রদায়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা এক হয়ে বলতে চাই যে, বাংলাদেশে শুধু ২০১৭ সালেই ৬০০-এর বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ৬০০ অনেক বড় একটি সংখ্যা। আমরা আলোকপাত করতে চাই, ৭০ শতাংশ সহিংসতার ঘটনার ওপর কখনও রিপোর্ট হয় না। যে নারী এবং মেয়েরা উপেক্ষিত, নিশ্চুপ, হুমকিপ্রাপ্ত অথবা লজ্জিত তাদের আমরা শুনছি এবং দেখছি। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরকে আহ্বান জানাচ্ছি বিচার ব্যবস্থাকে আরও সাড়াদায়ক এবং ভুক্তভোগীদের জন্য আরও সমর্থনযোগ্য করতে। আমরা একত্র হয়ে এই দাবি জানাই যে, বাংলাদেশের সব স্কুল হয়রানিমুক্ত হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ৭৬ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হয় যাদের একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস ও শ্রেণীকক্ষ প্রাপ্য। আমরা আমাদের তৃতীয় লিঙ্গের বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে দাঁড়াচ্ছি যারা তাদের পরিবার দ্বারা অবহেলিত এবং গৃহহীন অবস্থায় রয়েছে, বৈষম্য এবং সহিংসতার শিকার হচ্ছে। আপনারা জেনে রাখুন যে, আপনারা সম্মানিত, প্রশংসিত ও ভালবাসার যোগ্য। নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা একটি অপরাধ। এটা নৈতিকতা, আইন ও ধর্মীয় মানদ- লঙ্ঘন করে। এটা আমাদের যুক্তি এবং চেতনাকে আঘাত করে। যেহেতু নারীর প্রতি সহিংসতা অসহনীয়, আমরা সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ১৬ দিনের এই কর্মসূচীতে আমাদের সাথে যোগ দিন। এই কর্মসূচী প্রতি বছর নবেম্বরের ২৫ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬ দিনের জন্য করা হয় এটা মনে করিয়ে দিতে যে, বছরের প্রতিটি দিন নারী এবং মেয়েরা সহিংসতার শিকার হয়। ষোলোদিনের এই কর্মসূচীর সময় মনে রাখা জরুরী যে, প্রতিটি ব্যক্তি নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে একজন সোচ্চার কর্মী হতে পারে, হয়ে উঠতে পারে পরিবর্তনের দূত। সব বাবা, পুত্র, ভাই এবং স্বামী; সব শিক্ষক এবং পরামর্শদাতা; সব ধর্মীয় নেতাদের, পুলিশ কর্মকর্তা, সৈন্য, বিচারক এবং রাজনীতিবিদ; সব কর্মী এবং মিত্র সবাই নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে এক হয়ে দাঁড়ান। আমরা আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি নারী ও মেয়েদের প্রতি যে কোন ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে। আমরা আপনাদের একসঙ্গে এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে স্কুল, বাসা ও কর্মক্ষেত্র সহিংসতামুক্ত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আপনাদের আহ্বান জানাই যে কোন সহিংসতার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করতে। আমরা আপনাদের একত্রিত হতে বলছি এবং আপনাদের পরিচিত সব নারী ও মেয়েকে এই বার্তা পৌঁছে দেবেন যে, আপনারা নারীর প্রতি সহিংসতা সহ্য করবেন না। আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে সবাই পরিবর্তনের দূত হয়ে উঠুন। লেখক : বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত
×