ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

আফগানিস্তানে শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলছে ইরান

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ৭ আগস্ট ২০১৭

আফগানিস্তানে শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলছে ইরান

আফগানিস্তানে একদিকে মার্কিন উপস্থিতি হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলছে ইরান। ফারাহ প্রদেশের রাজধানী ফারাহয়ের উপকণ্ঠে দায়িত্ব পালনরত এক পুলিশ কর্মকর্তা স্মরণ করলেন তার কমান্ডারের সতর্ক উক্তি। কমান্ডার সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছিলেন, ‘শত শত তালেবান যোদ্ধা তার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’ পুলিশ কর্মকর্তা নজিবউল্লাহ আমিরী (৩৫) স্মরণ করলেন কমান্ডারের সতর্ক উক্তি, ‘আধা ঘণ্টার মধ্যে তারা আক্রমণ চালাচ্ছে।’ তালেবান যোদ্ধারা তার ঘাঁটির চারদিকের কৃষিভূমিতে জড়ো হলো এবং ফারাহয়ে নদীর পশ্চিম তীর ঘিরে ফেলল। এটা ছিল অক্টোবরে তিন সপ্তাহের অবরোধ শুরু হওয়ার ঘটনা। মার্কিন বিমানের সমর্থনপুষ্ট অভিযানের পর তার অবসান হয় এবং এর পরই আফগান নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন ওই ত্বরিত হামলার পেছনে কে ছিল- ছিল ইরান। আফগান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, অভিযানে নিহত অনেকের মধ্যে চারজন উচ্চপদস্থ ইরানী কমান্ডো রয়েছেন। তাদের দাফন ইরানে অনুষ্ঠিত হয়নি। হতাহত তালেবান সদস্যদের অনেককেই ইরানসংলগ্ন সীমান্ত এলাকায় ফিরিয়ে নেয়া হয়। এ এলাকায় বিদ্রোহীদের সংগ্রহ করা হয় ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। গ্রামবাসী আফগান প্রাদেশিক কর্মকর্তাদের এ কথা বলেছে। অন্য কয়েকটি শহরে হামলার সমন্বয়ে চালানো ওই আক্রমণ ছিল ক্ষমতা দখলের জন্য ২০০১-এর পর থেকে তালেবানের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী অভিযানের অংশ। কিন্তু তা ছিল মার্কিন সেনাবাহিনীর আফগানিস্তান ত্যাগের পর সৃষ্ট শূন্যতা পূরণে একটি চেষ্টাও। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি আক্ষেপ করে বলেছেন, আফগানিস্তানে ১৬ বছরের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের হার হচ্ছে এবং দায়িত্বে নিয়োজিত আমেরিকান জেনারেলদের বরখাস্ত করার হুমকি দিয়েছেন তিনি। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, যুক্তরাষ্ট্র আফগান যুদ্ধের গতি কমিয়ে আনছে। আমেরিকার ইতিহাসে এটা দীর্ঘতম যুদ্ধ এবং এ যুদ্ধে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার কোটি ডলার এবং নিহত হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজারের বেশি লোক। সৌদি আরব ও পাকিস্তান এখানে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখছে। কিন্তু ইরানও আফগানিস্তানকে পক্ষে নেয়ার জন্য সাহসী উদ্যোগ নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র দেড় দশকের বেশি সময়জুড়ে ইরানের সীমান্তবর্তী দুই প্রধান বৈরী আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ও ইরাকে সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। ইরান সে সুযোগ নিচ্ছে। এজন্য দেশটি কাজ করে যাচ্ছে ধীরস্থিরভাবে এবং এর প্রভাব বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে নিরলসভাবে। ইরানের লক্ষ্য হচ্ছে, একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া যে, বিদেশী শক্তি শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান ত্যাগ করবে এবং তখন যে কোন সরকার দেশটিতে ক্ষমতায় আসুক সে সরকার অন্তত ইরানী স্বার্থের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে না এবং বন্ধুভাবাপন্নই হবে। -নিউইয়র্ক টাইমস
×