ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মলয় বিকাশ দেবনাথ

হ্যাংম্যান মুভিতে আল পাচিনো

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

হ্যাংম্যান মুভিতে আল পাচিনো

গডফাদার খ্যাত অভিনেতা আল পাচিনো এ বছরের ২৪ নবেম্বর বক্স অফিসে নিজেকে উপস্থাপন করবেন হ্যাংম্যান মুভিতে। এ সিনেমায় তিনি একজন ডিটেক্টিভের ভূমিকায় অভিনয় করবেন। মাইকেল কেইসি ও চার্লস হাটিংগারের চিত্রনাট্যে জনি মার্টিনের নির্দেশনায় এ্যাকশন, থ্রিল আর সাসপেন্সে নিমজ্জিত হবে গোটা দুনিয়ার দর্শক। একজন সিরিয়াল কিলার যে ছোটদের ভিডিও গেমস হ্যাংম্যান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ক্রাইম করে। সেই কিলারকে খুঁজে বের করা নিয়েই চলতে থাকে কাহিনী। এখন শুধু অপেক্ষার পালা। আল পাচিনো মানেই মাফিয়া, আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ে থাকবে টান টান উত্তেজনা। বিশ্ব চলচ্চিত্র ইতিহাসে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ অভিনেতাদের অন্যতম অভিনেতা ও পরিচালক আল পাচিনো ১৯৪০ সালের ২৫ এপ্রিল নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন। ইতালিয়ান-আমেরিকান বংশোদ্ভূত পাচিনোর পুরো নাম আলফ্রেদো জেমস আল পাচিনো। তার বাবা সালভাতোর পাচিনো ও মা রোজ গেরার্ডি। ১৯ বছর বয়সে অভিনয়ে পড়াশোনা করা শুরু করেন। ব্যাংক স্ট্রিটের হারবার্ট বারগোভ স্টুডিওতে আর্ট ফর্ম নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এখানে পড়াকালীন সময়েই ১৯৬৩ সালে ‘আউটদেয়ার’ শিরোনামের একটি মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে ‘মি নাতালি’ ছবির সুবাদে প্রথম চলচ্চিত্রে উপস্থিতি। তবে ভূমিকাটি ছিল সামান্য একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের। মূল চরিত্র বলতে ১৯৭১ সালের ‘দ্য প্যানিক ইন নিডল পার্ক’। এরপর ১৯৭২ এ মুক্তি পায় সেই বিখ্যাত ছবি গডফাদার। এর পরের বছরেই ১৯৭৩ সালে জেনে হ্যাকমেনের সঙ্গে অভিনীত ‘স্কেয়ারক্রো’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘পাম ডি ওর’ পুরস্কার জিতে নেয়। এ চলচ্চিত্রের জন্য পাচিনো অস্কারে সেরা অভিনেতা ক্যাটাগরির জন্য মনোনীত হন। ১৯৭৪ সালে কপোলার গডফাদার সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। এ চলচ্চিত্রটিও প্রথম সিক্যুয়াল চলচ্চিত্র হিসেবে অস্কার জিতে। আল পাচিনো ৩য় বারের মতো অস্কারের সেরা অভিনেতার জন্য মনোনীত হন। ১৯৭৫ সালে ‘ডগ ডে আফটারনুন’ চলচ্চিত্রের জন্য আল পাচিনো আবারও অস্কারের জন্য মনোনীত হন। ১৯৭৭ সালে ‘ববি ডেয়ারফিল্ড’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব নমিনেশন পান। ১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত স্কারফেস তার অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে এক কিউবান ড্রাগ গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮৫ সালের রিভলিউশন ছিল ব্যবসায়িক ও সমালোচক দ্বারা তিরস্কৃত। তাই চলচ্চিত্র থেকে চার বছরের বিরতি নিয়ে মঞ্চে ফিরে যান। তিনি ওয়ার্কশপ প্রডাকশনের ক্রিস্টাল ক্লিয়ার, ন্যাশনাল এনথামসহ অন্যান্য নাটকে অভিনয় করেন। জোসেফ পাপ আয়োজিত নিউইয়র্কে শেক্সপিয়ার ফেস্টিভ্যালে জুলিয়াস সিজার চরিত্রে অভিনয় করেন। এ সময়ে দ্য লোকাল স্টিগমাটিক নামের একটি নাটকের চলচ্চিত্রায়ন করেন। প্রধান চরিত্রে অভিনীত ৫০ মিনিটের চলচ্চিত্রটি ২০০৬ সাল পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। ১৯৮৯ সালে সি অব লাভ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে পর্দায় ফিরে আসেন। মঞ্চে তার সবচেয়ে সফল নাটক ছিল ডেভিড মামেটের আমেরিকান বাফেলো। ১৯৯০ সালে আল পাচিনো অভিনয় করেন গডফাদার সিরিজের ৩য় চলচ্চিত্রে। নব্বইয়ের দশক আল পাচিনোর শক্তিশালী অভিনয় প্রতিভার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দশক। এ দশকেই তিনি অভিনয় করেন ফ্রাঙ্কি এ্যান্ড জনি (১৯৯১), গ্লেনগ্যারি গ্লেন রস (১৯৯২), স্কেন্ট অব এ্যা উইম্যান (১৯৯২), কার্লিতোস ওয়ে ( ১৯৯৩), হিট (১৯৯৫), ডনি ব্রাস্কো ( ১৯৯৭), দা ডেভিল এ্যাডভোকেট (১৯৯৭) এবং এ্যানী গিভেন সানডে (১৯৯৯) এ মতো আলোচিত চলচ্চিত্রে। ১৯৯১ সালে ডিক ট্রেসিতে অভিনয় করে প্রশংসিত হন পাচিনো। কয়েক বছর পর মার্টিন ব্রেস্টের সেন্ট অব এ ওমেন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অস্কার পুরস্কার লাভ করেন। একই বছরেই গ্লেনগ্যারি গ্লেন রস চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে অস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করেন। একই বছরে দুটি চলচ্চিত্রের জন্য দুটি বিভাগে অস্কার মনোনীত প্রথম অভিনেতা তিনি। তার পর ক্রাইম ড্রামা কারলিটোস ওয়ে, ডনি ব্রাস্কো, একাধিক অস্কার মনোনয়নপ্রাপ্ত দ্য ইনসাইডার ও ইনসমনিয়াতে অভিনয় করেন। ১৯৯৫ সালে মাইকেল মানের হিট চলচ্চিত্রে কেন্দ্র্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০১০ সালে টিভি চলচ্চিত্র ‘ইউ ডোন্ট নো জ্যাক’ এ ড. জ্যাক কেভোরকিয়ান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য এ্যামি এ্যাওয়ার্ডস ও গোল্ডেন গ্লোব এ্যাওয়ার্ডস পান। ২০১১ সালে ‘ওয়ার্ল্ড স্যালোমি’ প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন। ২০১৩ সালে ‘স্যালোমি’ শিরোনামের ২য় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এ বছর হ্যাংম্যান এর পর আগামী ২০১৮ তে আইরিশম্যান নামে আরেকটি সিনেমা রিলিজ হবে।
×