ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শাস্ত্রীর ওপর চটেছেন শচীন, সৌরভ ও লক্ষণ

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৫ জুলাই ২০১৭

শাস্ত্রীর ওপর চটেছেন শচীন, সৌরভ ও লক্ষণ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনীল কুম্বলের মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ আগেই কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটি (সিএসি) পরবর্তী প্রধান কোচ হিসেবে সবচেয়ে উপযুক্ত রবি শাস্ত্রীকেই বেছে নিয়েছে। কিন্তু পুরো ব্যাপারটিতে আবারও তালগোল পাকিয়ে গেছে। সিএসসির তিন সদস্য শচীন টেন্ডুলকর, সৌরভ গাঙ্গুলী ও ভিভিএস লক্ষণ এখন দারুণ রাগান্বিত শাস্ত্রীর কার্যকলাপে। শাস্ত্রী ক্ষেপেছেন এ তিনজনের ওপর বোলিং উপেদষ্টা হিসেবে জহির খান এবং ব্যাটিং উপদেষ্টা হিসেবে রাহুল দ্রাবিড়কে নিয়োগ করায়। তিনি চেয়েছিলেন যথাক্রমে ভরত অরুণ আর সঞ্জয় বাঙ্গারকে। এ কারণেই শাস্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রশাসন কমিটিকে (সিওএ) প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে সিএসি। এই ইস্যু নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন সাবেক ক্রিকেটার ও সাবেক প্রধান নির্বাচক সন্দ্বীপ পাতিলও। তিনি অভিযোগ করেছেন কিংবদন্তি শচীন, গাঙ্গুলী ও লক্ষণ কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় থাকার ক্ষেত্রে পুরোপুরিই অনুপযুক্ত। কোচ ইস্যু নিয়ে উত্তাল হয়ে পড়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট। কুম্বলের সঙ্গে অধিনায়ক বিরাট কোহলির সরাসরি বাকবিত-া হয়েছে এমন ঘটনাও বেরিয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরই পদত্যাগ করেন কুম্বলে। পরবর্তী কোচ নিয়োগের জন্য দ্রুতই সিএসি কার্যক্রম শুরু করে সিওএ’র নির্দেশনায়। অনেকগুলো আবেদনপত্রের প্রেক্ষিতে বর্তমান জাতীয় দলের অধিনায়ক ও সিনিয়র ক্রিকেটারদের মতামতও নেয়া হয়। সার্বিক বিবেচনায় শাস্ত্রীকে কোচ হিসেবে নিয়োগ নিশ্চিত করে দেয় সিএসি। সার্বিক সমস্যার শেষ হয়েছে বলেই ভেবেছিল ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। তবে শচীন, গাঙ্গুলী ও লক্ষণের প্যানেল শাস্ত্রীর সহকারী হিসেবে জহির ও দ্রাবিড়কে নিয়োগ করার পরই আবার ভজঘট পেকে গেছে। বিশেষ করে জহিরের অন্তর্ভুক্তিকে সহজভাবে নিতে পারেননি শাস্ত্রীসহ অনেকেই। তিনি ভরত এবং বাঙ্গারকে চেয়েছেন ওই পদে। কিন্তু তার ওপর জোর করে জহির ও দ্রাবিড়কে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। আর শাস্ত্রীর এমন কথাবার্তায় দারুণ কষ্ট পেয়েছেন শচীন, গাঙ্গুলী ও লক্ষণ। চটে গিয়ে তারা সিওএ প্রধান বিনোদ রাইকে এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমরা শাস্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম জহির ও দ্রাবিড়কে পুরো সেটআপে নিয়ে আসার ব্যাপারে। তিনি পুরোপুরি এই ধারণার সঙ্গে সম্মত হয়ে জানিয়েছিলেন এমন ধারণা দল এবং ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য খুবই ফলপ্রসূ হবে। জহির এবং দ্রাবিড়কে এ পরিসরে আনাই হয়েছে শুধু শাস্ত্রীর সম্মতির পর।’ চিঠিতে বিনোদকে আরও মনে করিয়ে দেয়া হয় সিএসিকে কোচ নিয়োগের ব্যাপারটিতে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছিল সিওএ থেকে। এ বিষয়ে দীর্ঘ চিঠিতে আরও লেখা হয়, ‘আমরা নিজেদের প্রাণপণ সচেষ্ট ছিলাম এই পদ্ধতিতে ভারতীয় দলকে সবচেয়ে ভাল সম্পদে সমৃদ্ধ করার জন্য। কিন্তু সিএসসিকে যেভাবে গণমাধ্যমের বিভিন্ন পর্যায়ে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে সেটা খুবই যন্ত্রণাদায়ক এবং হতাশার। তাই আমরা আপনাকে (রাই) আহ্বান করছি জনসমুখে এসে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করতে। বিষয়টিতে পুরোপুরি স্বচ্ছতা ছিল সেটা আপনি জানাবেন। আমরা তিনজনই মর্যাদার সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছি এবং বিসিসিআইয়ের অধীনে থেকে অবশ্যই পরবর্তী প্রজন্মকে সেভাবেই তৈরি করার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা সেটা প্রশংসাবাণী শুনতে করছি না।’ কিন্তু শাস্ত্রীর চাওয়াটা পূরণ হয়নি বলে তিনিও রুষ্ট হয়েছেন সিএসির ওপর। তার ওপর জহির ও দ্রাবিড়কে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। সে কারণে শচীন, গাঙ্গুলী ও লক্ষণ তাকে কোচ হিসেবে নিয়োগ করার পরও অসন্তুষ্ট হয়ে উঠেছেন সাবেক এ ক্রিকেট গ্রেট। বিষয়টি নিয়ে এবার পাতিলও মুখ খুলেছেন। তিনি মনে করেন এ তিন কিংবদন্তি কোচ নিয়োগের যে পদ্ধতি সেক্ষেত্রে অনুপযুক্ত। তিনি বলেন, ‘আমি বলব বিকৃতি ঘটেছে, কিন্তু যা হয়েছে পুরোটাই ভুল। শচীন, গাঙ্গুলী ও লক্ষণ নিশ্চিতভাবেই খেলোয়াড় হিসেবে আমাদের কিংবদন্তি এবং তারা দেশের জন্য দারুণ কিছু করেছে। কিন্তু তারা কেউ কখনও কোন দলকে কোচিং করাইনি। কোচিং করানো কিংবা আম্পায়ারিং করা ইত্যাদি কোন কাজে ছিল না তারা। এখন তারা যেটা করেছে তা হচ্ছে দায়িত্ব চেপে দিয়ে বলা যে কোচ দিয়েছি, এখন বাকি কাজ অন্যদের। তারা আসলে ভারতের কোচ নিয়োগ করার দায়িত্বে অনুপযুক্ত।’
×