ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের পর ব্যস্ততা শুরু মাশরাফিদের

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১৯ জুন ২০১৭

ঈদের পর ব্যস্ততা শুরু মাশরাফিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ সফর শেষ। এবার একটু দম ফেলার ফুরসত পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। আয়ারল্যান্ডে হওয়া ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ ও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ করে শনিবার সকালে দেশে ফেরে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। আপাতত ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কোন ব্যস্ততা না থাকায় দীর্ঘ ছুটি পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। তবে ঈদের পরপরই আবার শুরু হবে টাইগারদের ব্যস্ততা। মাঠে ফিরতে হবে অনুশীলনের জন্য। কারণ সূচী অনুসারে ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ সফরে আসবে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। দুই টেস্টের সিরিজের জন্য অনুশীলন ক্যাম্পে ব্যস্ত হবেন টেস্ট দলে খেলা ক্রিকেটাররা। দুই টেস্টের সিরিজ খেলেই আবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাবে দল। খেলবে পূর্ণাঙ্গ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। শুধু স্বল্প পরিসরের ম্যাচ খেলা ক্রিকেটাররা ততোদিন পর্যন্ত বিশ্রামই পাবেন। সে কারণে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি পাচ্ছেন সবচেয়ে লম্বা ছুটি। শনিবার দলের সঙ্গে আসেননি মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েস। তারা ছুটি কাটাতে থেকে গেছেন ইংল্যান্ডে। ঈদ-উল-ফিতরের আগেই অবশ্য দেশে ফিরবেন তারা। বাকি ক্রিকেটাররা সবাই এখন দেশে। যে যার মতো চলে গেছেন ছুটিতে। প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরাসিংহেও পেয়েছেন দীর্ঘ ছুটি। তিনি চলে গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কোন ব্যস্ততা নেই। এমনকি ঘরোয়া কোন ক্রিকেটও নেই। তাই বড় রকমের বিশ্রাম পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। সেটা চলবে ঈদের পরেও এক সপ্তাহের বেশি। অবশ্য অনেকেই নিজের ফিটনেস ঠিকঠাক রাখতে ব্যক্তিগতভাবে ঐচ্ছিক অনুশীলন শুরু করবেন। এমনটাই জানিয়েছে বিসিবি সূত্র। কিন্তু এরপরই আবার টাইগাররা ফিরবেন মাঠে। অনুশীলন ক্যাম্প শুরু হবে ঘরের মাঠে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট লড়াইয়ের জন্য। আগামী মাস পুরোটাই ক্রিকেটাররা আছেন পুরোপুরি ফ্রি। কারণ প্রায় ৬০ দিন পর বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবে অসিরা। দুই টেস্টের সিরিজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে ২৭ আগস্ট। প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ঢাকায় মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। আর দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ৪ সেপ্টেম্বর শুরু হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ইতোমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। সফরের প্রায় ১০ দিন আগে বাংলাদেশ সফরে আসবে তারা। কারণ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে এবং বাংলাদেশের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে ওঠার জন্য বেশি সময় ধরে অনুশীলন করতে চায়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০১৫ সালে স্থগিত হওয়া সফরটি এবার করতে আসবে অস্ট্রেলিয়া দল। ১২ বছর পেরিয়ে গেছে কোন টেস্ট খেলেনি দু’দল। ২০০৫-০৬ মৌসুমে বাংলাদেশ সফরে এসেছিল অসিরা। আর ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। তারপর এই প্রথম আবার দু’দলের মধ্যে কোন টেস্ট ম্যাচ হতে যাচ্ছে এবার। তবে সিরিজে কোন ওয়ানডে বা টি২০ থাকছে না। এ কারণে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি অক্টোবর পর্যন্তই থাকতে পারছেন পুরোপুরি বিশ্রামে। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাবে বাংলাদেশ দল। দুই টেস্ট দিয়ে শুরু হওয়া পূর্ণাঙ্গ সিরিজে আছে তিন ওয়ানডে ও দুই টি২০। ১৫ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল। কাজেই প্রায় ৪ মাস ক্রিকেটের বাইরে থাকবেন মাশরাফি। তবে অন্যরা শুধু এই ঈদ উপলক্ষেই পাবেন বিশ্রাম। ঈদের কতদিন পর আবার ব্যাট-বল নিয়ে মাঠে নামবেন ক্রিকেটাররা সেটা বিসিবি জানাতে পারেনি নিশ্চিত করে। তবে বলা হয়েছে কোচ হাতুরাসিংহেই ঠিক করবেন কবে থেকে অনুশীলন ক্যাম্প শুরু হবে। তার আগে পর্যন্ত ক্রিকেটের বাইরেই থাকবেন সবাই। কারণ গত বছর সেপ্টেম্বর থেকেই টানা আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটের চাপে আছেন তারা। সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে, অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে, নবেম্বরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল), ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফর, ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফর, মার্চে শ্রীলঙ্কা সফর শেষ করে আবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ (ডিপিএল) খেলেছেন ক্রিকেটাররা। প্রিমিয়ার ক্রিকেটের মাঝপথেই ক্রিকেটাররা ইংল্যান্ড সফরে যান। সাসেক্সে ১০ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার পর আয়ারল্যান্ডে স্বাগতিক ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছে। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। টানা এই ব্যস্ততার পর অবশেষে সমাপ্তি ঘটেছে। ছুটিতে যার যার মতো চলে গেছেন ক্রিকেটাররা। নিজেদের মতো সময় কাটাতে শুরু করেছেন রবিবার থেকেই। এখন অখ- বিশ্রাম, ক্রিকেট নিয়ে ভাবনা নেই। এই দীর্ঘ বিরতির পর শক্ত প্রতিপক্ষ অসিদের বিরুদ্ধে কতটা নিজেদের টেস্ট ক্রিকেটের মতো কঠিন পরিসরে নিজেদের মেলে ধরতে পারবেন ক্রিকেটাররা সেটাই চ্যালেঞ্জ।
×