ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেশি ছবি বানানোর পক্ষে আগ্রহী না

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

বেশি ছবি বানানোর পক্ষে আগ্রহী না

‘ছোট পর্দার নির্মাতারা সিনেমা বানাতে পারে না, তারা বানায় বড় নাটক/ টেলিছবি’ এমন মন্তব্য-তীর ছোঁড়ার দিন বুঝি শেষ হয়ে এলো। বাণিজ্যিক ধারার সফল চলচ্চিত্র ‘আয়নাবাজি’ তৈরি করে অভিষেকেই বাজিমাত করেছেন ছোটপর্দার নির্মাতা অমিতাভ রেজা। অভিষেকেই ব্যবসা সফল বিনোদনমূলক চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন এমন নাট্য নির্মাতা রয়েছেন আরও কয়েকজন। ২০১৬ সালে ‘আয়নাবাজি’ দিয়ে দেশ কাঁপিয়েছেন অমিতাভ রেজা। দেশীয় চলচ্চিত্রে ভিন্নামাত্রা যোগ করেছেন এই মানুষটি। ‘আয়নাবাজি’র মাধ্যমেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন, সূচনা করে দিয়েছিলেন এক নবজাগরণের। তারপর একটু লম্বা বিরতিই বলা চলে। ‘আয়নাবাজি’ মুক্তির পর এক বছর পেরিয়ে গেলেও সরাসরি নতুন কোন প্রজেক্টে হাত দেননি এই গুণী নির্মাতা। তবে অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল তাঁর পরবর্তী ছবি হবে ‘রিকশা গার্ল’। সেই ছবি ও সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গে কথা হয় আনন্দ কণ্ঠের সঙ্গে। সাক্ষাতকার নিয়েছেন- রুহুল আমিন ভূঁইয়া আনন্দকণ্ঠ : বর্তমানে ব্যস্ততা কি নিয়ে? অমিতাভ রেজা : নতুন কাজ শুরু হবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। নতুন কিছু বিজ্ঞাপন শুরু“করব তারও কথা চলছে। আনন্দকণ্ঠ : ‘রিকশা গার্ল’ ছবির গল্প সম্পর্কে বলুন? অমিতাভ রেজা : ‘রিকশা গার্ল’ ছবির কাহিনী আবর্তিত হবে তার নারীর কর্মসংস্থানকে কেন্দ্র করে। মুখ্য চরিত্র হলো নাইমা, যে পরিবারকে সাহায্য করার লক্ষ্যে, কিছু বাড়তি আয়ের আশায় নিজেকে পুরুষের ছদ্মবেশে লুকিয়ে অসুস্থ বাবার রিকশা চালাতে শুরু করে। রিকশাটিকে তার বাবা নিজের থেকেও বেশি ভালবাসে। কিন্তু রাস্তায় নেমে সেই রিকশাটিকেই কিছু একটার সঙ্গে ধাক্কা লাগিয়ে নষ্ট করে ফেলে নাইমা। এবার শুরু“হয় দৃঢ়চেতা নাইমার এক নতুন লড়াই, যে করেই হোক রিকশার যা ক্ষতি হয়েছে তা সারাতে হবে। কাহিনীর ব্যাপারে আরও খানিকটা খোলাসা করেছেন পরিচালক স্বয়ং, ‘সে একজন চিত্রশিল্পীও। তাই সে রিকশা পেইন্টিংয়েরও চেষ্টা চালায়। এ ছবির মাধ্যমে আমি ঢাকায় রিকশা পেইন্টিংয়ের যে ঐতিহ্য ছিল, তা তুলে ধরার চেষ্টা করব। রিকশা পেইন্টিংয়ের পেছনে যে প্রাথমিক ধারণাগুলো কাজ করত, তাও উঠে আসবে এ ছবিতে। এবং ছবিতে আমি কিছু এনিমেশনের কাজও যোগ করব, যার ফলে গোটা বিষয়টি আরও বেশি উপভোগ্য হয়ে উঠবে।’ ছবিটি নির্মিত হতে যাচ্ছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের লেখিকা মিতালি পারকিনসের লেখা ‘ইয়ং এডাল্ট’ নামের একটি উপন্যাস অবলম্বনে। ২০০৭ সালে প্রকাশিত উপন্যাসটি নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরির তরফ থেকে নির্বাচিত হয়েছে গত ১০০ বছরের মধ্যে প্রকাশিত সেরা ১০০টি শিশু সাহিত্যের একটি হিসেবে। আর উপন্যাসটি থেকে চলচ্চিত্রের উপযোগী চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন শর্বরী জোহরা আহমেদ। তাঁর একটি বিশেষ পরিচয় রয়েছে। তিনি প্রিয়াঙ্কা চোপড়া অভিনীত যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘কোয়ান্টিকো’র অন্যতম চিত্রনাট্যকার। আনন্দকণ্ঠ : কবে থেকে শুটিং হচ্ছে? অমিতাভ রেজা : আগামী বছর শুরু করব। কোন একটা সিজন দেখে। আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে। রিসার্চ করতে যাব তারপর। আনন্দকণ্ঠ : ছবিতে কে কে অভিনয় করবেন? অমিতাভ রেজা : সিলেক্ট এখনও হয়নি। তা এখনও ঠিক করিনি তা আরও পরে হবে। আনন্দকণ্ঠ : নায়ক নায়িকার ক্ষেত্রে কি কোন চমক থাকছে? অমিতাভ রেজা : চমক কখানোই থাকে না। আমরা দেখব ‘রিকশা গার্ল’ চরিত্রটা করার মতো কে আছে কাকে নিলে ভাল হবে। বিভিন্ন জায়গায় খুজছি, বাংলাদেশে ও দেশের বাইরে। আনন্দকণ্ঠ : ছোটপর্দার ব্যস্ততা প্রসঙ্গে বলুন? অমিতাভ রেজা : ছোটপর্দায় তরুনদের নিয়ে তো সাতটা প্রজক্টের কাজ করলাম অস্তির সময় স্বস্তির গল্প। সামনে ‘রিকশা গার্ল’ করব তার আগে অন্য কিছুতে হাত দেব না। এটা শেষ করে নতুন কিছু পরিকল্পনা করব। আনন্দকণ্ঠ : প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেছেন। সফলতার পরও চলচ্চিত্রে আপনার ব্যস্ততা বাড়েনি । চাহিদা থাকার পরও দ্বিতীয় ছবি হাতে নেওয়ার বেলায় দীর্ঘ বিরতি কেন? অমিতাভ রেজা : কারণ সিনেমাটা একটা অভিসাপের মতো। এমন কখানো করতে চাইনি। সফলভাবে কিছু আসেনি। আমি মনে করি না এটা সফল কিছু। কিছু মানুষ ছবি দেখেছে। এরকম তো মানুষ ছবি দেখেই। আনন্দকণ্ঠ: লগ্নিকারীর সঙ্কটে এমনটি হচ্ছে? অমিতাভ রেজা : তা তে আছেই। তাছাড়া সিনেমার পদ্ধতি ঠিক নেই। অর্থ ঠিক মতো আসেও না। কেউ ঠিক মতো লগ্নি করতেও চায় না। আমি যে ছবি বানাতে চাই তারা সেই ছবির জন্য লগ্নি করতে রাজি হবে না। সব মিলিয়ে বেশি ছবি বানানোর ক্ষেএে আমি আগ্রহী না। আনন্দকণ্ঠ : চলচ্চিত্র নিয়ে বর্তমান সময়ে আপনার ভাবনা কি? অমিতাভ রেজা : খুবই ভাল। বাংলাদেশে তো ভাল ছবি হচ্ছে। সিনেমা হলে মানুষ জন যাচ্ছে। জাতীয় পর্যায় খুব ভালো করছে। আশা করি অনেক ছেলে মেয়েরা সামনে ভাল ছবি বানাবে।
×