ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ফেডকাপ ফাইনালে মোহামেডান পুলিশের আত্মসমর্পণ

রুমেল খান

প্রকাশিত: ২২:৫১, ৭ মে ২০২৪

ফেডকাপ ফাইনালে মোহামেডান পুলিশের আত্মসমর্পণ

ফেডারেশন কাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে পুলিশকে উড়িয়ে মোহামেডানের খেলোয়াড়দের উল্লাস

ম্যাচে ফেভারিট থেকেও ফায়দা হয়নি। বরং অপ্রত্যাশিতভাবে আগে গোল হজম করে পড়তে হয়েছিল হারের শঙ্কায়। তবে দলটার নাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। কাজেই এত সহজেই হাল ছাড়েনি তারা। করেছে মরণপণ লড়াই, গড়েছে তুমুল প্রতিরোধ। মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফট্যানেন্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে শেষ পর্যন্ত তারাই জিতেছে।

বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবকে হারিয়েছে ২-১ গোলে। এর ফলে গত আসরের মতো এবারও ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনালে উঠল ‘ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট’ খ্যাত মোহামেডান। দ্বিতীয় সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে আগামী মঙ্গলবার। যেখানে মুখোমুখি হবে দুই শক্তিধর দল আবাহনী লিমিটেড ও বসুন্ধরা কিংস।  
চলতি মৌসুমে যতবারই সাক্ষাৎ হয়েছে, ততবারই মোহামেডানকে ভীষণ বেগ দিয়েছে সার্ভিসেস সংস্থা পুলিশ। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে মোহামেডানের পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। মঙ্গলবার ফেডকাপের সেমিফাইনালেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। মোহামেডানের বিপক্ষে দারুণ ফুটবল খেলেছে তারা। একসময় তো মনে হচ্ছিল মোহামেডানকে কাঁদিয়ে তারাই নাম লেখাতে যাচ্ছে ফাইনালে।

কিন্তু অসাধারণ এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ম্যাচটি জিতে জয়ের হাসি হাসে আলফাজ আহমেদের শিষ্যরাই, যে আলফাজের হাত ধরেই গত মৌসুমে দীর্ঘ ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতেছিল মতিঝিলপাড়ার ক্লাব মোহামেডান। উল্লেখ্য, তারা হচ্ছে আবাহনীর পর (১২ বার) ফেডারেশন কাপে দ্বিতীয় সর্বাধিক সফল দল (১১ বার চ্যাম্পিয়ন)।  
ম্যাচের প্রথমার্ধে মোহামেডানের সঙ্গে সমানতালে খেলে তাদেরকে গোলবঞ্চিত করে রাখে পুলিশ। অবশ্য নিজেরাও গোলের সন্ধান পায়নি। গোলশূন্য থেকেই বিরতিতে যায় উভয় দল। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলের খেলার ধরন পাল্টে যায় ধীরে ধীরে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল করে এগিয়ে যায় পুলিশ ফুটবল ক্লাব। ৪৭ মিনিটে ভেনিজুয়েলার ফরোয়ার্ড এডওয়ার্ড মরিল্লোর স্পট কিকে বক্সে বল পেয়ে দারুণ হেডে জালে জড়িয়ে দেন উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার ওকমাতভ (১-০)। 
পিছিয়ে পড়লেও মনোবল মোটেও হারায়নি মোহামেডান। সমতায় ফিরে আসতে একের পর এক আক্রমণ শানায় তারা। ৬৭ মিনিটে বক্সের কয়েক গজ দূরেই ফ্রি কিক পায় মোহামেডান। মোজাফফারভের স্পট কিক চলে যায় বার ঘেঁষে। পরের মিনিটেই (৬৮ মিনিসটে) সমতায় ফেরে মোহামেডান। দলের অধিনায়ক ও মালির ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতের শট ব্লক করেন প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডার।

তবে পুরোপুরি বিপন্মুক্ত করতে পারেননি। বল পেয়ে আরিফ পাঠিয়ে দেন বক্সে থাকা ইমানুয়েল সানডেকে। দর্শনীয় শটে পুলিশ গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ইমানুয়েল (১-১)। 
৭৯ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে ইমানুয়েল সানডের ক্রসে ডান পোস্টের কাছ থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন শাহরিয়ার ইমন (২-১)। মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যেই ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় সাদাকালো শিবির। শেষ পর্যন্ত এই স্কোরলাইনেই ম্যাচ জিতে ফাইনালে ওঠার চিত্তসুখ নিয়ে মাঠ ছাড়ে মোহামেডান। আর লিড নিয়েও ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হওয়ার বেদনা নিয়ে মাঠ ছাড়ে পুলিশ বাহিনী।

×