ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘মিরাজ-তাইজুলের ভাবনায় ২-০’

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

‘মিরাজ-তাইজুলের ভাবনায় ২-০’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এতদিন শুধু দলের কোচ ও সিনিয়র ক্রিকেটারদের মুখেই অস্ট্রেলিয়াকে ২-০তে হারানোর আত্মবিশ্বাসী কথা শোনা গেছে। এখন দলের জুনিয়র ক্রিকেটাররাও সেই বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন। অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম টেস্ট হারানোয় এখন চট্টগ্রামে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টও যে জেতা সম্ভব সেই বিশ্বাস ক্রিকেটারদের মধ্যে ঢুকে গেছে। মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামই যেমন অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ ব্যবধানে হারানোর কথা বলছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫ উইকেট নেয়া মিরাজ যেমন বলেছেন, ‘আত্মবিশ্বাস ভাল আছে। জেতার (চট্টগ্রাম টেস্টে) জন্যই নামব।’ দুই ইনিংস মিলিয়ে ৪ উইকেট নেয়া তাইজুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমিও একই কথা বলব। আমরা ইংল্যান্ডকে টেস্টে হারিয়েছিলাম। ওদেরও ২-০ ব্যবধানে হারাতে পারতাম। একটুর জন্য সুযোগটা হাতছাড়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াকে হারানো যাবে না, এমন না। এটা তো অসম্ভব না। ভাল কিছুই হবে।’ প্রথম টেস্টটি সাকিবময় হয়েছে। তবে ব্যাট হাতে তামিম ইকবালের দুই ইনিংসেই হাফসেঞ্চুরি এবং বল হাতে মিরাজ ও তাইজুল বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তাই তো জয় এসেছে। মিরাজ মনে করছেন সবাই ভাল করেছে। তাই জয় এসেছে, ‘আমাদের দলের সবাই ভাল ক্রিকেট খেলেছে। এই উইকেটে রান তোলা কষ্ট। সাকিব-তামিম ভাই ভাল জুটি গড়েছে। যেটার ওপর ভিত্তি করে আমরা স্কোর পেয়েছি। বোলাররা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। বিশেষ করে সাকিব ভাই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। সব মিলিয়ে সবাই ভাল খেলেছে বলে আমরা জিতেছি।’ জয় পেলে সবদলই উদযাপন করে। বাংলাদেশ দলও করেছে। তাইজুল যেমন বললেন, ‘জয় পেয়ে খুব ভাল উদযাপন করেছি। বুঝতেই তো পারছেন সবার মন-মানসিকতা কেমন ছিল। অনেক ভালই উদযাপন করছি।’ এখন দ্বিতীয় টেস্টেও একইরকম উইকেট আশা করছেন তাইজুল। তাহলেই যে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো যাবে, ‘এখানে (মিরপুরে) যে উইকেটে ওদের হারিয়েছি, তেমন উইকেটই আশা করছি। শুধু আশা করলেই তো হবে না, তেমন উইকেট পাওয়ার জন্য তো আমাদের ভালও খেলতে হবে। আমরা এই রকমই উইকেটই চাচ্ছি যেন আমাদের জন্য একটু সহায়ক হয়।’ বাংলাদেশ দল এখন অনেক ভাল করছে। সেই ভাল করাটা শুরু হয়েছে ২০১৪ সালে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজে জয় দিয়ে। সেটি স্মরণ করিয়ে দিলেন তাইজুল। সেই সিরিজের প্রথম টেস্টে ৯ উইকেট পেয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তাইজুল। এরপর দ্বিতীয় টেস্টে ৬টি ও তৃতীয় টেস্টে ২টি উইকেট পেয়েছেন। তাইজুল তাই বলেছেন, ‘জিম্বাবুইয়ে হয় তো ছোট দল। কিন্তু গত তিন-চার বছর ধরে যে আমাদের এগিয়ে চলা সেটা শুরু হয়েছিল ওই সিরিজ দিয়ে। ওদের সঙ্গে টেস্ট সিরিজ জিতে শুরু করলাম, পরে ওয়ানডে সিরিজ জিতলাম। এরপর বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ কিন্তু ভাল একটা পর্যায়ে আছে। প্রতিটি জায়গাতেই সফল। ওই পারফর্মেন্সকেও ছোট করব না, এই পারফর্মেন্সকেও বড় করব না। দুইটাতেই আমি খুশি।’ মিরাজ ও তাইজুল দুইজনই অবশ্য ভয় পেয়েছিলেন। টেস্ট হারের শঙ্কা তাদের মধ্যেও ছিল। যখন ওয়ার্নার ও স্মিথ জুটি গড়েছিলেন। চতুর্থদিনে জিততে ৮ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার ১৫৬ রান দরকার ছিল। মিরাজ বললেন, ‘অনেক সময় মনে হয়েছে ম্যাচটা জিততে পারি, আবার ওদের জুটি বড় হলে মনে হয়েছে হারতেও পারি। পানি বিরতির সময় সাকিব ভাইয়ের একটা কথা আমাদের ভীষণ অনুপ্রাণিত করেছে, গ্যালারির দর্শকরা জেতার বিশ্বাস নিয়ে মাঠে আসে, সেটা আমাদের থাকবে না কেন? এ কথার পর সবাই ওইভাবে বোলিং-ফিল্ডিং এফোর্ট দিয়েছি। ওদের উইকেট পড়তে শুরু করলো। সাকিব ভাই ব্রেক থ্রু এনে দিলেন।’ তারপর তো বাংলাদেশ জিতেই গেল। তাইজুল সময়টাকে ব্যাখ্যা করেছেন এমনভাবে, ‘আমাদের মনে হয়েছে, কাজটা কঠিন। ওরা বড় দল। ওদের ভাল ব্যাটসম্যান আছে। চতুর্থদিন ছিল, উইকেট পরিবর্তন হয়েছিল। আমাদের আশা ছিল অঘটন ঘটতে পারে। আর এই উইকেটে কিন্তু দেড় শ’ কম রান না। ব্রেক থ্রু আসলেই ওদের চেপে ধরতে পারতো। এই পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছিলাম।’ বাংলাদেশ দল প্রথম টেস্টে যে পরিকল্পনায় এগিয়েছে, সফল হয়েছে। এখন দ্বিতীয় টেস্টে সাফল্য আসার অপেক্ষা। সেই সাফল্যের আগে বিশ্বাসটাও থাকা জরুরী। মিরাজ, তাইজুলদের ভাবনাতেও ২-০তে জয়ের বিশ্বাস আছে। তাহলে কী হয়ে যাবে?
×