ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শীঘ্রই শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হবে

আলোর পথে মীরসরাই বিসিক শিল্পনগরী

প্রকাশিত: ০৪:১১, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

আলোর পথে মীরসরাই বিসিক শিল্পনগরী

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই পৌর এলাকারই উত্তর প্রান্ত ও স্টেশন সড়কে মূল ফটক হয়ে সজ্জিত দৃশ্যমান হয়ে উঠছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে মীরসরাইয়ের বিসিক শিল্পনগরী। শীঘ্রই উক্ত শিল্পনগরীটি শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে হস্তান্তরের ব্যাপারে আলোচনা চলছে। এরপরই শুরু হবে প্লট বরাদ্দ প্রক্রিয়া। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন এর আওতাধীন উক্ত বিসিক প্রকল্প দেশের ৭৫তম প্রকল্পটি গ্রহণের পর থেকে নানা প্রতিবন্ধকতায় প্রকল্পটি উন্নয়ন কার্যক্রম থেমে থাকতে দেখা গেছে কয়েক বছর। অবশেষে কিছু উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়ে দৃশ্যমান আলোর মুখ দেখছে প্রকল্পটি। ইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে বলে জানান, প্রকল্প কর্মকর্তা কৃষ্ণ আচার্য্য। প্রকল্পটিতে শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ২০০৯ সালের দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশে মীরসরাইয়ে উক্ত বিসিক শিল্প নগরী বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। পরবর্তী মীরসরাই পৌরসভার পূর্ব মঘাদিয়া মৌজায় তালবাড়িয়া রেলস্টেশন এলাকায় জায়গা নির্ধারণ করে ২০১০-২০১১ অর্থ বছরে প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে। প্রকল্পের জন্য ১৫.৩২ একর জমির অধিগ্রহণ করে মাটি ভরাট কাজও শুরু করা হয়। প্রথম অবস্থায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। পরে তা বাড়িয়ে ২৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা করা হয়। ২০১৩ সালের শেষ দিকে প্রকল্প কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কৃৃষি জমিতে শিল্পনগরী স্থাপনের বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন মীরসরাইয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য, বর্তমান গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। ফলে থমকে যায় শিল্পনগরীর মাটি ভরাট কাজসহ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ। পরবর্তী ২০১৫ সালের মে মাসে একনেকের বৈঠকে অধিগ্রহণ জমিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং প্রকল্পের জন্য টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন শুরু করলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ৮৮টি শিল্প প্লট তৈরি করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়ার কথা রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রকল্পে প্রবেশের পশ্চিম মুখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর একটি ও প্রকল্পের উত্তর পাশে স্টেশন সড়কে প্রধান গেট করা হয়েছে। প্রকল্পের ভেতরে সড়ক কার্পেটিং ও ড্রেনেজ কাজ শেষ করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে প্লটের সীমানা। প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণ কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। শিল্প কারখানায় বিদ্যুত সরবরাহের জন্য বিদ্যুতের খুঁটি পুঁতার কাজ শেষে টানা হচ্ছে বিদ্যুতের তার। এসময় প্রকল্প এলাকায় ঘুরে যাওয়া স্থানীয় ব্যবসায়ী দাউদ খাঁন বলেন, বিসিক প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হলে কিছু লোকের কর্মসংস্থান হবে। নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। এটি মীরসরাইয়ের উন্নয়নের জন্য একটি ভাল দিক। উক্ত প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বিসিক সম্পর্কে বলেন, এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত, রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার কথা চিন্তা করেই মীরসরাইয়ের তালবাড়িয়া এলাকায় বিসিক শিল্পনগরী তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে এটি সময় মতো বাস্তবায়ন করা যায়নি। দেরিতে হলেও এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে দেখে আমি আনন্দিত। তিনি বলেন এতে মীরসরাইয়ের কয়েক হাজার মানুষ কাজ পাবে অনেক ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা উপকৃত হবে।
×