ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিরল রেলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি ব্যাহত

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

বিরল রেলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি ব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ পর্যাপ্ত সংখ্যক রেল ইঞ্জিনের অভাবে দিনাজপুরের বিরল রেলবন্দর দিয়ে ভারত ও নেপালের সঙ্গে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বর্তমানে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, আর ধস নামছে জাতীয় রাজস্ব আয়ে। রেল ইঞ্জিনের অভাবে মালামাল বোঝাই শত শত ওয়াগন বাংলাদেশের বিরল রেলবন্দরে এসে পৌঁছাতে পারছেনা। আমদানি পণ্য বোঝাই ওইসব রেলগাড়ি দিনের পর দিন ভারতীয় অংশের রাধিকাপুর রেল স্টেশনে পড়ে থাকছে। ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন বিরল রেলবন্দরে এসে দিন গুনছেন, কবে তাদের মালামাল বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে। চলতি বছরের ৮ এপ্রিল শনিবার দুপুরে দিল্লী থেকে দিনাজপুরের বিরল ও ভারতের রাধিকাপুর রেলবন্দর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাণিজ্যিক রুট যৌথভাবে উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের সময় ৪২টি পাথর বোঝাই ভারতীয় ওয়াগন ও বাংলাদেশী ইঞ্জিন বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সেই থেকে রেল পথে সরকারীভাবে ভারতের রাধিকাপুর এবং বাংলাদেশের বিরল রেল স্টেশনের মধ্যে সরাসরি আমদানি-রফতানি নতুন গতি লাভ করে। কিন্তু বর্তমানে আমদানি ও রফতানি কার্যক্রম রেল ইঞ্জিনের অভাবে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। দেশে রেল ইঞ্জিনের সঙ্কট থাকায়, সময় মতো রেল ইঞ্জিন বরাদ্দ না পাওয়ায়, এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমদানি-রফতানিকারকরা জানান, এই পথে ভারত নেপাল, ভুটান ও সিকিমসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মালামাল পাঠাতে ও ওই সব দেশের মালামাল বাংলাদেশে আমদানি করতে ব্যয় কম হয়। এ পথে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বেশি থাকায় তারা বিরল রেলবন্দরকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কিন্তু রেল ইঞ্জিনের অভাবের কারণে সময় মতো ব্যবসার মালামাল আনা নেয়া করতে পারছেন না তারা। এই রুটে অতিরিক্ত রেল ইঞ্জিন বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। বিরল রেল স্টেশন মাস্টার মাসুদ পারভেজ জানান, এই পথে আমদানি-রফতানির জন্য রেল ইঞ্জিন সঙ্কট একটি মারাত্মক সমস্যা। ৪২টি ওয়াগন ভর্তি পাথর ভারত থেকে রেল পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করলে সরকার রাজস্ব হিসেবে পায় ১৫ লাখের বেশি টাকা। যত বেশি মালামাল নিয়ে রেল বাংলাদেশে প্রবেশ করবে, তত বেশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। বিরল রেলবন্দরে অনেক আমদানি-রফতানিকারক রয়েছেন। কিন্তু এখানে মূল সমস্যা রয়েছে রেল ইঞ্জিনের। সারা মাসে ২ থেকে ৩টি মাল বোঝাই রেলগাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। যদি প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে পণ্যবোঝাই রেলগাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করতো, তাহলে বাংলাদেশের রাজস্ব আয় প্রচুর পরিমাণ বৃদ্ধি পেত। বিরল রেলবন্দর দিয়ে তেল, পাথর ও খাদ্য শস্য আমদানি ছাড়াও বাংলাদেশী পণ্য রফতানি করা হয়ে থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান বিভাগীয় রেল কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম। তিনি জানান, ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার পর বিরল রেলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি শুরু হয়। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় এই পথে আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যায়।
×