ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা

ঈদের আগেই দাম বাড়ছে মসলার

প্রকাশিত: ০৩:৪১, ১৩ আগস্ট ২০১৭

ঈদের আগেই দাম বাড়ছে মসলার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দাম চড়তে শুরু করেছে রাজধানীর মসলার বাজারগুলোতে। এরইমধ্যে জিরা, এলাচিসহ বেশ কিছু মসলার দাম উর্ধমুখী রয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ঈদুল আজহা। প্রতিবছর কোরবানির ঈদের আগে বেড়ে যায় মসলার দাম। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, মসলা আমদানির শুল্ক বেশি। এছাড়া সবধরনের ব্যয় উর্ধমুখী হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের খরচ বেড়েছে। যার প্রভাব পণ্যের ওপর পড়বে। তারা জানান, মসলার দাম গত সপ্তাহে কিছুটা বেড়েছে। তবে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এবার দামে তেমন প্রভাব পড়বে না। রাজধানীর মসলার পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদে চাহিদার তুঙ্গে থাকে জিরা, এলাচি ও দারুচিনি। এরইমধ্যে এসব মসলার দাম বেশ বেড়েছে। বর্তমানে মানভেদে প্রতিকেজি জিরা ৩০ থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫৫ থেকে ৩৯০ টাকায়, দারুচিনি ১০ থেকে ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা ও এলাচি কেজিতে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫০ টাকা থেকে ১৬৮০ টাকায়। এছাড়াও তেজপাতা ৯০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়, সাদা গোল মরিচ ৯৮০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ৬৮০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায়, জয়ফল ৬৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকায়, যত্রিক ১৩৫০ টাকা থেকে ১৪৫০ টাকা, কিসমিস ২৬৫ টাকা থেকে ২৭৫ টাকা, আলু বোখারা ৪৬০ টাকা থেকে ৪৯০ টাকা, কাঠবাদাম ৬১০ টাকা থেকে ৭১০ টাকা, পোস্তদানা ৭৮০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর পাইকারি মসলা বিক্রতা আরিফ জানান, গত কয়েক সপ্তাহে বেশকিছু মসলার দাম বেড়েছে। ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ দাম বেড়েছে। এদিকে পাইকারি বাজারের মসলার দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে মানভেদে প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, দারুচিনি ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা ও এলাচি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকায়, তেজপাতা ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১০০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকায়। মালিবাগ বাজারে মসলা কিনতে আসা আফরোজা বেগম বলেন, পেঁয়াজ, আদা, জিরা, এলাচ সবকিছুরই দাম বেড়েছে। ঈদকে পুঁজি করে বাড়তি মুনাফা করেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের বাকি আরও কতদিন, কিন্তু এখনই দাম বাড়িয়েছে। ওদের (ব্যবসায়ীদের) তো কোন সমস্যা নেই। টাকা যায় আমাদের। মসলার দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে দাম বাড়াতে হচ্ছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে চাল ও পেঁয়াজের বাজার এখনও অস্থির। মসলার দামও বাড়ছে। এরপরও চোখে পড়ছে না সরকারী কোন মনিটরিং ব্যবস্থা। এখনই পাইকারি বাজারে যদি মনিটরিং করা না হয়, তাহলে এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়বে বলে আশঙ্কা তাদের। ঈদকে সামনে রেখে মসলার দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী এনায়েতুল্লাহ বলেন, মসলার দাম কিছুটা বেড়েছে। বাজার উঠবে-নামবে এটা স্বাভাবিক। তবে আগের তুলনায় এখনও দাম অনেক কম রয়েছে। যেমন সাদা গোল মরিচ ১৩০০ টাকা থেকে ১৪০০ টাকা ছিল। এটা গত মাস পর্যন্ত ৮০০ টাকায় নেমে আসে। এখন আবার কিছুটা বেড়ে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, মসলা আমদানির শুল্ক বেশি। সবধরনের ব্যয় বাড়ছে। যখন দাম কমে তখন কোন খবর থাকে না। আমরা সীমিত লাভে ব্যবসা করি। ঈদের সময় চাহিদা বেশি থাকে। তাই দাম একটু বাড়ে। তবে এবার পর্যাপ্ত মাল (মসলা) আছে। সঙ্কট হবে না।
×