ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থনীতির টু ক রো খ ব র

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১৪ মে ২০১৭

অর্থনীতির  টু ক রো  খ ব র

ফার্নেস অয়েলের বাড়ছে আমদানি জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও সৌরবিদ্যুতের প্রচলন বাড়ায় দেশে জ্বালানি হিসেবে কেরোসিনের ব্যবহার কমছে। অন্যদিকে গ্যাস সঙ্কটের কারণে তেলনির্ভর বিদ্যুতকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ফার্নেস অয়েলের ব্যবহার বাড়ছে। এ দুইয়ের পভাবে টানা তিন বছর কেরোসিন আমদানি না হলেও ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে ফার্নেস অয়েলের আমদানি। চট্টগ্রাম কাস্টমস ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিপিসির তথ্যমতে, ২০০৯ সালে দেশে কেরোসিন আমদানি হয়েছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ১০৩ টন। এর পর ধারাবাহিকভাবে পণ্যটির আমদানি কমতে থাকে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে ২৮ হাজার ৩৭৬ টন কেরোসিন আমদানি হয়। এর পর থেকে কেরোসিন আমদানি স্থগিত রাখে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে বিদ্যুতকেন্দ্রের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক বছর ধরে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে ফার্নেস অয়েলের আমদানি। সরকার ও বেসরকারী খাতের জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুতকেন্দ্রগুলোয় ফার্নেস অয়েলের চাহিদা বাড়ছে। পাশাপাশি বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ফার্নেস অয়েলনির্ভর বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে আগের চেয়ে বেশি। এ দুই কারণে পণ্যটির আমদানি বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের পথম নয় মাসে ২ হাজার ৪০২ কোটি টাকার মোট ১০ লাখ ২ হাজার ২৮৮ টন ফার্নেস অয়েল আমদানি হয়। বিপরীতে চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৯০ কোটি টাকার মোট ১৪ লাখ ৫১ হাজার ১৯৪ টন ফার্নেস অয়েল, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের বাকি তিন মাসের হিসাব করলে ফার্নেস অয়েলের আমদানি ২০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশে ফার্নেস অয়েল আমদানির ক্ষেত্রে এটি হবে নতুন রেকর্ড। জানতে চাইলে পিডিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের ম্যানেজার অপারেশন মোঃ শাহাদাত হোসাইন বলেন, চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের প্রাপ্যতা নেই বললেই চলে। এতে করে দ্বৈত জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো অধিকাংশ সময়েই ফার্নেস অয়েলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। আগামীতে দেশে কয়লার পাশাপাশি ফার্নেস অয়েলই বিদ্যুত উৎপাদনের মূল উপাদানে পরিণত হবে বলে তিনি মনে করেন। ভারতে গম আমদানিকারকদের তকমা চলতি মৌসুমে রেকর্ড গম উৎপাদন করতে যাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ জনসংখ্যার দেশ ভারত। রেকর্ড উৎপাদন সত্ত্বেও তা দিয়ে দেশটির স্থানীয় চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না। স্থানীয় চাহিদা বৃদ্ধি ও আগের বছরের মজুদ কম থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। খবর এগ্রিমানি। ইউএসডিএর নয়াদিল্লী­ব্যুরো ভারতে গম উৎপাদন সম্পর্কিত পূর্বাভাসে জানিয়েছে, একদিকে অনুকূল আবহাওয়া, অন্যদিকে আবাদ বেশি হওয়ার সুবাদে ভারতে গম উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আগামী মৌসুমেও দেশটিতে খাদ্যশস্যটির উৎপাদন বাড়তে পারে। তবে উৎপাদন বাড়লেও গম আমদানিকারকের তকমা থেকে নিজেদের বের করতে পারবে না ভারত। কারণ আগের মৌসুমে শস্যটির মজুদ হয়েছে কম, অন্যদিকে বেড়েছে চাহিদা। ফলে গম আমদানি অব্যাহত রাখতে হবে দেশটিকে। এদিকে রুটি তৈরির জন্য সুপরিচিত ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে গম উৎপাদন প্রায় শেষ দিকে। ঠাণ্ডা আবহাওয়া, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে এসব অঞ্চলে এবার গমে কীটপতঙ্গের উৎপাত ও রোগবালাই কম ছিল। এছাড়া ভারতের প্রধান প্রধান গম উৎপাদনকারী অঞ্চলে খরা বা অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি। এ কারণেই ইউএসডিএর ভারতীয় ব্যুরো তাদের ২০১৭-১৮ মৌসুমের জন্য গম উৎপাদন পূর্বাভাসে পরিবর্তন এনেছে। সংস্থাটি আগে বলেছিল, আসছে মৌসুমে ভারতে গম উৎপাদন হবে ৯ কোটি ৫০ লাখ টন। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় শস্যটির নতুন পূর্বাভাস দিয়েছে ইউএসডিএ। আগের পূর্বাভাসের তুলনায় নতুন পূর্বাভাসে ১৫ লাখ টন বাড়িয়ে ২০১৭-১৮ মৌসুমে গম উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ কোটি ৬৫ লাখ টন। শীর্ষ উপার্জনকারীদেরও অনুভূতি হয় বঞ্চনার সমাজে যাদের উপার্জন সবচেয়ে বেশি, তারাও আয়বৈষম্য নিয়ে উদ্বেগের কথা বলেন। অন্যদের তুলনায় নিজেকে দরিদ্র মনে করেন। উপার্জনের হিসাবে সবার উপরে থাকা এ ১ শতাংশ মানুষের মনেও বঞ্চনা বোধ ক্রিয়াশীল থাকে। লন্ডন স্কুল ইকোনমিক্সের (এলএসই) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান। এলএসইর প্রতিবেদনে জানা যায়, ব্রিটেনে শীর্ষ উপার্জনকারী ১ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে আয়বৈষম্য সবচেয়ে প্রবল। স্বল্প ও মাঝারি আয়ের মানুষের মধ্যকার আয়ের বৈষম্য সে তুলনায় কম। সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী জনগোষ্ঠীর মনোভাব জানতে এলএসইর ইন্টারন্যাশনাল ইনইকুয়েলিটি ইনস্টিটিউট এ গবেষণা চালায়। ‘এ রিলেশনাল এ্যানালিসিস অব টপ ইনকামস এ্যান্ড ওয়েলথ’ শীর্ষক গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি হয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, আয়ের হিসাবে সবার উপরে থাকা ১ শতাংশ মানুষ তাদের চেয়ে বেশি উপার্জনকারীদের সাহচর্যেই সময় কাটান। এ কারণে শীর্ষ উপার্জনকারীদের মনে বঞ্চনাবোধ তৈরি হয়। এলএসইর গবেষক ব্রিটেনে শীর্ষ উপার্জনকারী ৩০ জন ধনীর সাক্ষাতকার নেন। এদের সবারই ১০ কোটি পাউন্ডের বেশি মূল্যমানের সম্পদ রয়েছে; তিনজনের নাম রয়েছে সানডে টাইমস রিচ লিস্টে। আর্থিক খাতে উচ্চ বেতনভোগী এক কর্মকর্তা বলেন, সিটি অব লন্ডনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অন্যদের তুলনায় তিনি নিজের উপার্জন বেশি মনে করছেন না। আয়ের অঙ্ক মিলিয়ন ছাড়ালেই তিনি নিজেকে উচ্চ উপার্জনকারী ভাববেন। সাক্ষাতকারে ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘যাদের সঙ্গে আমার প্রতিদিন যোগাযোগ হয়, তাদের অনেকে নিয়মিত মিলিয়ন পাউন্ড আয় করেন। লন্ডনে আমার পরিপার্শ্বে অনেক লোকই বেশি আয় করেন। তবে যেখানে আমার জন্ম, সেখানে ফিরে গেলে বলতে পারি, আমি নিশ্চিতই বেশি বেতন পাচ্ছি।’ ব্রিটেনে যাদের করপূর্ব আয় ১ লাখ ৪০ হাজার পাউন্ডের বেশি, সর্বশেষ সার্ভে অব পারসোনাল ইনকামে (এসডিআই) তাদের শীর্ষ উপার্জনকারী ১ শতাংশ জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবছর কয়েক লাখ পাউন্ড বেতনভোগী এক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার বলেছেন, সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দিতে গেলে নিজেকে তিনি সুখী ভাবতে পারেন না। স্কুলে যাওয়া অভিভাবকদের কেউ কেউ ১০ কোটি পাউন্ড অথবা তারও বেশি পরিমাণ সম্পদের স্তূপে বসে আছেন। তিনি আরও বলেন, ‘সহপাঠীদের সঙ্গে সন্তানকে তুলনা করতে গিয়ে আমি আরও বেশি দরিদ্র বোধ করি। অন্য শিশুদের অভিভাবক সন্তানের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে পারেন। কারণ তাদের কেউই আসলে কাজ করেন না। যারা কাজ করেন, তারাও নিজের সুবিধামতো কাজ করতে পারেন। কেউ হয়ত হেজ ফান্ড পরিচালনা করেন। কাজেই সন্তানকে তিনি প্রতিদিন স্কুলে নিয়ে যেতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সামর্থ্যে ব্যাপক ব্যবধানের কারণে শীর্ষ আয়ের ১ শতাংশ মানুষ তুলনামূলক অসুবিধা বোধ করেন। অন্যদের তুলনায় তারা পিছিয়ে পড়েছেন বলে মনে করেন।’ অর্থনীতি ডেস্ক
×