ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আলভেজ জাদুতে ফাইনালে জুভেন্টাস

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১১ মে ২০১৭

আলভেজ জাদুতে ফাইনালে জুভেন্টাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফাইনালে এক পা আগেই দিয়ে রেখেছিল জুভেন্টাস। মঙ্গলবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগও জিতে প্রত্যাশিতভাবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের ফাইনালে নাম লিখিয়েছে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। ঘরের মাঠ তুরিনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানিয়েল আলভেজের জাদুতে ভর করে ফরাসী ক্লাব মোনাকোকে ২-১ গোলে হারিয়েছে জুভেন্টাস। এর আগে সেমির প্রথম লেগ তুরিনের ওল্ড লেডিরা জিতেছিল ২-০ গোলে। দুই মিলিয়ে তাই ৪-১ গোলের জয়ে নবমবারের মতো ইউরোপ সেরার ফাইনালের টিকেট পেয়েছে জিয়ানলুইজি বুফনের দল। আগামী ৩ জুন কার্ডিফে ফাইনাল মহারণে সম্ভবত রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে খেলবে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। আর তাইতো শিরোপাস্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন বুফন, চিয়েল্লিনিরা। ২০১৫ সালেও তারা ফাইনালে উঠেছিল। সেবার বার্সিলোনার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। সেমিতে হেরে যাত্রা শেষ হলেও গর্বিত মোনাকো। ফরাসী ক্লাবটি সেমিতে খেলাকেই বড় সাফল্য হিসেবে দেখছে। ফাইনালে খেলতে হলে মিরাকল ঘটানোর বিকল্প ছিল না মোনাকোর। তাইতো জুভেন্টাসের মাঠে স্বাগতিকদের অবাক করে দিয়ে ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকে ফরাসী লীগে শিরোপার পথে থাকা দলটি। দ্বিতীয় মিনিটেই দারুণ আক্রমণ করে মোনাকো। তবে গোল পায়নি তারা। পঞ্চম মিনিটে কিলিয়ান এমবাপের শট গোলপোস্টে লাগলে শুরুতেই গোলবঞ্চিত হয় মোনাকো। সপ্তম মিনিটে ফ্যালকাওয়ের দারুণ শট চলে যায় গোলবারের ওপর দিয়ে। নিজেদের মাঠে জুভেন্টাস প্রথম আক্রমণ করে ২৫ মিনিটে। গোলরক্ষককে একা পেলেও জালে বল জড়াতে পারেননি মারিও মানদুকিচ। ৩০ মিনিটে ফ্যালকাওয়ের শট দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন বুফন। এরপরই প্রথম গোল পায় জুভেন্টাস। ৩৪ মিনিটে সেই মানদুকিচই এগিয়ে দেন ইতালির ক্লাবটিকে। আলভেজের ক্রস থেকে তার হেড কোনমতে ঠেকান মোনাকোর গোলরক্ষক। ফিরতে বলে ক্রোয়েট তারকার বুলেট গতির শট আর ফেরাতে পারেননি তিনি। ৪৩ মিনিটে আলভেজের দেয়া বলে সহজ সুযোগ মিস করেন পাওলো দিবালা। তবে পরের মিনিটে নিজের গোল করে সেটা পুষিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নিজেই। কর্নার কিক থেকে আসা বল অতিথি গোলরক্ষক ফিস্ট করলে তা ফিরে আসে ডি বক্সের বাইরে। সেখান থেকে চলতি বলে দারুণ ভলি করে গোল করেন আলভেজ। বিরতি থেকে ফিরে ম্যাচের ৬৯ মিনিটে মোনাকোর হয়ে একটি গোল পরিশোধ করেন এমবাপে। এরপর অনেকবারই গোল শোধের চেষ্টা করেছে ফরাসী দলটি তবে সফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল জুভরা। ম্যাচ শেষে জুভেন্টাস অধিনায়ক বুফন বলেন, ফাইনালে এসে আমরা খুশি। এখন শিরোপা না জিতলে সেটা হবে অর্থহীন। আমরা দুই বছর আগের কষ্ট আর পেতে চাই না। অন্যদিকে মোনাকো কোচ লিওনাড্রো জারডিম সেমি থেকে বিদায় নিলেও তার দল নিয়ে গর্বিত। পুরো টুর্নামেন্টে জারডিমের তরুণ দলটি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। দলের তরুণ তুর্কি এমবাপে, থমাস লিমাস, বার্নার্ডো সিলভা টুর্নামেন্টের বিভিন্ন ম্যাচে বিশেষ করে ম্যানচেস্টার সিটি ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিরুদ্ধে কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। তাইতো ক্লাবের ইতিবাচক সাফল্যে দারুণ খুশি এই পর্তুগীজ কোচ। জারডিম বলেন, এই ম্যাচে একটি দল ছিল অনেক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, যেখানে অন্য দলটি একেবারেই তরুণ। সেমিফাইনালে খেলতে পেরে আমি দারুণ খুশি। খেলোয়াড়দের নিয়ে আমি সত্যিই গর্বিত। এদিকে জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে গোল করে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে গোলের রেকর্ড গড়েছেন মোনাকোর তরুণ স্ট্রাইকার এমবাপে। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে এমবাপে যখন গোল করেন তখন তার বয়স ছিল ১৮ বয়স ১৪০ দিন। এর আগে ২০০৩ সালে এসি মিলানের বিরুদ্ধে ১৮ বছর ১৯৭ দিন বয়সে গোল করে এই তালিকার শীর্ষে ছিলেন ইন্টারের স্ট্রাইকার ওবাফেমি মার্টিনজ। এমবাপের এই গোলের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে আরেকটি রেকর্ড হয়েছে। টানা ৬৮৯ মিনিট পর গোল হজম করেছে জুভেন্টাস যা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে দীর্ঘতম।
×