ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পজিটিভ থিংকিং কী ভাবে করবেন

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

পজিটিভ থিংকিং কী ভাবে করবেন

আজকাল সবাইকে বলতে শোনা যায় থিংক পজিটিভ। সব কিছুকে পজিটিভলি দেখুন। অথবা দৃষ্টিভঙ্গিকে ইতিবাচক করুন। হাজার বারও যদি আপনি কাউকে বলেন থিংক পজিটিভ তাতে কোন লাভ হবে না কারণ থিংক পজিটিভ করার উপায় বা পথটি কী তা যদি জানা না থাকে তবে কীভাবে থিংক পজিটিভ করবে। যেমন কীভাবে সৎ হতে হয় সবাই জানে (মিথ্যা কথা বলব না, কারও ক্ষতি করব না, অন্যায় করব না ইত্যাদি) কিন্তু ‘কেন সৎ হবে’ বা ‘কেন সৎ থাকব’ এই বিষয়টি যে বুঝেছে বা উপলব্ধি করেছে তার পক্ষেই সৎ থাকা সম্ভব। প্রতিটি মানুষের মনের গভীরে বোঝার ক্ষমতা বা উত্তর থাকে সুতরাং ওই স্তরে না পৌঁছলে উত্তর পাওয়া কঠিন। সুতরাং গভীর উপলব্ধি অর্থাৎ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবা এবং বোঝার চেষ্টা করা। পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে দু’বার ঘটে; একবার চিন্তায় আর একবার বাস্তবে অর্থাৎ একবার ভেতরে অন্যবার বাইরে। মানুষ যা কিছু করে তার আগে সে চিন্তা করে। চিন্তা যেমন হবে কাজ (কর্ম) তেমন হবে। একটি কাজ বার বার করলে তা অভ্যাসে পরিণত হয়। অভ্যাসের সমষ্টি তার চরিত্র এবং চরিত্রই নিয়ে যাবে তার গন্তব্যে। অর্থাৎ একজন মানুষের গন্তব্য সুখের জায়গায় নাকী দুঃখের জায়গায় হবে তা নির্ভর করবে তার চরিত্রের ওপর। চরিত্র নির্ভর করে অভ্যাসের ওপর আর অভ্যাস নির্ভর করে কর্মের ওপর। কর্ম নির্ভর করে চিন্তার ওপর। সুতরাং চিন্তা যেমন হবে বাকি সমস্ত ধাপ তেমনই হবে। সুতরাং জীবনকে সুখ শান্তিময় করতে অর্থাৎ সফল ও সার্থক জীবনের জন্য চিন্তাকে ইতিবাচক করতেই হবে। প্রথমেই প্রশ্ন হলো চড়ংরঃরাব ঞযরহশরহম বলতে কী বোঝায়। ইতিবাচক চিন্তা মানে হলো ‘যে কোন অবস্থায় সঠিক চিন্তা করতে পারা।’ (Positive thinking means right thinking at every moment) যে কোন অবস্থায় বা যে কোন পরিস্থিতিতে সঠিক চিন্তা করতে পারাকেই পজিটিভ থিংকিং বলে। সঠিক চিন্তা বেঠিক নয়। বেঠিক বা ভুল চিন্তা করলে তা পজিটিভ থিংকিং হবে না। এখন প্রশ্ন হলো সঠিক বা জরমযঃ ঞযরহশরহম বলতে কী বোঝায়। সঠিক চিন্তা বলতে বোঝায় ‘যা কিছু ঘটেছে সেই ঘটনাকে ওই ভাবেই দেখা এবং ভাবা।’ (Right thinking means, To see the situation/problems in the same magnitude as it is) অর্থাৎ যা ঘটেছে তা ঘটার মতো করে দেখা অর্থাৎ সোজা ভাবে দেখা, বাঁকাভাবে নয়। বাঁকাভাবে দেখলে চিন্তা বাঁকা হয়ে যাবে। বিষয়টি একদম সোজা যেমন আপনি কোন কিছু সঠিক দেখতে পান তখনই যখন আলো সেই বস্তুর ওপর সোজা হয়ে পড়বে এবং সোজাভাবে আপনার চোখের ভেতর প্রবেশ করবে তখনই তা আপনি দেখবেন। সুতরাং কোন বিষয় বা ঘটনা সোজাভাবে যদি আপনার কাছে উপস্থাপিত না হয় বা সোজাভাবে যদি না দেখেন বা না ভাবেন তবে সিদ্ধান্ত কখনই সঠিক বা জরমযঃ হবে না। সুতরাং যা কিছু হয়েছে বা ঘটেছে তা সেভাবে দেখতে পারা সঠিক চিন্তা করতে পাড়ার পূর্বশর্ত। ‘Positive thinking does not mean what will happen, will be the best, it means whatever will happen will be accurate for me.’ তাহলে বিষয়টি দাঁড়ালো এই, আমরা সব সময়ই ভাল আশা করব, উত্তমটিই আশা করব, যা কিছু হবে ভাল হবে সেরা হবে কিন্তু যদি তা না হয় তবে যা ঘটল তা ওই পরিস্থিতির জন্য অনিবার্য ভাবতে হবে এবং সেটি যদি দুর্ঘটনা বা খারাপ কিছু হয় তবে তার কারণগুলো খুঁজে বের করে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার ব্যবস্থা নেয়া এবং এগিয়ে যেতে হবে পরবর্তী সঠিক সিদ্ধান্তে। যে চিন্তা আমার মনকে অস্থির করে তা পজিটিভ থিংকিং নয়। বরং যে চিন্তা আমার মনকে শান্তি দেয় বা শান্ত করে নতুন কিছু করার উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেয় তাই পজিটিভ থিংকিং। যে চিন্তা হিংসা, বিদ্বেষ, স্বার্থপরতা, আত্মকেন্দ্রিকতা তৈরি করে তা কখনই পজিটিভ থিংকিং নয়। বরং তা শরীর মনকে নেতিবাচক ভাইব্রেশনে আক্রান্ত করে, মন ও শরীরকে বিকৃত করে। পরোপকারিতা, শ্রদ্ধা, সহমর্মিতা, সহযোগিতা, সেবা, অন্যের কল্যাণ কামনা, ভালবাসা সৃষ্টিকারী ভাবনাই হলো পজিটিভ থিংকিং যার ফলাফল সুখ, শান্তি এবং সন্তুষ্টি। ডঃ মোঃ আলমাসুর রহমান কাউন্সিলন, হলিসটিক হেলথ কেয়ার সেন্টার চেয়ারম্যান, প্রোএকটিভ একাডেমি মোবাইল : ০১৭১৬ ৫০০২৩২
×