ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঢেলে সাজানো হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যভান্ডার

ছোট ঋণ খেলাপীরাও সিআইবিতে আসছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৯ অক্টোবর ২০১৭

ছোট ঋণ খেলাপীরাও সিআইবিতে আসছে

অর্থনৈতিক রিপোার্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) নজরে আসছে ‘ছোট’ ঋণখেলাপীরাও। এতদিন ব্যুরোটি বড় গ্রাহক ও ঋণখেলাপীদের তথ্য সংরক্ষণ করত। এখন কেউ ব্যাংক থেকে যেকোনও পরিমাণ টাকা ঋণ নিলে সেই তথ্যও থাকবে সিআইবিতে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এই বিভাগের তথ্যভা-ার ঢেলে সাজানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এটি বাস্তবায়ন হলে জাল বা একই দলিলে বারবার ঋণ নেয়া বন্ধ হবে। গ্রাহকদের ব্যাংক ঋণ নেয়া, তা নিয়মিত পরিশোধ করা বা না করার তথ্য সংরক্ষিত থাকে সিআইবিতে। এতদিন তথ্যের জন্য ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল ছিল সিআইবি। এখন এটি স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। কোন গ্রাহক ঋণের জন্য আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সিআইবি থেকে ওই গ্রাহকের ঋণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে। সাধারণত, খেলাপী কোনও গ্রাহককে ঋণ দিতে চায় না ব্যাংক। ব্যুরোর কার্যক্রম সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গ্রাহকের নেয়া ঋণের পরিমাণ এবং ঋণ পরিশোধের প্রকৃতি যাচাই করে সঠিক গ্রাহক নির্ধারণের জন্য কমপক্ষে ২৪ মাসের ক্রেডিট হিস্ট্রি সংবলিত সিআইবি রিপোর্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে।’ সিআইবির নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর তথ্যভা-ারকে আরও আপগ্রেড করতে যাচ্ছি। সেখানে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া গ্রাহকের সব তথ্য থাকবে। তবে কবে থেকে এটি কার্যকর হবে, তা এখনও নির্ধারণ হয়নি।’ বর্তমানে কোন গ্রাহকের খেলাপী ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকার কম হলে সেই তথ্য সিআইবি রাখে না। একইভাবে ক্রেডিট কার্ডের কোন গ্রাহক ১০ হাজার টাকার কম খেলাপী হলে সেই তথ্যও থাকে না সিআইবিতে। ফলে এই ধরনের গ্রাহক এক ব্যাংকে খেলাপী হওয়ার পর অন্য ব্যাংক থেকে নতুন করে ঋণ নিতে পারেন। সিআইবির নতুন উদ্যোগে এই ছোট ঋণগ্রহীতারাও নজরদারির মধ্যে আসবেন। এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী ঋণের বিপরীতে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জামানতের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হবে সিআইবিতে। প্রাথমিকভাবে স্থাবর সম্পত্তি জামানতের তথ্য রাখার কাজ চলছে। পরে অস্থাবর সম্পত্তির তথ্যও রাখা হবে। সিআইবি এতদিন ঋণ নেয়া গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করলেও ঋণের বিপরীতে মর্টগেজ হিসেবে জমির দলিলের তথ্য রাখত না। এখন তথ্যভা-ার ঢেলে সাজানোর পর জমির দলিলের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। ফলে জাল বা একই দলিলে বারবার ঋণ নেয়া বন্ধ হবে। ভূমি অফিসের দেয়া তথ্য ছাড়া সিআইবি কোন দলিলও নেবে না। ব্যাংকিং খাতে একই দলিল দিয়ে একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার ঘটনা অহরহ ঘটছে। ফলে সিআইবির নতুন উদ্যোগে এক জমির একই দলিল দিয়ে ঋণ নেয়া বন্ধ হবে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, ‘সিআইবিতে স্থাবর-অস্থাবর জামানতের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হলে খেলাপী প্রবণতা কিছুটা কমাতে সহায়ক হবে।’
×