ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেলেন রাজীব ও নাদিয়া সামদানি

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেলেন রাজীব ও নাদিয়া সামদানি

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ শিল্পকলায় অনন্য পৃষ্ঠপোষকতার স্বীকৃতিস্বরূপ মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ‘মন্টব্লাঙ্ক দ্য লা কালচার আর্টস প্যাট্রনেজ এ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন বাংলাদেশের ঢাকা আর্ট সামিটের উদ্যোক্তা রাজীব ও নাদিয়া সামদানি। ব্যক্তিগতভাবে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই সম্মাননা পেয়েছেন তারা। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এই প্রথম কেউ এই সম্মান অর্জন করলো। গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ের আলসার্কাল এভিনিউয়ের কংক্রিটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অতিথিরা নির্বাচিতদের পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্টব্লাঙ্ক কালচারাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান স্যাম বারডাউইল এবং টিল ফেলরাথ। এই অনুষ্ঠানেই রাজীব এবং নাদিয়া সামদানিকে পুরস্কৃত করা হয়। এই পুরস্কারের সঙ্গে ১৫ হাজার ইউরো প্রদান করা হয় যা সামদানি দম্পতি বাংলাদেশী শিল্পীদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিকে দান করবেন বলে জানিয়েছেন। সামদানি দম্পতি মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র এবং প্রথমবারের মতো এ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এই বছর পৃথিবীর মধ্যে ১৭ জনকে এই এ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়, যারা কিনা আন্তর্জাতিক বিচারক দ্বারা নির্বাচিত হয়েছেন। এই এ্যাওয়ার্ডের সুদীর্ঘ তালিকায় রাজীব ও নাদিয়া সামদানি ছাড়া আরও রয়েছে ইংল্যান্ডরে প্রিন্স চার্লস্, জাপানীজ শিল্পী ইয়োকো ওনো, নাট্যলেখক রবার্ট উইলসন, এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত মিউজিশিয়ান কুইনজি জোনস্, ফিল্ম প্রডিউসার মায়া হফ্ম্যান এবং ইটালিয়ান আর্কিটেক্ট রেনজো পিয়ানো। মন্টব্লাঙ্ক একটি জার্মান কোম্পানি যারা সৌখিন লেখার সামগ্রী, ঘড়ি, গয়না এবং চামড়ার সামগ্রী তৈরি করে। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড কার্টিয়ার, ভ্যান ক্লিফ এবং আর্পেলসের মতো কোম্পানির সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত। মন্টব্লাঙ্ক কালচারাল ফাউন্ডেশন ১৯৯২ সাল থেকে ২৫ বছর ধরে শিল্প ও শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষকদের স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। মন্টব্লাঙ্ক দ্য লা কালচার প্যাট্রনেজ এ্যাওয়ার্ডকে পৃষ্ঠপোষকদের জন্য পৃথিবীর শীর্ষ পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাজীব এবং নাদিয়া সামদানি বাংলাদেশী সমকালীন শিল্প ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং শিল্পী ও স্থপতিদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ২০১১ সালে সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশনের সূচনা করেন। সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশী এবং দক্ষিণ এশীয় নবীন শিল্পীদের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতে সহায়তা করে । তারা বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, রেসিডেন্সি এবং শিক্ষাকার্যক্রম আয়োজন করে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হল ঢাকা আর্ট সামিট যা একটি অবাণিজ্যিক গবেষণা ও প্রদর্শনীর মঞ্চ। সামদানি দম্পতি সিলেটে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের প্রথম ভাস্কর্য পার্ক ‘শ্রী হট্ট-সামদানি আর্ট সেন্টার ও স্কাল্পচার পার্ক’ উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। তারা দক্ষিণ এশীয় এবং আন্তর্জাতিক শিল্প সংগ্রহের জন্য পরিচিত এবং এই স্বীকৃতি হিসেবে ‘আর্ট নিউজ’ পত্রিকায় ২০১৫ এবং ২০১৭ সালে ২০০ শীর্ষ সংগ্রাহক, আর্ট রিভিউ পত্রিকায় ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে পাওয়ার ১০০ এবং আর্টনেট নিউজ পত্রিকায় ২০০০ সালে পৃথিবীর শীর্ষ ১০০ শিল্প সংগ্রাহক তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। রাজীব সামদানি যুক্তরাজ্যে বিখ্যাত টেট মিউজিয়ামের দক্ষিণ এশীয় অধিগ্রহণ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও কো-চেয়ারম্যান এবং তারা দুজনেই এই মিউজিয়ামের আন্তর্জাতিক কাউন্সিলের সদস্য। রাজীব ও নাদিয়া সামদানি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশীয় আর্টস্ কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, দুবাইয়ের আলসার্কাল এভিনিউ প্রোগ্রামিং কমিটির সদস্য, আর্ট দুবাই এবং শ্রীলঙ্কার কলোম্ব দ্বিবার্ষিক প্রদর্শনীর উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য।
×