ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্রান্সের নির্বাচনে মার খেল পুতিনের কৌশল!

প্রকাশিত: ০৩:৪১, ১৭ মে ২০১৭

ফ্রান্সের নির্বাচনে মার খেল পুতিনের কৌশল!

ফ্রান্সের নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জয়লাভ করার পর রাশিয়া তার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছে, নির্বাচনে যেই জয়লাভ করুক তার সঙ্গে কাজ করতে ক্রেমলিন আগ্রহী। এটি দেশটির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া বা কূটনৈতিক শিষ্টাচার। কিন্তু ভেতরের কথা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সবাই জানে নির্বাচনী লড়াইয়ের ময়দানে রাশিয়া সে দেশের চরম ডানপন্থী দলের প্রার্থী মেরি লি পেনের পেছনে বাজি ধরেছিল। যার জন্য রাশিয়া সম্ভাব্য সকল পন্থায় তাকে জিতিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করে। ইউক্রেন সঙ্কটের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলো যখন রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে; তখন থেকেই রুশ প্রশাসন পাশ্চাত্য জোটে ফাটল ধরানোর লক্ষ্যে সর্বশক্তি নিয়োগ করে। ব্রিটেনের ইউরোপীয় জোট ছেড়ে যাওয়ার পেছনে রাশিয়ার ভূমিকা স্পষ্ট না হলেও ব্রেক্সিটের উস্কানিদাতা নাইজেল ফারাজের সঙ্গে রুশ গোয়েন্দাদের যোগাযোগ নিয়ে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করছেন। ইউরোপের নেতৃস্থানীয় দেশ ব্রিটেন ইইউ জোট ত্যাগ করায় নিঃসন্দেহে ন্যাটোসহ ট্রান্স আটলান্টিক জোটভুক্ত দেশগুলোর ঐক্যে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন, যুক্তরাষ্ট্রের দ্বি-দলীয় বিভাজনের রাজনীতিতে হ্যাকিং ও সর্বাত্মক গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে যেভাবে সে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছেনÑ তা ন্যক্কারজনক হলেওÑ রাশিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে এ এক ঐতিহাসিক সাফল্য। একটিও গুলি খরচ না করে কিভাবে একটি চিরবৈরী দেশের ‘কিং মেকার’ হওয়া যায় তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বৈশ্বিক রাজনীতিতে নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পুতিনের দ্বিতীয় ট্রার্গেট ছিল ফ্রান্স। উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে প্রথমে ফ্রান্সের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া ফিলনকে বেছে নেয়া হয়Ñ কিন্তু তার স্ত্রীকে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা দেয়ায় তার ওপর দেশের জনগণের আস্থা নেই বুঝতে পেরে তারা উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মেরি লি পেনকে বেছে নেয়। মেরি লি পেন রাশিয়ার প্রতি তার ভালবাসা বা পক্ষপাতিত্বে কোন রাখঢাক করতেন না। এমনকি ইউক্রেনে অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল করে নেয়াকেও তিনি সমর্থন করেছেন। নির্বাচনের আগেভাগে লি পেন গত মার্চ মাসে মস্কো গিয়ে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তার দলের নির্বাচনী খরচ বাবদ তাকে মস্কোর একটি ব্যাংক থেকে এক কোটি দশ লাখ ডলার ঋণ দেয়া হয়। -নিউইয়র্ক টাইমস
×