ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে ওয়াসা নয়, সিটি কর্পোরেশনকে মুখ্য ভূমিকা নিতে বললেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

রাজধানীতে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১৭ জুলাই ২০১৭

রাজধানীতে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর চলমান জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসন করতে ড্রেনেজ পদ্ধতির উন্নতিকল্পে ওয়াসা নয় সিটি কর্পোরেশনকে প্রধান নিয়ন্ত্রণকারীর দায়িত্ব নিতে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেন। নাগরিকদের সুবিধা অসুবিধার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি কর্পোরেশনকে এই দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। একইসঙ্গে জলাবদ্ধতা দূর করতে ওয়াসা ও দুই সিটি কর্পোরেশনকে পৃথক পৃথক মাস্টারপ্ল্যান তৈরিরও নির্দেশ দেন তিনি। বর্তমানে ওয়াসা রাজধানীর সকল বৃহৎ ড্রেনের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে। রবিবার রাজধানীর গুলশান-২ এ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) নগর ভবনে সরকারী বিভিন্ন সংস্থাকে নিয়ে আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। সংস্থাটির মেয়র আনিসুল হকের সভাপতিত্বে নগরীর জলাবদ্ধতা ও ইহা দূরীকরণ শীর্ষক সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য কে এম রহমতুল্লাহ। সভায় সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সেবাদানকারী সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত ২৬টি প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং তাদের প্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উর্ধতন কর্মকর্তাগণ ও সংরক্ষিত ও সাধারণ কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, জলাবদ্ধতাই নগরীর বর্তমান প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যা একদিনে তৈরি হয়নি দীর্ঘ বছরে সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ ওয়াসা। আমি নিজেও স্বীকার করে নিচ্ছি যে, নাগরিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হলেও ওয়াসা আজ নাগরিকদের থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছে। বর্তমানে ওয়াসাকে মানুষ কাছে পায় না। তাই নগরীর প্রধান সমস্যা দূর করতে ওয়াসা নয় সিটি কর্পোরেশনকেই লিড এজেন্সির দায়িত্ব পালন করতে হবে। সঙ্গে অন্যান্য সংস্থাও সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে কাজ করবে। সকল সমস্যা সমাধান করতে হলে অবশ্যই নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে। উল্লেখ্য, রাজধানীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিচালনায় বর্তমানে ওয়াসা, রাজউক, সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিসি যৌথভাবে কাজ করে। মন্ত্রী আনিসুল হককে উদ্দেশ করে বলেন, সিটি কর্পোরেশনকে দায়িত্ব নিয়ে জলাবদ্ধতা দূর করতে এগিয়ে আসতে হবে। এ সময় আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে ওয়াসার ড্রেনেজ ব্যবস্থা আমাদের বিকলাঙ্গ সন্তান। তাকে সুস্থ করে চলার উপযোগী করে আমাদের দিন। তারপরই কেবল আমি দায়িত্ব নিতে পারব। এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করতে দায়িত্ব নিন আপনাকে সহায়তার দায়িত্ব আমার। জলাবদ্ধতা দূর করতে আপনাকে অবশ্যই আমি সাহায্য করব। এ সময় মেয়র বলেন, সরকারের সহায়তা পেলে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধান সমন্বয়ক সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে রাজি আছি। ওয়াসার দীর্ঘ বছর আগের তৈরি ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান সম্পর্কে ওয়াসা এমডি তাকসিম খানকে বলেন, বর্তমান ঢাকা আর আগের ঢাকা এক নয়। বর্তমানে দুই সিটি কর্পোরেশনের আয়তন আগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে আর লোকজন বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই আগের মাস্টারপ্ল্যান দিয়ে কোনক্রমেই জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব নয়। এটি বর্তমান সময়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। তাই এসব বাদ দিন। মানুষের চাহিদা বুঝে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে সমন্বয় করতে ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশন পৃথক মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করুন। আমি আপনাদের সহায়তা করব। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে খাল পরিষ্কার নয় গভীরভাবে খনন করতে হবে। বর্তমানে ঢাকার অনেক পয়োবর্জ্য সরাসরি নদীতে পড়ে। নদী বাঁচাতে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জের বালু নদী দেখতে গিয়ে দুর্গন্ধে কয়েক মিনিটও আমি থাকতে পারিনি। এত ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এর মাধ্যমে নদীকে ভরাট করে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য দিয়েই। তিনি বলেন, ঢাকা ও আশপাশের সকল নদীকে খনন করতে হবে। এর চারপাশে দখল করা সকল অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। তাছাড়া নদীর চারপাশে আগের সকল অবৈধ স্থাপনা অবশ্যই উচ্ছেদ করতে হবে। অন্যথায় এসব নদীকে বাঁচানো যাবে না। আর নদীগুলো না বাঁচলে কোনক্রমেই রাজধানীর জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব নয়। মন্ত্রী বলেন, ঢাকার আশপাশের নদীগুলো খনন করতে ও অবৈধ দখলদারদের সমূলে উচ্ছেদ করতে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিতে সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। বৃষ্টির সকল পানি ড্রেন দিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে মন্ত্রী বলেন, আজ থেকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিচ্ছি যে, কোন বাড়ির প্ল্যান পাস করার সময় মনে রাখবেন অবশ্যই বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জলাধার তৈরি বাধ্যতামূলক করতে হবে। অন্যথায় প্ল্যান পাস করা হবে না। অনুষ্ঠানের শুরুতে সুপারেনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার শরিফ উদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শন করা ডিএনসিসি এলাকার খালের চিত্রসহ তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে মোট ৪৩টি খাল রয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি খালের রক্ষাণাবেক্ষণের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। এছাড়া মহানগরীর সকল খালের মালিকানায় রয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসক। ডিএনসিসি এলাকায় ২৩টি খাল রয়েছে, যার সব খাল দখলে চলে গেছে। ওই সকল খাল দিয়ে নদী পর্যন্ত পানি পৌঁছাতে পারছে না। এ কারণে রাজধানীতে অল্প বৃষ্টিতেই দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। সভায় মেয়র আনিসুল হক বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের সকল দায়িত্ব আমার না। কিন্তু সবাই আমার কাছেই অভিযোগ করেন। সাংবাদিকরা আমার কাছেই সকলসমস্যা সমাধানের প্রশ্ন করেন। চিকুনগুনিয়া থেকে শুরু করে জলজট, রাস্তার যানজট এমনকি সামান্য সমস্যা হলেও মেয়রকে দোষারোপ করেন। অনেক নাগরিকই আমাকে না বুঝেই গালিগালাজ করতে থাকেন। মূলত এসব সমস্যার বেশিরভাগই আমার দ্বারা একা কোনক্রমেই সমাধান করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের সচেতনতার পাশপাশি সহায়তা প্রয়োজন হয়। স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা সমন্বয়ের লিড নেয়ার প্রস্তাবে মেয়র বলেন, ড্রেন তো বিকলাঙ্গ বাচ্চা, ক্যান্সারে আক্রান্ত। আমাকে দিলে সুস্থ করে দেন। তাছাড়া জলাবদ্ধতার দায়ভার আমার না, তবুও জনগণ আমাকে গালাগালি করে। জলাবদ্ধতা নিরসনে সভা চলাকালীন একাধিক সাধারণ ও নারী কাউন্সিলরা চলমান জলাবদ্ধাতার জন্য ওয়াসা এমডিকে দোষারোপ করেন। সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী নিজেও ওয়াসা এমডি তাসকিন-এ-খানের অধিকাংশ বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। ডিএনসিসির ৩৩নং ওয়ার্ড কমিশনার তারেকুজ্জামান রাজীব মোহাম্মদপুর এলাকা সম্পর্কে বলেন, আমার এলাকায় খালগুলো নিয়ে ব্যাপক সমস্যায় আছি। নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে কয়েকটি ড্রাম আর একটি ছোট ট্রাক নিয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ খাল খনন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এরপরপরই এসব ময়লা দূরে কোথাও না নিয়ে খালের পাশেই রেখে চলে যান। সেই ময়লা আবার খালে যায়। এছাড়া একটি খালের একটি নির্দিষ্ট স্থানে বেশ ফিটফাট করে পরিষ্কার করে রাখা হয়েছে। যেখানে কোন মন্ত্রী গেলে পরিদর্শনের জন্য ওইস্থানে নিয়ে গিয়ে বোঝানো হয় যে, খাল পরিষ্কার করা হয়েছে। আমরা এই অবস্থার অবসান চাই। জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে দূর করতে হবে। সভায় ওয়াসা এমডি তাকসিন এ খান বলেন, আমরা বিদ্যমান যা খাল পেয়েছি তা রক্ষাণাবেক্ষণ করছি। দখল হয়ে যাওয়া খালে উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত খাল পরিষ্কার করছি। খাল পরিষ্কারের কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ওয়াসা এমডির বক্তব্যের বিরোধিতা করেন আনিসুল হক। তিনি বলেন, খাল কীভাবে পরিষ্কার করেন জানি না। তবে আমাদের লোকরা যে ছবি তুলে নিয়ে এসেছে তাতে খাল পরিষ্কার করার কোন নমুনা পাওয়া যায়নি। মেয়র বলেন, খাল পরিষ্কার করে জলাবদ্ধতার সমাধান করা যাবে না। খালের ভেতরে থাকা মাটি তুলে খালের গভীরতা না বাড়ালে কীভাবে জলাবদ্ধতা দূর হবে। এ সময় ওয়াসা এমডি বলেন, ‘উত্তর সিটির প্রধান খাল বাইশটিকি খাল ও সাংবাদিক খালের অধিকাংশ দখলে নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। আর সেই বাড়ি নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন রয়েছে। এসব কারণে আমরা খালের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে পারছি না। তিনি বলেন, পাম্প মেশিং দিয়ে ঢাকা শহরের পানি বের করতে হয়। প্রাকৃতিকভাবে পানি শহর থেকে বের হয় না। এটা কোন পদ্ধতি হতে পারে না। এমডি বলেন, ওয়াসার তত্ত্বাবোধানে ১৮টি খাল রয়েছে। এই খালগুলো বর্ষার আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু তা ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ময়লায় ভরে যায়। তিনি বলেন, খাল পরিষ্কারে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। পৃথিবীতে এমন কোন রাষ্ট্র নেই বা দেশেও কোন শহর নেই যে রাষ্ট্রের পানি সরবরাহ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার দায়িত্ব একটি সংস্থা করে। এমনকি চট্টগ্রাম নগরেও পৃথক সংস্থা দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জলাবদ্ধতার স্থায়ী নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করেন। অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব বলেন, নদী ও খালেল উপর থাকা কোন স্থাপনার যদি অনুমোদন দেয় রাজউক তাহলে প্রয়োজনে তা বাতিল করা হবে। এছাড়া সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সহায়তা করা হবে। রাজধানীকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করতে ঢাকার চারদিকের জলাশয়গুলোকে রক্ষা করতে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি বলেন, মূলত স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদের পাশাপাশি তাৎক্ষণিক কিছু প্রকল্প নিতে হবে। স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতা যেহেতু একক কোন সমস্যা নয় তাই আজেকের সভায় অবশ্যই দুই সিটির সমস্যা হিসেবে তাদের প্রতিনিধিকে রাখা প্রয়োজন ছিল। এক সিটি মশা মারলেও অন্য সিটি নীরব থাকে। ফলে এসব মশা অন্য সিটিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। ফলে যে কোন প্রোগ্রাম একসঙ্গে ২ সিটিকে বাস্তবায়ন করতে হবে। দুই সিটির সমন্বয় করতে গিয়ে সেবাদানকারী মোট ৫৪টি প্রতিষ্ঠাকে সহায়তা করতে এক করতে হবে। তবেই দৃশ্যমান উন্নতি হবে। এছাড়া তিনি সেবাদানকারী বিভিন্ন সংস্থাকে উন্নত বিশ্বের মতো মেয়রের নিয়ন্ত্রণে আনার পরামর্শ দেন। ঢাকা মহানগরীর খাল সম্পর্কে ঢাকা জেলা প্রশাসক মোঃ সালাহ উদ্দিন বলেন, রাজধানীর সকল খালেল উপর স্থাপিত সকল অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরি করতে ডিএনসিসির সর্বশেষ সভায় জেলা প্রশাসনকে তালিকা করতে অনুরোধ করা হয়। পরে আমরা সরেজমিন গিয়ে খাল অবৈধ দখলকারীদের নামের তালিকা তৈরি করেছি। যা সিটি কর্পোরেশনকে দেয়া হয়েছে। খাল উদ্ধারে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানের জন্য মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কিছু প্রস্তাব দেয়া হয়। তিনি বলেন, যে সকল খালে বেশি সমস্যা, সেখানে ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসন একত্রে অভিযান পরিচালনা করা দরকার। এছাড়া খালের ভেতরে ৪ তলা থেকে ৫ তলা ভবন ভাঙ্গা জেলা প্রশাসকের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। এ সময় মেয়র বলেন, ডিসি সাহেব আপনার জমি, আমার খাল। আমার খাল আমাকে বুঝিয়ে দেন। ওয়াসা আমার খাল পরিষ্কার করে দেন। আমি গালাগালি শুনতে পারব না। সভায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে আগামী বর্ষার আগে কুড়িল ফ্লাইওভার এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য মেয়র অনুরোধ করেন ও ডিএনসিসি এলাকার সকল লেক পরিষ্কার করার কথাও বলেন। এ সময় রাজউক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে কুড়িল এলাকার সমস্যার সমাধান হবে। আর লেকের ময়লা আজকে থেকেই পরিষ্কারের কাজ শুরু করা হবে। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, খাল সম্পৃক্ত সকল সেবা প্রতিষ্ঠান নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে দখল হওয়া খাল উদ্ধার করা হবে। সভাপতির বক্তব্যে মেয়র আনিসুল হক সকল কাউন্সিলদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা নিজ উদ্যোগে নগরীর জলাবদ্ধতা রোধে খাল পরিষ্কার করুন। খাল যাতে দখল না হয় ও ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাট না করতে পারে সেজন্য নাগরিকদের সচেতন করতে পদক্ষেপ নিন। সকল লেকের পানির দুর্গন্ধ আগামী তিন মাসের মধ্যেই দূর করতে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান। তিনি জানান, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী এক বছরের মধ্যে নগরীর চলমান জলাবদ্ধতা দূর করতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ২টি সøুইস গেট নির্মাণ করার হবে বলে জানান। এছাড়া সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে কমিশনারদের সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি নাগরিকদের উন্নয়নে ডিএনসিসির চলমান বিভিন্ন উদ্যোগ ও উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নে কমিশনারদের পাশাপাশি নাগরিকদের সহায়তা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে বুয়েটের অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, স্থপতি ইকবাল হাবিবসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
×