ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আমিরেরও প্রিয় ব্যাটসম্যান কোহলি

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২১ অক্টোবর ২০১৭

আমিরেরও প্রিয় ব্যাটসম্যান কোহলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মোহাম্মদ আমির যখন প্রথম পাকিস্তান জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পান কি বাজে পরিস্থিতিরই না সৃষ্টি হয়েছিল। মোহাম্মদ হাফিজ, আজহার আলিসহ একাধিক সিনিয়র ও তারকা ক্রিকেটার তাকে অচ্ছুত ঘোষণা করেছিলেন। এক পর্যায়ে হাউমাউ করে কান্না করেছিলেন আমির। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেশ সময় লেগেছিল। কারণ আলোচিত স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আমির। ক’দিন আগে ভারত অধিনায়ক ও সময়ের অন্যতম সেরা তারকা বিরাট কোহলি তার খেলা কঠিন বোলার হিসেবে পাকিস্তানী পেসারের নাম উল্লেখ করেন। জবাবে আমির জানালেন কোহলিই তার প্রিয় ব্যাটসম্যান। সকল বৈরিতা পরিহার করে দু’দেশের সম্পর্কটা ক্রিকেটারদের মতো এমন উষ্ণ হয়ে উঠুক এমনটাই চান তিনি। ‘সত্যি বলতে, এমন একজনের কাছ থেকে প্রশংসা শুনতে ভালই লাগে। এটা ভাল বোলিংয়ের, ভাল খেলার পুরস্কার। কোন সন্দেহ নেই কোহলি খুব উঁচুমানের ব্যাটসম্যান এবং তার প্রশংসা যে কাউকেই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। আর নিজের ওপর বিশ্বাস করতে পারলে বোলিং আরও ভাল হয়। আমি বহুবার বলেছি বর্তমানে সে-ই আমার প্রিয় ব্যাটসম্যান। সে খুব শক্ত প্রতিপক্ষ এবং তার বিপক্ষে খেলতে হলে আপনাকেও সে রকম দৃঢ় হতে হবে।’ ক’দিন আগে এক অনুষ্ঠানে আমিরকে প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন কোহলি। সেখানে নিজের দেখা সেরা বোলারের নামটা জানিয়েছিলেন এভাবে, ‘বর্তমান সময়ের বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ আমিরই আমাকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে। বিশ্বের প্রথম দু’তিনজন বোলারের একজন সে। আমার ক্যারিয়ারে মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে কঠিন বোলার। অসাধারণ, খুবই ভাল বোলার ও।’ সুযোগ পেলেই কোহলির কাছ থেকে উপহার বুঝে নেন পাকিস্তানের এই পেসার, ‘আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া খুব ভাল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমাকে একটা ব্যাট দিয়েছে, বিশ্ব টি-২০তেও দিয়েছিল। অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপেও একসঙ্গে খেলেছি আমরা। আমি যে বছর খেলছি, কোহলি সেবার ভারতের অধিনায়ক ছিল। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা তাই বেশ ভাল। ওর ব্যাট আমার খুব পছন্দ, তাই আমি সবসময় চেয়ে নিই। না চাইলেও আমাকে উপহার দেয় সে। কোন সন্দেহ নেই, আমার কাছে কিছু চাইলে অবশ্যই সেটা দেব।’ তবে মাঠের লাড়াইয়ে কোহলিকে একবিন্দু ছাড় দেন না আমির, ‘মাঠে কোন বন্ধুত্ব থাকে না। সবাই নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। সবাই দেশের জন্য সর্বোচ্চ দেয়ার চেষ্টা করে। মাঠে পরিকল্পনা থাকে ওকে যত দ্রুত সম্ভব আউট করার। রান তাড়া করায় ও অসাধারণ, চাপে সবসময় ভাল করে। তাই ওকে আউট করা মানেই ম্যাচ পঞ্চাশ ভাগ জিতে যাওয়া। কোহলি খুব ভাল ক্রিকেটার। আমি আশাকরি সে তার দেশ ও ভক্তদের জন্য এভাবে আরও অনেক অনেক রেকর্ড গড়বে।’ উষ্ণ সম্পর্কটা দু’দেশের দর্শকের মধ্যেও দেখতে চান আমির, ‘ভারতীয়রা ক্রিকেট নিয়ে খুব আবেগপ্রবণ, পাকিস্তানীরাও তাই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির কথাই ভেবে দেখুন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুদ্ধ বেধে গিয়েছিল। এটা ঠিক নয়। ভক্তদের উচিত ক্রিকেটকে সমর্থন করা। এতে দুই দেশের জন্যই ভাল।’ ফিক্সিংয়ের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর বল হাতে যেমন চমৎকার নৈপুণ্য প্রদর্শন করে চলেছেন তেমনি আমির এখন কথাবার্তায়ও বেশ পরিণত।
×