ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামের উইকেটে আরও ভাল খেলবে টাইগাররা!

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

চট্টগ্রামের উইকেটে আরও ভাল খেলবে টাইগাররা!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নতুন করে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের উইকেট ও আউটফিল্ড তৈরি করার কারণে অনেকেই এর আচরণ কেমন হবে তা নিয়ে ছিলেন ধোঁয়াশার মধ্যে। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররাও সংস্কার করার পর এ উইকেটে খেলতে পারেননি। আর সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলে যারা আছেন তাদের কোন অভিজ্ঞতাই ছিল না মিরপুরে খেলার। এটা অনুমিতই ছিল স্পিনবান্ধব উইকেট হবে মিরপুরের। শেষ পর্যন্ত সেই স্পিনই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের স্পিনের কাছেই নতি স্বীকার করেছে অসিরা। অস্ট্রেলিয়ার স্পিনাররাও দারুণ সাফল্য পেয়েছেন। এবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। সেখানে বর্তমান অস্ট্রেলিয়া দলের কেউ কোন ম্যাচই খেলেননি এ মাঠে। নিশ্চিতভাবে সেখানেও স্পিন জুজু অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। প্রথম ম্যাচ জিতে স্বাগতিক বাংলাদেশ যেমন আত্মবিশ্বাসী, তেমনি অসিরা হতাশাগ্রস্ত। তবে কি চট্টগ্রামে আরও সহজ জয় পেতে যাচ্ছে টাইগাররা? দুই টেস্টের সিরিজ শুরুর আগে থেকেই আলোচনায় ছিল উইকেট। মিরপুরের উইকেট অনেকবারই রহস্যময়তার জন্য বিপাকে ফেলেছে বিভিন্ন দলকে। এবারও মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে শুরু থেকেই আলোচনা হয়েছে। ম্যাচের আগেই অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা বিভিন্ন সময়ে বলেছিলেন, ‘উপমহাদেশের উইকেট সাধারণত যেমন হয়ে থাকে তেমন কিছুই হবে। আমরাও প্রত্যাশা করছি মিরপুরের উইকেট হয়তো স্পিননির্ভর হবে। স্পিনাররা এখানে নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে আমরা সেই চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত।’ ম্যাচের দ্বিতীয়দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর দেখা গেল সত্যি সত্যিই স্পিন অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে। এরপর সংবাদ সম্মেলনে এ্যাশটন এ্যাগার বলেন, ‘অনেক স্পিন হচ্ছে, বল কখনও লাফিয়ে উঠছে। এখানে রান করা খুব চ্যালেঞ্জের।’ অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানরা হাড়ে হাড়েই টের পেয়েছে স্পিনের বিরুদ্ধে কতটা অসহায় তারা। সেটা প্রথম ইনিংসে তারা ব্যাট করতে নামার পরই পরিষ্কার ফুটে ওঠে ব্যাটসম্যানদের শারীরিক ভাষায়। মিরপুরের উইকেটে হওয়া ১৭ টেস্টের পরিসংখ্যানই বলে দেয় এখানে স্পিনাররা কেমন দাপট দেখিয়েছেন। ১৬ টেস্টে পেসাররা যেখানে ১৯৩ উইকেট নিয়েছেন, স্পিনারদের দখলে ২৬৮ উইকেট। এবার অসিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্পিনাররাই নিয়েছেন ২০ উইকেট। আর অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে স্পিনাররা ১৫ উইকেট শিকার করেন। অর্থাৎ মাত্র ৫ উইকেট নিতে পেরেছেন পেসাররা। ফলাফলও নির্ধারিত হয়েছে মূলত বোলিংয়ে। এবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামে নিশ্চিতভাবেই স্পিনবান্ধব উইকেটই গড়া হবে মিরপুর সাফল্যের পর। সেখানেও অসিদের মোকাবেলা করতে হবে বাংলাদেশের স্পিন হুমকিকে। সাগরিকার এ মাঠে এখন পর্যন্ত একটিই টেস্ট খেলেছে অস্ট্রেলিয়া ২০০৬ সালে। কিন্তু বর্তমান দলের কোন ক্রিকেটারই ছিলেন না সেই ম্যাচে। এমনকি কোন ফরমেটেই সেখানে কোন অসি ক্রিকেটার ম্যাচ খেলেননি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম বলেন, ‘হয়তো এভাবেই উইকেট করা হবে। কিন্তু সেখানকার মাটির বৈশিষ্ট্য এখানকার (মিরপুর) চেয়ে আলাদা। হয়তো একইরকম আচরণ করবে না।’ কিন্তু যেমন আচরণই করুক বাংলাদেশের স্পিনের বিরুদ্ধে অসহায় অসিরা সেটা বেশ ভালভাবেই বোঝা গেছে। মিরপুরে খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা নিয়েও অসিরা কিছুই করতে পারেনি। সাগরিকায় কোন অভিজ্ঞতা ছাড়া একেবারে নতুন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে ৩ দিন পরই টেস্ট খেলতে নামটা অগ্নিপরীক্ষার সমান হবে তাদের জন্য। উইকেটই হয়তো পার্থক্য গড়ে দেবে। কিন্তু এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘উইকেট হয়তো একটা বড় ভূমিকা রাখে। কিন্তু যদি ভাল বোলিং না করা যায়, ঠিক জায়গা বল না ফেলা যায় তাহলে উইকেট নিজেদের পক্ষে থাকলেও ভাল কিছু করা সম্ভব হয় না। উইকেট পেতে হলে অবশ্যই বোলারদের ভাল বোলিং করতে হবে।’ সাগরিকার এ মাঠে স্পিনারদের দৌরাত্ম্য আরও বেশি। মিরপুরের চেয়েও ভয়ঙ্কর রূপে দেখা গেছে স্পিনারদের চট্টগ্রামে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত হওয়া ১৫ টেস্টে স্পিনারদের দখলে আছে ২৮৭ উইকেট আর পেসারদের দখলে আছে ১৫৬ উইকেট। এসব পরিসংখ্যান বলছে অস্ট্রেলিয়ার জন্য পরাজয়ের শঙ্কাটা উঁকি দিচ্ছে চট্টগ্রামে। এমনকি মিরপুরের চেয়েও খারাপভাবে হেরে যেতে পারে তারা, সহজ জয় তুলে নিতে পারে টাইগাররা।
×