ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ছয় মাসে বেড়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা

খেলাপীঋণ ৭৪ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ১৮ আগস্ট ২০১৭

খেলাপীঋণ ৭৪ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। তবুও ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরছে না। উদ্যোক্তারা নতুন করে বিনিয়োগে আসছেন না। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেকেই শিল্পকারখানা বন্ধ করে দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন ব্যাংকের ঋণ বিতরণ বাড়ছে না, অন্যদিকে আগে বিতরণ হওয়া ঋণের টাকাও ফেরত পাচ্ছে না ব্যাংক। ফলে ব্যাংকিং খাতের খেলাপী ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। যা বিতরণ হওয়া ঋণের ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এ খাতে খেলাপী ঋণ ছিল প্রায় ৬২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ গত ছয় মাসে খেলাপী ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের বিশেষ সুবিধা দিতে ব্যাংকিং খাতে খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনে (নিয়মিত) বিশেষ ছাড় দেয়া হয়। ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এ সুযোগ নেন দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বড় বড় শিল্প গ্রুপ। এর আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি সাপেক্ষে প্রায় ৪৯ হাজার কোটি টাকার খেলাপী ঋণ নিয়মিত করা হয়েছে। এর বাইরে বিদ্যমান নীতিমালার আওতায় ব্যাংকগুলো নিজেরা আরও ৬৪ হাজার ৮৬২ কোটি টাকার ঋণ নিয়মিত করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। যা বিতরণ হওয়া ঋণের ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এ খাতে খেলাপী ঋণ ছিল প্রায় ৬২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ গত ছয় মাসে খেলাপী ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। এদিকে গত বছর জুন প্রান্তিক শেষে খেলাপী ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৩ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খেলাপী ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা বা ২১ শতাংশ বেড়ে গেছে। গত মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপী ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭৩৯ কোটি টাকা বেড়েছে। আগের প্রান্তিক মার্চ শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট ৬ লাখ ৯৭ হাজার ১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ হয়েছিল। আর জুন শেষে এ পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৩১ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। মার্চ প্রান্তিক শেষে খেলাপী ঋণ ছিল ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। প্রতিবেদনে দেখা যায়, মোট খেলাপী বা শ্রেণীকৃত ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানার বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। খেলাপী ঋণের ৩৪ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের। এছাড়া ৪০টি বেসরকারী ব্যাংকের খেলাপী ঋণ ৩১ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। বিদেশী ৯ ব্যাংকের খেলাপী ঋণ ২ হাজার ৩২১ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ৫ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা।
×