ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘শুধু দেশ, শহর, দল বদলেছে’

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ১৫ আগস্ট ২০১৭

‘শুধু দেশ, শহর, দল বদলেছে’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেক নাটকীয়তার পর নতুন ক্লাব প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনে (পিএসজি) অভিষেকও হয়ে গেল নেইমারের। রবিবার রাতে প্যারিসে লীগ ওয়ানের ম্যাচে আলোকিত অভিষেক হয়েছে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারের। গুইনগ্যাম্পকে তাদেরই মাঠে ৩-০ গোলে হারিয়েছে লীগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। ম্যাচে নেইমার একটি গোল করা ছাড়াও আরেকটি গোলে সহায়তা করেন। সাবেক ক্লাব বার্সিলোনায় লিওনেল মেসি- লুইস সুয়ারেজ-আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাদের সামনে সর্বোচ্চটুকু দিলেও সব সময়ই পার্শ্ব নায়ক হয়েই থাকতে হয়েছে নেইমারকে। তার স্পেন ছাড়ার অন্যতম কারণও এটা। নেইমার যে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন, পিএসজির হয়ে প্রথম ম্যাচেই সেটা প্রমাণ করেছেন। প্যারিসের পরাশক্তিদের হয়ে অভিষেক ম্যাচটা রাঙ্গিয়ে তোলেন সেলেসাও তারকা। এই মৌসুমে নেইমারকে ছাড়া প্রথম ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হারতে হয়েছে বার্সিলোনাকে। অন্যদিকে পিএসজির হয়ে প্রথম ম্যাচটাই জিতলেন নেইমার। গুইনগ্যাম্পের মাঠে শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পিএসজি। নেইমারকে ঠেকানোর কোন অস্ত্রই যেন ছিল না প্রতিপক্ষের কাছে। প্রথম মিনিটেই এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে দারুণ এক পাস দিয়ে সতীর্থের সাধুবাদ পান নেইমার। ১৯ মিনিটে নেয়া নেইমারের শটটা চলে যায় গোলবারের সামান্য ওপর দিয়ে। ৩৬ মিনিটে নেইমারের দারুণ ক্রস থেকে বল পেয়ে প্রায় গোল করেই ফেলেছিলেন মারকিউনিস। ক্রসবারে লেগে বল ফিরে আসে। পরের মিনিটে ডি বক্সের ভেতরে নেইমারকে ফাউল না করলে প্রথম গোলটা হয়ত পেয়েই যেত এই তারকা। বিষয়টি অবশ্য রেফারির নজর এড়িয়ে যায়। প্রথমার্ধে নেইমারকে রুখতে পারলেও দ্বিতীয়ার্ধে আর পেরে ওঠেনি স্বাগতিকরা। ৫২ মিনিটে নিজেদের ভুলেই পিছিয়ে পড়ে গুইনগ্যাম্প। বল ক্লিয়ার করতে যেয়ে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন ইকোকো। ৬২ মিনিটে নেইমারের নিখুঁত পাসে বল পেয়ে গোল করেন এডিসন কাভানি। নিজেদের প্রান্ত থেকে একাই বল টেনে নিয়ে আসেন নেইমার। এরপর কাভানির দিকে পাস দেন। গোলরক্ষককে পার করার কাজটিই কেবল উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার করেন। পুরো ম্যাচে দারুণ খেললেও নেইমার গোল পাচ্ছিলেন না। অবশেষে ৮২ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোল পান সেলেসাও সুপারস্টার। কাভানির কাছ থেকে বল পেয়ে জালে জড়িয়ে দেন। ম্যাচে বিশ্বরেকর্ড গড়া ২২ কোটি ২০ লাখ ইউরো ট্রান্সফার ফিতে বার্সিলোনা ছেড়ে পিএসজিতে পাড়ি জমানো নেইমারের দিকে দৃষ্টি ছিল পুরো বিশ্বের। নতুন পথচলার শুরুতে আলো ছড়ানোর পর নেইমারও উচ্ছ্বসিত। তিনি অকপটে জানিয়েছেন, প্যারিসে এসে কোন ভুল করেননি। ম্যাচ শেষে নেইমার বলেন, আমি অনেক শান্ত। জানতাম বার্সিলোনা ছেড়ে আসাটা খুবই কঠিন হবে। কিন্তু এখানে আসতে পেরে আমি খুবই খুশি। মানুষ মনে করে যে, বার্সা ছেড়ে আসাটা মৃত্যুর মতো। কিন্তু না। আমার ক্ষেত্রে এটা বিপরীত। যে কোন সময়ের চেয়ে আমি এখন প্রাণবন্ত। ব্রাজিলের বর্তমান সেরা তারকা বলেন, আমি খুবই খুশি। ফুটবলটাও একই আছে। শুধু দেশ, শহর ও দল বদলেছে। ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়ার চেয়ে দলের জয়টা গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে নেইমার আরও বলেন, ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়া নিয়ে আমি খুব খুশি। কিন্তু মূল লক্ষ্য ছিল জয়ের। দল দারুণ খেলেছে। ম্যাচ ও গোল নিয়ে আমরা ভীষণ খুশি। কিন্তু আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল দলের জয়। মেসি, সুয়ারেজের মতো সতীর্থ ছেড়ে পিএসজিতে এসে পাশে পেয়েছেন ডি মারিয়া, কাভানিদের। নতুন ক্লাবে, নতুন সতীর্থদের সঙ্গে সবকিছু ঠিকঠাক হবে বলেই মনে করেন নেইমার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জানতাম কাভানি একজন বড় মাপের খেলোয়াড়। তাকে দূর থেকে দেখেছি। এখন আমি তার সঙ্গে খেলছি। আমরা পরস্পরকে আরও ভালভাবে জানার চেষ্টা করছি। সে দারুণ একজন খেলোয়াড়। যখন আপনার সঙ্গে এমন খেলোয়াড় থাকবে, খেলাটা সহজ হয়ে যাবে। ডি মারিয়া, মার্কো ভেরাট্টি, থিয়াগো মোট্টা, দানি আলভেজসহ আরও যারা আছে, তাদের সঙ্গে খেলাটা সহজ।
×