ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শততম জয়ে নকআউট পর্বে রিয়াল মাদ্রিদ

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

শততম জয়ে নকআউট পর্বে রিয়াল মাদ্রিদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হতাশা কাটিয়ে অবশেষে স্বরূপে ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে অসাধারণ কীর্তিগাথা রচনা করেছে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে স্বাগতিক সাইপ্রাসের ক্লাব এ্যাপোয়েল নিকোশিয়াকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এর ফলে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে প্রথম দল হিসেবে ১০০ ম্যাচ জয়ের গৌরবগাথা রচনা করেছে রিয়াল। সেই সঙ্গে এক ম্যাচ হাতে রেখে নকআউট পর্ব অর্থাৎ শেষ ষোলোও নিশ্চিত হয়েছে জিনেদিন জিদানের দল। গ্রুপের আরেক ম্যাচে টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে ২-১ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। প্রথম লেগে এ্যাপোয়েল নিকোশিয়াকে সহজেই ৩-০ গোলে হারিয়েছিল রিয়াল। সাইপ্রাসের দলটির সঙ্গে দ্বিতীয় লেগেও সহজেই জিতবে এমনটা ধরেই নিয়েছিল সবাই। অবশেষে সেটাই হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে রিয়ালের পারফর্মেন্স খুব একটা ভাল যাচ্ছে না। তাই দুর্বল এ্যাপোয়েলের বিরুদ্ধেও শুরুতে খুব একটা ছন্দে ছিল না তারা। ম্যাচের ২৩ মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় তারা। ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার লুকা মডরিচ লক্ষ্যভেদ করেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের ভুলে বল পেয়ে। এরপরই উজ্জীবিত হয়ে ওঠে রিয়াল। শানাতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। ৩৯ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে রিয়াল, গোলদাতা করিম বেনজামা। ম্যাচের ৪১ মিনিটে রিয়ালের পক্ষে তৃতীয় গোল করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার নাচো ফার্নান্দেজ। কর্নার থেকে আসা বলে রাফায়েল ভারানের আলতো হেড, নাচো বলটি পেয়ে জালে জড়াতে একটুও ভুল করেননি। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে বেনজামা ব্যক্তিগত দ্বিতীয় গোল করেন। রোনাল্ডোর পাসে বল পেয়ে এই ফরাসী স্ট্রাইকার সহজেই প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠান। বিরতির পর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে আরও দুটি গোল আদায় করে নেয় রিয়াল। এই দুটি গোলই আসে রোনাল্ডোর পা থেকে। ৪৯ মিনিটে মার্সেলোর ক্রসে চমৎকার হেডে দলের পক্ষে পঞ্চম এবং ম্যাচে ব্যক্তিগত প্রথম গোলটি করেন তিনি। এ্যাপোয়েলের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেন সি আর সেভেনই। ৫৪ মিনিটে কোনাকুনি শটে আসরে নিজের অষ্টম গোলটি করেন তিনি। ইউরোপের সেরা এই আসরে এটি রোনাল্ডোর ১১৩তম গোল। বাকি সময়ে আরও কয়েকটি সহজ গোলের সুযোগ হাতাছাড়া করে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ‘ই’ গ্রুপে ঘুরে দাঁড়ানোর দারুণ এক গল্প লিখেছে স্পেনের ক্লাব সেভিয়া। লিভারপুলের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত তারা ম্যাচটি ড্র করেছে ৩-৩ গোলে। এই ড্রয়ের ফলে উজ্জ্বল হয়েছে সেভিয়ার নকআউট পর্বের স্বপ্ন। নিজেদের মাঠে ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে সেভিয়া। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে প্রথম গোলটি করেন লিভারপুলের ব্রাজিলিয়ান তারকা রবার্টো ফিরমিনো। ২২ মিনিটে আরও একবার বল জড়ায় সেভিয়ার জালে। এবার গোল করেন লিভারপুলের ফরোয়ার্ড সাডিও মানে। ৩০ মিনিটে লিভারপুল আরও একবার মেতে ওঠে গোল উৎসবে। দলের পক্ষে তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন ফিরমিনো। প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ায় লিভারপুলের জয় হয়তো নিশ্চিত বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সেভিয়া। ৫১ ও ৬০ মিনিটে দুটি গোল শোধ করে দেন উইসাম বেন ইয়েডার। আর শেষ বাঁশি বাজার কয়েক মুহূর্ত আগে নাটকীয়ভাবে আরেকটি গোল করে ম্যাচে ৩-৩ ব্যবধানে সমতা ফেরান গুইডো পিরাজ্জো। ‘জি’ গ্রুপে চমক দেখিয়ে নকআউট পর্বের টিকেট কেটেছে তুরস্কের বেসিকটাস। তুরস্কের ইতিহাসের প্রথম ক্লাব হিসেবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউট পর্বে যাওয়ার রেকর্ড গড়েছে তারা। গ্রুপে পাঁচ ম্যাচ থেকে ১১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউটে জায়গা করে নিয়েছে তারা। ম্যাচে ৩০ মিনিটে এগিয়ে যায় পোর্তো। রিকোর্ডোর পাস থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ফেলিপে। তবে ৪১ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান তারকা টালিসার গোলে সমতায় ফেরে বেসিকটাস। এই স্কোরলাইন ধরে রেখে ইতিহাস গড়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিয়েছে তার্কিশ ক্লাবটি। ‘এফ’ গ্রুপে ফেয়েনর্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে টানা পাঁচ জয়ে নকআউট পর্বে উঠেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ম্যাচের ৮৮ মিনিটে রাহিম স্টারলিংয়ের গোলে জয় পায় পেপ গার্ডিওলার দল। এর ফলে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপপর্বে টানা পাঁচ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছে সিটিজেনরা।
×