ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

জয়পুরহাট হাসপাতালে জনবল সঙ্কট ॥ ব্যাহত চিকিৎসাসেবা

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১২ জুলাই ২০১৭

জয়পুরহাট হাসপাতালে জনবল সঙ্কট ॥ ব্যাহত চিকিৎসাসেবা

নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট, ১১ জুলাই ॥ ৮ বার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতাল এখন বেহাল। চিকিৎসকসহ জনবল সংকটে এ হাসপাতালটি এখন তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছে না। যে কারণে রোগীদের অবস্থা একটু খারাপ হলেই সঙ্গে সঙ্গে তাকে রেফার্ড (স্থানান্তর) করে দেয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে একাধিক চিকিৎসকের শূন্যপদ থাকলেও মাঝে মাঝে দুই একজন চিকিৎসক এলেও তদবির করে ওইসব চিকিৎসক ঢাকাসহ অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যাচ্ছে। ফলে চিকিৎসক সংকট কাটছেই না এই হাসপাতালে। জেনারেটর থাকলেও তেলের বরাদ্দ না থাকায় বিদ্যুত চলে গেলে ভুতুড়ে ভবনে পরিণত হয় হাসপাতালটি। ১৫০ শয্যাবিশিষ্ট জয়পুরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের ৪৫টি অনুমোদিত পদের মধ্যে রয়েছে ৩০ জন। ১৫টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালের প্রধান যিনি সেই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পদটিই রয়েছে শূন্য। হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান এখন ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক হয়ে কাজ চালাচ্ছেন। সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) পদ থাকলেও এ পদে ডাক্তার নেই। ফলে শিশুদের চিকিৎসা দেয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্টের পদ থাকলেও তা শূন্য রয়েছে। অর্থ সার্জারি বিভাগেও একই অবস্থা। নাক-কান-গলা বিভাগে চিকিৎসক কয়েক বছর ধরেই নেই। ফলে অসংখ্য রোগীকে শহরের ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে হয় সপ্তাহন্তে জেলার বাইরে থেকে আসা চিকিৎসকের কাছে। এছাড়া যে পদে ডাক্তার নেই সেগুলো হলো চক্ষু বিভাগে জুনিয়র কনসালটেন্ট, এ্যানেসথেসিয়ার জুনিয়র কনসালটেন্ট, রেডিওলজিস্ট বিভাগের মেডিক্যাল অভিসার নেই। আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারের পদ দুটি থাকলেও রয়েছে একজন। ইমারজেন্সি মেডিক্যাল অফিসারের পদ ৭টি থাকলেও রয়েছে মাত্র দুই জন। ফলে জরুরী বিভাগ চালাতে গিয়ে আন্তঃবিভাগে কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। এ অবস্থায় জরুরী বিভাগে চিকিৎসা সংকট তৈরি হয়েছে। সময়কালে জরুরী বিভাগে মেডিক্যাল এ্যাসিস্টেন্টই শুধু নয় এমএলএসএসও চিকিৎসা দেয়া শুরু করে। জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তার পদ দুটি থাকলেও এ পদে কেউ নেই। দ্বিতীয় শ্রেণীর জনবলেও রয়েছে শূন্যতা। এছাড়া তৃতীয় শ্রেণীর জনবলে ২৭টি পদ থাকলেও রয়েছে ২২ জন। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদ ৪৮টি। কিন্তু রয়েছে ৩৭ জন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এ হাসপাতাল পরিদর্শনে এলে চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি তার সামনে তুলে ধরা হলে তিনি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিলেও সমস্যা যেখানে ছিল তেমনই রয়ে গেছে। এদিকে এ হাসপাতালে জেনারেটর থাকলেও তেলের বরাদ্দ তেমন না থাকায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হলেই পুরো অন্ধকারে ডুবে যায় হাসপাতালটি। অপারেশন থিয়েটারে বন্ধ হয়ে যায় সকল ধরনের অপারেশন। প্রায় সময় টর্চ লাইটের সাহায্যে চিকিৎসকদের জটিল অপারেশন করতে হয়। এ ব্যাপারে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মফিউর রহমান জানান, আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরে এ সংকট নিরসনের জন্য বার বার তাগাদা দিয়ে চলেছি।
×